আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
559 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
শাফে'ঈ নামের অর্থটা কোথাও পাচ্ছি না/আমার নিকট অস্পষ্ট। সাফি, শাফি, সাফিন ইত্যাদি নামের ব্যাপারে এই সাইট থেকে জেনেছিলাম যে তৃতীয়টা রাখা জায়েজ নেই। কারণ, এর অর্থ আরোগ্যদাতা। আর এটা আল্লাহ্ এর গুণবাচক নামের সাথে মিলে। আল্লাহ্ এর গুণবাচক নাম সরাসরি কোনো মানুষের ক্ষেত্রে ব্যবহার বা নামকরণ করা জায়েজ নেই, যদি না আগে আবদে যোগ করা হয়! তাহলে শাফে'ঈ নামের অর্থটা কী? (উত্তরে দয়া করে অর্থ কোনো ডিকশনারিতে আছে কিনা বা কোনো রেফারেন্স দিবেন সাথে) আর শাফে'ঈ নাম কি শাফি এর মতো একই অর্থ বহন করে?

শাফে'ঈ নাম রাখা কি জায়েজ আছে? মাযহাব প্রতিষ্ঠাকারী প্রসিদ্ধ চার ইমামের একজন হলেন ইমাম শাফে'ঈ। উনার নামে নামকরণ করা যাবে কি? উনার পুরো নাম আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল শাফে'ঈ। এখন আমাদের দেশে শাফে'ঈ নাম রাখলে কেউ আবদে যোগ করে ডাকে না। সবাই শর্ট নাম তথা শাফে'ঈ তেই ডাকে। তো এক্ষেত্রে এই নাম রাখা কি জায়েজ হবে যদি সবাই আব্দুল্লাহ যোগ না করে শুধু শাফে'ঈ ই ডাকে/ডাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে??

1 Answer

0 votes
by (574,110 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। আমরা এভাবেও বলতে পারি যে, পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও  আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.

অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০

মানসিকতা ও স্বভাবের উপরও নামের একটা প্রভাব থাকে।

أَخْبَرَنِي عَبْدُ الحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، قَالَ: جَلَسْتُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، فَحَدّثَنِي: أَنّ جَدّهُ حَزْنًا قَدِمَ عَلَى النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَقَالَ: مَا اسْمُكَ؟ قَالَ: اسْمِي حَزْنٌ، قَالَ: بَلْ أَنْتَ سَهْلٌ. قَالَ: مَا أَنَا بِمُغَيِّرٍ اسْمًا سَمّانِيهِ أَبِي قَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: فَمَا زَالَتْ فِينَا الحُزُونَةُ بَعْدُ.

আবদুল হুমাইদ বিন শায়বা বলেন, আমি হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিবের কাছে বসা ছিলাম। তিনি তখন বললেন, আমার দাদা ‘হাযান’ একবার নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন। নবীজী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? দাদা বললেন, আমার নাম হাযান। (হাযান অর্থ শক্তভূমি) নবীজী বললেন- না, তুমি হচ্ছ ‘সাহল’ (অর্থাৎ তোমার নাম হাযানের পরিবর্তে সাহল রাখো; সাহল অর্থ, নরম জমিন।) দাদা বললেন, আমার বাবা আমার যে নাম রেখেছেন আমি তা পরিবর্তন করব না। সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, এর ফল এই হল যে, এরপর থেকে আমাদের বংশের লোকদের মেযাজে রুঢ়তা ও কর্কশভাব রয়ে গেল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৯৩

সুন্দর নাম রাখার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হল, হাশরের ময়দানে- সেখানে পূর্বাপর সকল মানুষ একত্রিত হবে এবং ব্যক্তিকে তার নাম ও তার বাবার নামসহ ডাকা হবে।

হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.

কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮
,
আরো জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এখানে মুল শব্দ হলোঃ 

شَافِع [شفع]
[শাফি'] শব্দের অর্থঃ 
সুপারিশকারী,শাফাআতকারী,অগ্রক্রয়ের অধিকারী।
preemptor

ইমাম শাফেয়ীর উপনাম আবূ আব্দুল্লাহ্ বংশ নামা : "মুহাম্মদ বিন ইদ্রীস বিন আববাস বিন উসমান বিন শাফেয়ী আল কুরায়েশী আল শাফেয়ী আল মাক্কী" । ইমাম শাফেয়ী (রহ.)-এর বংশ- কুরাইশ বংশের অন্যতম আবদে মানাফ বিন কুসাই এর কাছে মিলিত হয়েছে, তাই ইমাম শাফেয়ীর বংশের মূল এবং রাসূল -এর বংশ একই। এ জন্য তিনি আল-মুত্তালাবী বলে পরিচিত । তিনি কুরাইশ বংশের তাই কুরায়েশী এবং তার দাদা "শাফে" সাহাবী এর দিকে সম্পৃক্ত করায় শাফেয়ী,মক্কায় প্রতিপালিত হওয়ায় মাক্কী বলে পরিচিতি লাভ করেন ।
,
এখানের তার দাদার দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করায় তাকে শাফেয়ী বলে,মুল শব্দ আসলে শাফি'
,
★কেহ যদি ইমাম শাফে'য়ী রহঃ এর দিকে সম্পৃক্ত করে   শাফে'ঈ বা শাফেয়ী নামে নামকরণ করে তাহলে জায়েজ আছে।
,
★যদি শুধু شفيع শাফি'  (শেষে আইন যুক্ত) বলে নামাকরন করে সেটিও জায়েজ আছে।
★তবে শুধু شافي শাফি (অর্থঃ শেফা দান কারী,সুস্থতা দান কারী) এ নামে নামকরন বৈধ নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...