আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমরা অনেক সময় এই হাদিসটি শুনেছি যে,

কোনো একজন সাহাবী(রাযি.) নবিজি (সাঃ)-কে বলেছিলেন ইয়া রসুলুল্লাহ (সাঃ) আমি যদি দোয়া করার সময় পাই তাহলে আপনার উপর কতটুকু দুরুদ পড়বো নবিজি সম্ভবত বলেছিলেন  তোমার যতটুকু ইচ্ছা তখন সে সাহাবী বলেছিলেন আমি যদি আমার দোয়ার এক তৃতীয়াংশ পড়ি তাহলে হবে তখন নবীজি বলেছিলেন তুমি আরও পড়তে পারলে ভালো তখন সে বলেছিল যদি দুই তৃতীয়াংশ পড়ি তাহলে তখন নবীজি বলেছিলেন তুমি আরো পড়লে ভালো তারপর সেই সাহাবী বলেছিলেন আমি যদি দোয়ার পুরোটা সময় জুড়ে দুরুদ পরি তাহলে কি ভালো তখন নবীজি বলেছিলেন তাহলে তোমার আর কোন টেনশনই থাকবে না তোমার সব দোয়া কবুল হবে।
আমি হাদীসটি ঠিকমত বলতে পারিনি কিন্তু হাদিসের সারসংক্ষেপ এমন কথাই ছিল। এখন আমার প্রশ্ন ৩টা।

১. হাদিসটি কি সঠিক এবং আমলযোগ্য?

২. হাদিসটি  সঠিক ও আমলযোগ্য হলে আমি কি তাহাজ্জুতের নামাজের পর আমার যাবতীয় দোয়া না করে শুধু বসে বসে দরুদ পড়লে হবে?
৩.আর মনে মনে এটা ভাবলে হবে যে আল্লাহ আমার মনের ইচ্ছা গুলো সব জানে আর নবীজি বলেছেন যে দোয়ার পুরোটা সময় জুড়ে দরুদ পড়লে আমার আর কোন টেনশন থাকবে না তাহলে আমার আল্লাহকে কিছু বলা দরকার নেই আমি দুরুদ পরি আর দুরুদের মাধ্যমে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করে নেবেন ইনশাআল্লাহ?

উস্তায আমার তিনটা প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে বুঝিয়ে বলার অনুরোধ থাকলো।

1 Answer

0 votes
by (695,850 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

 عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: كُنْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ إِذَا جَلَسْتُ فِي الْمَسْجِدِ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلَاةَ عَلَيْكَ، فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِي؟
قَالَ: "مَا شِئْتَ".
قُلْتُ: الرُّبُعُ؟
قَالَ: "مَا شِئْتَ، وَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ".
قُلْتُ: النِّصْفُ؟
قَالَ: "مَا شِئْتَ، وَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ".
قُلْتُ: الثُّلُثَيْنِ؟
قَالَ: "مَا شِئْتَ، وَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ".
قُلْتُ: أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِي كُلَّهَا؟
قَالَ: "إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ، وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ".

অনুবাদ:
উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন —
আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বললাম,
“হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করি। আমি আমার দোয়ার কত অংশ আপনার উপর দরূদে ব্যয় করব?”

নবী ﷺ বললেন: “তুমি যতটুকু ইচ্ছা।”

আমি বললাম: “এক-চতুর্থাংশ করলে কেমন?”
তিনি বললেন: “যতটুকু ইচ্ছা, তবে বাড়ালে তোমার জন্য উত্তম।”

আমি বললাম: “অর্ধেক করলে কেমন?”
তিনি বললেন: “যতটুকু ইচ্ছা, তবে বাড়ালে তোমার জন্য উত্তম।”

আমি বললাম: “দুই-তৃতীয়াংশ করলে কেমন?”
তিনি বললেন: “যতটুকু ইচ্ছা, তবে বাড়ালে তোমার জন্য উত্তম।”

আমি বললাম: “আমি যদি আমার সমস্ত দোয়াকেই আপনার প্রতি দরূদে পূর্ণ করি, তাহলে?”

তিনি ﷺ বললেন:

“তাহলে তোমার সমস্ত চিন্তা দূর করা হবে, এবং তোমার সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে।”
(تُكْفَى هَمَّكَ، وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ)
[জামি‘ আত-তিরমিযি (হাদীস নং 2457)]

ইমাম তিরমিযি বলেছেন: هذا حديث حسن صحيح (এটি হাসান সহীহ হাদীস)।

এছাড়াও ইমাম আহমাদ (মুসনাদ 20748) ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থেও এসেছে।

এই হাদীসের অর্থ হলো —
যদি কেউ বেশি বেশি দরূদ পাঠ করে, তার দোয়া নিজেই কবুল হওয়ার উপায় হয়ে যায়।
এমনকি, কেউ যদি তার অধিকাংশ দোয়া সময় নবীর উপর দরূদে ব্যয় করে, তবে
আল্লাহ তার দুঃখ-চিন্তা দূর করবেন,
 এবং তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন।

অর্থাৎ, দরূদ পাঠ নিজেই দোয়া, এবং দোয়ার কবুল হওয়ার অন্যতম মাধ্যম।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
হাদিসটি সঠিক এবং আমলযোগ্য।

(০২)
হ্যাঁ শুধুমাত্র দরুদ শরীফ পাঠ করলেও হবে।

তবে নিজের মনের চাওয়া গুলো আল্লাহ তায়ালাকে নির্দিষ্ট আকারে বলারও অনুমতি আছে।

তাই চাইলে দোয়াতে  নিজের মনের চাওয়া গুলো উল্লেখ করতে পারেন,এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৩)
এমনটি ভাবলেও হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...