আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in সালাত(Prayer) by (54 points)
আমি হানাফি মাযহাব অনুসারে বিতর সালাত আদায় করি অর্থাৎ দুই রাকাত পরে বৈঠকে বসি। কিন্তু জানতে পারলাম যে সহীহ হাদিস হচ্ছে যে দুই রাকাআত পরে বৈঠকে না বসে একদম শেষ বৈঠকে বসতে হয়। এখন আমি কি এই সহীহ হাদিসে উপর আমল করবো নাকি যেমন ভাবে পড়েছি ঔইভাবেই পড়ে যাবো? কোনটা উত্তম হবে?

1 Answer

0 votes
by (598,650 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বিতির নামায সম্পর্কে পাকিস্তানের বিশিষ্ট গবেষক আলেম মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানভী রাহ.
'হাদীস ও আছারের আলোকে বিতর নামায'
শীর্ষক একটি ফেকহী মাক্বালা লিখেছেন- যা মাসিক আল-কাউছারে প্রকাশ করা হয়েছে।উনি এ সম্পর্কিয় যাবতীয় বিষয়বস্তুকে একজায়গায় একত্র করেছেন।তাই এ বিষয়ে নতুন করে লিখার কোনো প্রয়োজন নাই।

নিম্নে উনার মাক্বালাকে উপস্থাপন করছি-
প্রশ্ন : বিতরের নামাযে দুই রাকাতের পর আত্তাহিয়্যাতুর জন্য বসা এবং তৃতীয় রাকাতে ফাতিহা-কিরাতের পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত কান পর্যন্ত ওঠানো অতঃপর হাত বেঁধে কুনূত পাঠ করা কি দলীল দ্বারা প্রমাণিত?
অথচ হযরত আয়েশা রা.-এর বিশুদ্ধ বিবরণে আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তিন রাকাত, পাঁচ রাকাত বা সাত রাকাত বিত্র পড়তেন তখন দুই রাকাতের পর আত্তাহিয়্যাতুর জন্য বসতেন না। তদ্রূপ বিতর নামায এক রাকাত পড়াও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
আশা করি বিষয়টি পরিষ্কার করবেন। পাশাপাশি আরো জানতে চাই যে, কুনূত পাঠের সময় দুই হাত দোয়ার মতো ওঠাবে, না নামাযের মতো হাত বেঁধে রাখবে?
হাদীস শরীফের আলোকে সমাধান প্রদান করে কৃতজ্ঞ করবেন।

উত্তর : আপনি বিতর নামাযের বেশ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বিষয়গুলি হচ্ছে :
১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বিতরের নামায তিন রাকাতই পড়তেন, না এক রাকাত, পাঁচ রাকাত বা সাত রাকাতও পড়তেন?
২. বিতরের দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করতেন, না সরাসরি তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন?
৩. কুনূত পাঠের পূর্বে কি আল্লাহু আকবার বলে হাত ওঠাতেন?
৪. দুআয়ে কুনূত হাত বেঁধে পাঠ করতেন, না দোয়ার মতো হাত তুলে পাঠ করতেন?

ধারাবাহিকভাবে প্রতিটির উত্তর লিখছি।
১. বিতরের রাকাত-সংখ্যা
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের নামায তিন রাকাত পড়তেন, এক রাকাত পড়া প্রমাণিত নয়। তদ্রূপ যেসব রেওয়ায়েতে তিন রাকাতের অধিক, যথা পাঁচ, সাত বা নয় রাকাত পড়ার কথা বলা হয়েছে সেখানেও মূল বিতর তিন রাকাত। বর্ণনাকারী পূর্বের বা পরের রাকাতসমূহ মিলিয়ে সমষ্টিকে ‘বিতর’ বলে বর্ণনা করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন তা নীচের হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত।

১. আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রমযানুল মুবারকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামায কীরূপ হত?’ উম্মুল মুমিনীন বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে ও রমযানের বাইরে এগারো রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন-এত সুন্দর ও দীর্ঘ সে নামায, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতঃপর চার রাকাত পড়তেন-এরও দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে চেয়ো না। এরপর তিন রাকাত পড়তেন।
’ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻤﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻛﻴﻒ ﻛﺎﻥ ﺻﻼﺓ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ؟ ﻗﺎﻟﺖ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺰﻳﺪ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻻ ﻓﻲ ﻏﻴﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺇﺣﺪﻯ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ، ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ، ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺛﻼﺛﺎ .
(সহীহ বুখারী ১/১৫৪; সহীহ মুসলিম ১/২৫৪; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/859

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যেভাবে হানাফি মাযহাব অনুসারে বিতর সালাত আদায় করে আসছেন, সেভাবে আদায় করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...