জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
আরো জানুনঃ-
★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে।
তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।
সুতরাং যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।
আরো জানুনঃ
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার কাজিন যদি তালাকের অধিকার না পেয়ে থাকেন,বা অধিকার পেয়ে থাকলেও যদি সে তার স্বামীকে তালাক দিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে যেহেতু স্বামীকে তালাক দিলে তালাক পতিত হয় না তাই পূর্বে দেওয়া সেই তালাক পতিত হবে না।
এমতাবস্থায় তার দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ হবে না, সে যে প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে গিয়েছিলেন সেটি শুদ্ধ হয়েছে।
এমতাবস্থায় প্রথম স্বামী যে তাকে তিন তালাক দিয়েছে, সেই তিন তালাক পরিপূর্ণভাবে পতিত হয়েছে।
এখন সে তার স্বামীর জন্য পুরোপুরি ভাবে হারাম হয়ে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে যদি তারা পুনরায় ঘর সংসার করতে চায়, সেক্ষেত্রে করণীয় জানুনঃ-
আর যদি তিনি স্বামীর দেয়া শর্তহীন তালাকের ক্ষমতাবলে নিজেকেই নিজে তালাক দিয়ে থাকেন অথবা নিজের নফসের উপর তালাক গ্রহণ করে থাকেন সেক্ষেত্রে স্পষ্ট বাক্যে তালাক গ্রহন করে থাকলে রজয়ী তালাক হয়েছে।
এমতাবস্থায় ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই ১ম স্বামী তাকে ফিরিয়ে নিয়ে থাকলে সেক্ষেত্রেও প্রথম স্বামী যে তাকে তিন তালাক দিয়েছে, সেই তিন তালাক পরিপূর্ণভাবে পতিত হয়েছে।
এখন সে তার স্বামীর জন্য পুরোপুরি ভাবে হারাম হয়ে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে যদি তারা পুনরায় ঘর সংসার করতে চায়, সেক্ষেত্রেও শরয়ী হালালাহ করতে হবে।
আর যদি বায়েন তালাক গ্রহণ করে থাকে বা ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর ১ম স্বামী তাকে ফিরিয়ে নিয়ে থাকলে সেক্ষেত্রেও প্রথম স্বামী যে তাকে তিন তালাক দিয়েছে, সেই তিন তালাক পতিত হয়নি।
এখন ১ম স্বামী চাইলে আপনার কাজিনকে পুনরায় বিবাহ করতে পারবে।
★কোনোক্রমেই ২য় বিয়ে শুদ্ধ হয়নি।
দ্বিতীয় স্বামীর সাথে যে সে ঘর সংসার করেছে এটা স্পষ্ট যেনা হয়েছে।
দেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত থাকলে তাকে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতো কিন্তু দেশে যেহেতু ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত নেই,তাই এমতাবস্থায় তার জন্য করনীয় হলো মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে খালেস দিলে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।