শরীয়তের বিধান হলোঃ
কারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্যদ্রব্য পৃথকভাবে বা সম্মিলিতভাবে নিসাব পরিমাণ ছিল, বছরের মাঝে এ জাতীয় আরো কিছু সম্পদ কোনো সূত্রে পাওয়া গেল এক্ষেত্রে নতুন প্রাপ্ত সম্পদ পুরাতন সম্পদের সঙ্গে যোগ হবে এবং পুরাতন সম্পদের বছর পূর্ণ হওয়ার পর সমুদয় সম্পদের যাকাত দিতে হবে। বছরের মাঝে যা যোগ হয়েছে তার জন্য পৃথক বছর পূর্ণ হওয়া লাগবে না।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬৮৭২,৭০৪০,৭০৪৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩২৫,১০৩২৭)
বছরের শুরু ও শেষে নিসাব পূর্ণ থাকলে যাকাত আদায় করতে হবে। মাঝে নিসাব কমে যাওয়া ধর্তব্য নয়। অবশ্য বছরের মাঝে সম্পূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে ঐ সময় থেকে নতুন করে বছরের হিসাব আরম্ভ হবে এবং এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আদায় করতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৪২,৭০৪৪।)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
রমজানের ১ তারিখে আপনি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছিলেন,পরবর্তী বছর রমজানের ১ তারিখে আপনার সম্পদ কমে গেলে অর্থাৎ নেসাব পরিমান সম্পদ আর না থাকলে সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।
এরপরের মাস শাওয়াল মাসের এক তারিখ আপনি আবারো নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে সেক্ষেত্রে সেটার উপর তখনই সাথে সাথে যাকাত দিয়ে দিতে হবেনা।
বরং পরবর্তী বছর শাওয়াল মাসের এক তারিখে আপনার মালিকানায় নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে সেক্ষেত্রে তার উপর যাকাত ফরজ হবে।
(০২)
ঋণ দুই ধরনের হয়ে থাকে।
ক. প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে যে ঋণ নেওয়া হয়।
খ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেওয়া হয়।
,
প্রথম প্রকারের ঋণ সম্পদ থেকে বাদ দিয়ে যাকাতের নিসাব বাকি থাকে কিনা তার হিসাব করতে হবে। নিসাব থাকলে যাকাত ফরয হবে, অন্যথায় নয়।
,
কিন্তু যে সকল ঋণ উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয় যেমন কারখানা বানানো, কিংবা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং বানানো অথবা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিলে যাকাতের হিসাবের সময় সে ঋণ ধর্তব্য হবে না। অর্থাৎ এ ধরনের ঋণের কারণে যাকাত কম দেওয়া যাবে না।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৮৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন,
আপনার যে ঋন আছে! এটি ঋণের কোন প্রকারের?
সেই ঋণ যদি প্রথম প্রকারের হয়,অর্থাৎ এ টাকা যদি প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে নেওয়া হয়,ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে নয়।
তাহলে সেটা বাদ দিয়ে যেহেতু আপনার নেসাব পরিমান সম্পদ থাকেনা,তাই তার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।
তবে যদি আপনি দ্বিতীয় প্রকারের ঋণ নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে।
এমতাবস্থায় আপনি যে মাসে যাকাত আদায় করছেন, সে মাসে আপনাকে যে পরিমান লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে, সে কিস্তির টাকা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকার যাকাত আদায় করতে হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৩)
স্যালাইন বা ইঞ্জেকশন নিলে রোযা ভাঙ্গে না। তেমনিভাবে অসুস্থতার কারণে গ্লুকোজ স্যালাইন নিলেও রোযার ক্ষতি হবে না। তবে অসুস্থতা ছাড়া গ্লুকোজ স্যালাইন নেওয়া নাজায়েয।