আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আস সালামু আলাইকুম
আমার ছেলে (১০ বছর বয়স চলছে-দেখতে ৫ বছর এর মত)। লাস্ট স্টেজ কিডনি রুগী (আলহামদুলিল্লাহ)। শেষ চিকিৎসা কিডনি  প্রতিস্থাপন( ট্রান্সপ্লান্ট )তুরোস্কের  ডাক্তার বলেছে। বাংলাদেশ এ আমার ছেলের মত জটিল রুগীর চিকিৎসা নেই তাই বাধ্য হয়ে তুরোস্কে যেতে হবে (ইন শা আল্লাহ )।
আমার ছেলেকে কিডনি ডোনেট করার জন্য আপন কেউ নেই আমাদের পরিবারে। এমত্বাবস্থায় বাধ্য হয়ে বাইরের অপিরিচিত মানুষ কে কাগজে কলমে রুগীর খালাতো ভাই হিসেবে সম্পর্ক দেখিয়ে নিয়ে যেতে হবে তুরোস্কে (এটা তুরোস্কের একটা রুলস আর কি। একদম অপিরিচিত মানুষ যাতে কিডনি ডোনেট না করতে পারে আরেকজন অপরিচিত কে, তাই একটা সম্পর্ক দেখাতে হবে আর কি )।
আমার প্রশ্ন --
১/ বাচ্চার জীবন বাঁচানোর তাগিদে চিকিৎসা যদি থেকে থাকে,কিডনি প্রতিস্থাপন কি জায়েজ হবে আসলে যেহেতু আর অপশন নেই এটা ছাড়া?

২/ প্রতিস্থাপন যদি আল্লাহ 'র রহমতে জায়েজ হয় ও তাহলে বাইরের ডোনার (ডোনার পরিপূর্ণ নেক সুস্থ হায়াত এর অধিকারী অবশ্যই ) কে রুগীর সাথে এভাবে একটা সম্পর্ক দেখিয়ে অপারেশন করাটা কি আদৌ জায়েজ হবে?
আমি শরিয়াহ সম্মত পূর্ণাঙ্গ একটা পরামর্শ চাচ্ছি আপনাদের কাছে। আমি মা হিসেবে খুব হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আল্লাহ সহজ করুন সব কিছু। আমিন
জাযাকাল্লাহ খইরন

1 Answer

0 votes
by (705,510 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/17579/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
পৃথিবীতে মানুষই সবচেয়ে মর্যাদাবান। তারাভরা আকাশ, জোছনা ভরা রাত বিছিয়ে রাখা বিস্তৃত সবুজ ভূমি সব আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালার সব সৃষ্টিই মানুষের কল্যাণে। মানুষের প্রয়োজনে। 

মানবজাতিকে মর্যাদাবান করার জন্য মহান প্রভু মানুষের অবয়ব ও কাঠামোগত সৌন্দর্য, বিবেক-বুদ্ধি ও জ্ঞান-গরিমায় উন্নতি দিয়েছেন। দিয়েছেন ভাব-ভাষা ও শৈলীর শক্তি। আল্লাহতায়ালা বলেন, 
لقد خلقنا الإنسان في احسن تقويم
আমি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তিন ৪)। 

মানুষের মন-মনন, চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানের মর্যাদা প্রদানে কোরআন বলেছে, 
علم الانسان ما لم يعلم
আল্লাহতায়ালা মানুষকে এমন জ্ঞান দান করেছেন যা সে জানত না। (সূরা আলাক ৫)। 

আল্লাহ আরও বলেছেন, 
وعلم الأمم أسماء كلها
আমি আদমকে বস্তুজগতের সব জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি। (সূরা বাকারা ৩৩)।

 সমগ্র সৃষ্টির তুলনায় মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথা কোরআন এভাবে উচ্চারণ করছে, আমি তো মানুষকে মর্যাদা দান করেছি, জলে ও স্থলে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদের উত্তম রিজিক দিয়েছি। সৃষ্টির অনেকের ওপর আমি মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা বনি ইসরাইল ৭০)।

পৃথিবীর ফুল ফল, বৃক্ষ-তরু-লতা, পাখ-পাখালি সব আয়োজনই মানুষের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে সমগ্র সৃষ্টি নিবেদিত। সেই মানুষের হাড়, মাংস বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যথেচ্ছ ব্যবহার, মানব অঙ্গ বেচাকেনা, আদান-প্রদান, কাটাছেঁড়া করা আদৌ কি মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ? নাকি চিরায়ত ধারায় মর্যাদাবান জাতি মানব সভ্যতার প্রতি অভিশাপ? 

আল্লাহ তায়ালার দেওয়া অংগ প্রতঙ্গের মালিক মানুষ নয়,এগুলো সবই আল্লাহ তায়ালার  প্রদত্ত আমানত।
এই জন্য চোখ বা শরীরের যেকোনো অঙ্গ জীবিত অবস্থায় বা মৃত বরনের পর দান করা শরীয়তে জায়েজ  নেই।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা ১৮/৩৩৭ ঢাবিল,কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/১৯৬)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
মানুষের মৃত্যুর আগে বা পরে শরীরের কোনো অঙ্গ দান করা জায়েজ নেই।
অতএব কিডনি ডোনেট করাও জায়েজ নেই। 

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টাকার বিনিময়ে হোক বা টাকা ছাড়া হোক,আপনাদের আত্মীয়ের মধ্য থেকে কাহারো কিডনি হোক বা অন্য কাহারো কিডনি হোক,কোনোক্রমেই অন্যের কিডনি আপনার সন্তানের শরীরে প্রতিস্থাপন করা জায়েজ হবেনা।

এতে সংশ্লিষ্ট সকলের গুনাহ হবে।

(০২)
এটি ধোকার অন্তর্ভুক্ত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...