আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আমাদের এখানে একজন ভিখারিনী এসেছিল।সে আমাদের থেকে ভাত খুজছিল।আমরা একে ভাত দিই আর সাথে ভর্তা দি।ভাতটা একটু পোড়া ছিল।তবে ভিখারিনী না আসলে সেই ভাতগুলো আমাদের ঘরের কেউ খেয়ে ফেলত।এখন সেই ভাতটা পাওয়ার পর ভিখারিনী মানুষকে দেখিয়ে বলছিল পোড়া ভাত দিসে আমাকে। এখন আমরা বলছিলাম ভাতটা ভাল খারাপ না।এরপর ভিখারিনী কিছুদুর যাওয়ার পর সেই ভাত আর ভর্তা একজায়গায় রেখে দিয়ে চলে যায়। এরপর এতে আমাদের একজনের মাথা গরম হয়ে যায়।এরপর সবাইকে রাগের সুরে বলতে লাগে পোড়া ভাত দেখে খেতে চাইনা এরপর ফেলে চলে গেছে।এখন এরকম পোড়া ভাত,বাসি ভর্তা দেয়টা কি গুনাহের কাজ হয়েছে? আর এরকম রাগের সুরে সবাইকে বলাটা কি গুনাহের কাজ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (688,650 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআন ও হাদীসে স্পষ্টভাবে নির্দেশ এসেছে যে,
আল্লাহর পথে দান করার সময় নিম্নমানের নয়, বরং ভালো ও হালাল বস্তু দেওয়া উচিত।

সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৬৭

 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ

বাংলা অনুবাদ:
“হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের উপার্জিত উত্তম জিনিস এবং আমি যে জিনিস তোমাদের জন্য ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি তার উত্তম অংশ থেকে ব্যয় করো;
আর এমন নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করো না যা তোমরা নিজেরাও নিতে না, যদি না চোখ বুজে নিতে বাধ্য হও।
জেনে রাখো, আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসার যোগ্য।”
(সূরা আল-বাকারা, ২:২৬৭)

অর্থ: আল্লাহ তাআলা বলেছেন — নিজেরাও যা নিতে লজ্জা পেতে, তা অন্যকে দিয়ো না।
দান যেন হয় ভালো, পবিত্র ও মূল্যবান জিনিস থেকে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا
(رواه مسلم 1015)

বাংলা অনুবাদ:
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন —
“আল্লাহ পবিত্র, তিনি শুধুমাত্র পবিত্র জিনিসই গ্রহণ করেন।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০১৫)

অর্থাৎ, দান ও সদকার ক্ষেত্রেও আল্লাহ কেবল হালাল, উত্তম ও পরিষ্কার জিনিস গ্রহণ করেন।

 عَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ بِصُرَّةٍ مِنْ طَعَامٍ، وَهِيَ أَوَّلُ صَدَقَةٍ جَاءَتْ، فَتَتَابَعَ النَّاسُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: مَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا...
(رواه مسلم 1017)

বাংলা অনুবাদ:
আনসারদের এক ব্যক্তি কিছু খাদ্য এনে দান করেন — সেটাই ছিল প্রথম দান, তারপর লোকেরা তাকে দেখে দান শুরু করে।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“যে ব্যক্তি ইসলামে একটি ভালো রীতি শুরু করে, তার জন্য সেই রীতির সওয়াব রয়েছে…”
(সহীহ মুসলিম ১০১৭)

অর্থাৎ, ভালো মানের জিনিস দান করলে অন্যরাও উৎসাহিত হয়, এটি সওয়াবের কাজ।

تَصَدَّقُوا وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ
(رواه البخاري 1417, مسلم 1016)

বাংলা অনুবাদ:
“দান করো, তা অর্ধেক খেজুর দিয়েও হোক।”
(সহীহ বুখারী, ১৪১৭)

মানে হলো — সামান্য দান হলেও সেটা হালাল, পবিত্র ও উত্তম নিয়তে হতে হবে।
“পোড়া, নষ্ট, অপবিত্র” কিছু নয়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এরকম পোড়া ভাত,বাসি ভর্তা দেয়াটা অনুচিত হয়েছে।

(খাবারটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকলে তা দেয়া গুনাহের কাজ বলে গন্য হবে। ) 

তবে এরকম রাগের সুরে সবাইকে বলাটা  গুনাহের কাজ হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
রাগের সুরে বলাটা গুনাহের কাজ কেন হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...