১. শরীয়াহর দৃষ্টিতে নিচের কথাগুলো কতটুকু সঠিক??
২. স্ত্রী তার হক বুঝে না পেলে স্বামীর সাথে কিরুপ আচরন করবে এবং কি কি ব্যবস্থা গ্রহন করবে?
স্ত্রী চাইছে, তার চাওয়া স্বামী পূরন করুক।
আর স্বামী চায়, তার চাওয়া স্ত্রী পূরণ করুক।
এভাবেই যদি সব সময় চলতে থাকে, তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো — যদি এমন হয় যে স্বামীর চাওয়া আর স্ত্রীর চাওয়া পরস্পরবিরোধী হয়?
এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার যে সবক্ষেত্রে দুইজনের চাওয়া এক হবে না।
এখন একটা সিদ্ধান্তে আসতেই হবে — কার চাওয়া বেশি গুরুত্ব পাবে?
কার ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে?
এবং কে নিজের ইচ্ছা সামঞ্জস্য করবে অপরজনের সঙ্গে?
এই জায়গায় এসে বিষয়টা ‘সিস্টেমেটিক’ভাবে এগোনো দরকার।
কারণ কোনো ব্যবস্থা না থাকলে শুরু হবে বিশৃঙ্খলা—
কার ইচ্ছা পূরণ হবে সেটা নিয়ে।
দু’জনই নিজেদের পক্ষে যুক্তি দেখাবে,
তর্ক-বিতর্ক হবে, কিন্তু ফলাফল কে দেবে?
প্রত্যেকে চায় নিজের ইচ্ছাই যেন ফলাফল হয়।
কেউই সমন্বয় করতে চায় না।
তাই, ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে —
এই জায়গায় একজনের কর্তৃত্ব থাকা দরকার।
আর অনেক বিবেচনার পর শরীয়ত এই কর্তৃত্ব স্বামীর হাতে দিয়েছে।
এই জায়গায় এসে শরীয়ত যেমন বলে,
সমাজও সেটাই মানে — স্বামীর ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
আর এখানেই এই কথাটা হলো উপসংহার —
“আমি তোমার সঙ্গে শান্তি বজায় রাখব।”
এটাই হওয়া উচিত স্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি, এবং সেটাই সর্বোত্তম।
কিন্তু এখানেই এসে অনেক নারীবাদী (feminist) আটকে যায়।
তারা কোনো কিছু শুনতে চায় না, বুঝতেও চায় না।
মুহূর্তেই আগুনের মতো ক্ষোভ জেগে ওঠে তাদের মধ্যে।
কারণ তারা বিশ্বাস করে — স্বামী-স্ত্রী সমান।
স্বামীর চাওয়া-পাওয়া আর স্ত্রীর চাওয়া-পাওয়া সমান হওয়া উচিত।
তারা সহ্য করতে পারে না, যদি স্বামীর ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
এখন আসল প্রশ্ন হলো —
তাহলে কি স্ত্রী’র কোনো ইচ্ছা থাকবে না?
দ্বন্দ্বে কি শুধু স্বামীর ইচ্ছাই ঠিক হবে,
আর স্ত্রী শুধু মানিয়ে নেবে?
উত্তর হলো — না।
স্ত্রীরও ইচ্ছা থাকবে, তা পূরণের উপায়ও আছে।
যখন মতবিরোধ হবে, তখন স্ত্রী স্বামীকে ‘convince’ করবে —
কিন্তু ঝগড়া করে নয়,
বরং সম্মান ও উত্তম আচরণের মাধ্যমে।
যদি সে স্বামীকে বোঝাতে পারে,
তাহলে স্ত্রী’র ইচ্ছা পূর্ণ হবে,
এবং স্বামী তখন স্বেচ্ছায় মানিয়ে নেবে।
কিন্তু যদি স্বামী বোঝানোয় রাজি না হয়,
তাহলে স্ত্রী কি রাগারাগি বা জোর করবে? না।
বরং ধৈর্য ধরবে।
কারণ, যদি স্ত্রী এই ধারণা নেয় যে—
স্বামীকে সব সময়ই তার কথা মানতে হবে,
তাহলে তো ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে
সব সময়ই স্ত্রী’র ইচ্ছা পূর্ণ হতে হবে।
বরং স্ত্রীর মানসিকতা এমন হওয়া উচিত—
আমার কথায় হয়তো সে রাজি নাও হতে পারে,
সে রাজি হতে বাধ্যও নয়।
তবুও আমি শান্তভাবে, যুক্তি দিয়ে আমার অবস্থান বোঝাবো।
তারপর সিদ্ধান্ত নেবে স্বামী—
কার ইচ্ছা পূর্ণ হবে।
এভাবেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব।
এটাই একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক ব্যবস্থা।
কিন্তু যারা নারী-পুরুষের সমান অধিকার বলে দাবি করে,
তারা এই ব্যবস্থাটিকে মেনে নিতে পারে না।
আর এর বিকল্প হিসেবে তাদের কাছে কোনো ভালো ব্যবস্থা নেইও।
এটাই ‘ডিফল্ট’ সিস্টেম।
এই ব্যবস্থায় কোনো সমস্যা নেই।
সমস্যা হয়, যখন আমরা এই ব্যবস্থা মানতে পারি না।
অনেক সময় স্ত্রী সঠিকভাবে বোঝাতে পারে না,
আবার অনেক সময় স্বামী পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে
ভুলের উপর অটল থাকে।
এগুলো মানুষজনের সমস্যা,
ব্যবস্থার নয়।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো—
এই ব্যবস্থাটিকে মেনে নিতে না পারা।