আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)
আমার স্ত্রী যৌথ ফ্যামিলিতে থাকে। অর্থাৎ আমি আমার স্ত্রী আমার ছোট বাচ্চা আমার মা  এবং আমার ছোট ভাই থাকে। বাবা প্রবাসে আছে। এখন আমার ছোট ভাই তো স্ত্রীর জন্য নন মাহরাম।  একটা ফ্ল্যাটের মধ্যে  আমরা সবাই থাকি। এক রুমে আমি, আমার স্ত্রী, আমার মেয়ে বাচ্চা। পাশের আরেক রুমেই ছোট ভাই থাকে, মা থাকে। আমার ভাইয়ের বয়স ১৬ থেকে ১৭ এমন হবে। এখন আমার স্ত্রী কাজের জন্য বা যেকোনো প্রয়োজনে রুম থেকে বের হলে ক্ষিমার (বোরকার মতো) পরে বের হয়, যেন পর্দা নষ্ট না হয়। আমার ভাইও মোটামুটি দ্বীনদার, চোখের কিছুটা হেফাজত করে। এমনিতে পর্দার সমস্যা হয় না। আমার ভাই সহজে কোনো সময় সামনে পড়ে না আমার স্ত্রীর। যদি কোনো সময় সামনে পরে যায় খিমার পরা অবস্থায় ই পরে।

কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে কন্ঠের পর্দা নিয়ে। এখন আমার স্ত্রী স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য রুম থেকে যখন বের হয় তখন আমার মার সাথে বিভিন্ন প্রয়োজনে কথা বলতে হয়। এছাড়া আমার ছোট মেয়ে বাচ্চা আছে, সে দৌড়াদৌড়ি করে তাকে ডাকতে হয় তার সাথে অনেক কথা বলতে হয়। তো আমার ছোট ভাই সারাদিনই তো বাসায় থাকে। সে অন্য রুমে থাকে কিন্তু আমার স্ত্রীর কাজকর্মে স্বাভাবিক কথাবার্তা, আমার মেয়ে বাচ্চার সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তা, বা আমাদের রুমে থেকেও আমাদের স্বাভাবিক একটু জোরে কথাবার্তা এগুলা তো সে শুনতে পায়। যেহেতু ফ্ল্যট বাসা, পাশাপাশি রুম। এখন এক ফ্লাটে থেকে কন্ঠে আওয়াজ না শুনিয়েও থাকার উপায় নেই।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি যতটুক জানি এ কন্ঠের পর্দা করা ফরজ। এবং মেয়েদের যে স্বাভাবিক কন্ঠ এটাই নাকি কোমল কন্ঠ। গাইরে মাহরামের সাথে কথা বলতে হলে নাকি কঠোর কন্ঠের কথা বলতে হয়। এখন আমার স্ত্রী তো কোনো সময়ই আমার ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বলে না। আর আমার ছোট ভাইও খুব লজ্জাশীল এবং এগুলো থেকে খুবই বিরত থাকে। কিন্তু আমার স্ত্রীর যে স্বাভাবিক কথাবার্তা কাজকর্মের সময় বা বাচ্চার সাথে বা আমার সাথে মায়ের সাথে ইত্যাদি। এগুলো তো আমার ভাই পাশের রুম থেকে শুনতে পাই। তো এখন কি আমার স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা? আর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হলে আমার কি গুনাহ হচ্ছে কিনা?? এজন্য আমি কি ব্যবস্থা নিতে পারি??

1 Answer

0 votes
by (704,880 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ 
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

 হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে বিনম্র হয়ে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে পৌরষত্ব আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে। {সূরা আহযাব-৩২}

★পরপুরুষের (গায়রে মাহরামের) সঙ্গে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলার সময় কণ্ঠস্বর কঠোর রাখবে, সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়।

হযরত আয়েশা (রা) এর নিকট মাসয়ালা বা হাদিসের প্রয়োজনে অন্যান্য সাহাবীগণ আসলে, তিনি মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতেন যেন কারো অন্তর ব্যাধিগ্রস্থ না হয়। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

নারীদের জন্য গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলতে গিয়ে কর্কশ ভাষায় কথা বলা সবচেয়ে ভালো। 
সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়।

তবে এক্ষেত্রে কর্কশ ভাষায় কথা বলা সমস্যাকর বা বিরক্তিকর মনে হলে বা এভাবে কথা বলতে না পারলে সেক্ষেত্রে মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হচ্ছে,এতে আপনারও গুনাহ হচ্ছে। 

এক্ষেত্রে আপনার আলাদা বাসা নিয়ে থাকার সামর্থ্য থাকলে আলাদা বাসা নিয়ে থাকবেন।

আলাদা বাসা নিয়ে থাকার সামর্থ্য না থাকলে সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করবেনঃ
ক, রুমের দরজা বন্ধ রাখা — যাতে গোপনীয়তা বজায় থাকে।

খ, আওয়াজ কম রাখা — বিশেষত ঘরের বাইরে ও রাতে।

গ, স্ত্রীকে পরামর্শ দিন যেন কণ্ঠে হাস্যরস বা নরম ভঙ্গি না থাকে, যদিও তা সাধারণ কথায়ও।

ঘ, আপনার ভাইকে পরামর্শ দিন যেন নিজের দৃষ্টি ও মন হেফাজত করে, কণ্ঠ শুনলেও দৃষ্টি বা চিন্তা নিয়ন্ত্রণ রাখে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...