আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম।

 আমি জানি যে হারাম উপার্জনের অর্থে কেনা পোশাক পরে সালাত আদায় করলে তা কবুল হয় না।
কিন্ত রিসেন্টলি ফয়জুল কালাম হাদিসের কিতাবে একটা হাদিস দেখলাম যেখানের ফায়দায় অন্য অর্থ বুঝিয়েছে।হাদিসটি হলো—

❝হজরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ১০ দিরহাম দ্বারা একটা কাপড় ক্রয় করলো, (যার মধ্যে ১ দিরহাম হারাম ছিলো, তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত ওই কাপড়টি তার পরনে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তার নামাজ কবুল করবেন না।❞

ফায়েদা: এখানে কবুল করার অর্থ সওয়াব কম হওয়া, তবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

উক্ত ফায়দার কথাটি কি সঠিক? তার মানে কি সত্যি হারাম উপার্জনের অর্থে কেনা পোশাকে নামাজ হয়ে যাবে? শুধুমাত্র সওয়াব কম হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (690,210 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আপনি যে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন, তা ইমাম আহমদ (রহ.), ইবনে হিব্বান, ও তাবারানী প্রমুখ বিভিন্ন সুত্রে বর্ণিত হয়েছে।

হাদীসটি হলো:

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال:
"من اشترى ثوبًا بعشرة دراهم، وفيها درهم من حرام، لم تُقبل له صلاة ما دام عليه."
(মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ৫৭৮৭)

অর্থ:
“যে ব্যক্তি দশ দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় ক্রয় করল, যার মধ্যে এক দিরহাম হারাম অর্থ ছিল — যতক্ষণ সে সেই কাপড় পরিধান করবে, তার নামাজ কবুল হবে না।”

হাদীসের অর্থ ও ব্যাখ্যা (ফায়দা)

ইমাম নববী, ইবনে রাজব, ইবনে হজর প্রমুখ হাদীস ব্যাখ্যাকারগণ বলেন —
এখানে ‘কবুল হবে না’ (لَا تُقْبَلُ) কথাটির দুইটি সম্ভাব্য অর্থ আছে:

1. কবুল = আদায় না হওয়া (অর্থাৎ নামাজ বাতিল হওয়া)

2. কবুল = সওয়াব না পাওয়া, তবে ফরয আদায় হয়ে যাওয়া

এখানে দ্বিতীয় অর্থটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য, এবং মুহাদ্দিসগণ ও ফিকহবিদগণ সাধারণত দ্বিতীয় অর্থই নিয়েছেন।

 ইমাম নববী (রহ.) বলেন:

 “যেখানে হাদীসে ‘লা তুকবাল’ (কবুল হবে না) শব্দটি এসেছে, তা অনেক সময় সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া, আমল আদায় হয়নি এমনটি নয়।”
(শরহ মুসলিম, নববী)

ইবনে হজর আল আসকালানী (রহ.) বলেন:

“এখানে নামাজ আদায় হয়ে যায়, কিন্তু হালাল-হারামের মিশ্রণ থাকায় আল্লাহর নিকট তা গ্রহণযোগ্যতার মর্যাদা পায় না।”
(ফাতহুল বারী, ১/৪৪৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালিক এবং ইমাম আহমদ (রহ.) — সকলেই একমত যে:

যদি কারো পোশাক নাপাক বা গায়েবীভাবে অপবিত্র না হয়, বরং অর্থের দিক থেকে হারাম হয়, তাহলে নামাজ আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সেই নামাজ কবুল করবেননা,অর্থাৎ তার ফরজিয়াত আদায় হয়ে,সেই নামাজ তাকে পুনরায় আদায় করতে হবেনা,তবে সেই নামাজের ছওয়াব সে পাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 275 views
...