আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
স্বামী সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যবসায় লস খেয়ে এখন অনেক বেশি ঋনে জর্জরিত অবস্থা। স্বামীর জন্য দুনিয়ার জীবন এখন জাহান্নাম হয়ে গেছে। একজন মানুষকে সরাসরি প্রতিনিয়ত জাহান্নামের শাস্তি পেতে দেখছি আমি...মানুষ হিসেবে ঘুম,খাওয়া,শারীরিক মানসিক শান্তি কিছুই নেই তার,পারিবারিক সামাজিক দিক আত্মীয় স্বজনদের সাথে সম্পর্কহীন যোগাযোগহীন তার জীবনের কোনদিকেই ১% স্বস্তি নেই কোথাও। আমার ২ বছরের একটা ছেলে আছে আমি ওকে হাফেজ আলেম বানানোর নিয়ম করেছি আল্লাহ যদি চান এবং রহমত করেন। কিন্তু আমার এই ভালো কাজে একমাত্র বাধা আমার স্বামী। তাকে প্রায় প্রতিদিনই আমি নসীহা করি বুঝাই যে আল্লাহ ছাড়া তোমার কোন অপশন নেই।কোন সাহায্যকারী নেই। সন্তানকে নেক করতে চাইলে বাবা মাকে পাপ ছাড়তে হবে হালাল জীবনযাপন করতে হবে। কিন্তু তুমি যদি ঋন সুদ এগুলোর মধ্যেই পড়ে থাকো তাহলে তো আমার সন্তান কখনোই নেক সন্তান হতে পারবেনা। কিন্তু আমার স্বামী আমার কোন কথাই শোনে না। সে প্রতিদিনই ঋন করে,তার পাওনাদার অনেক! ১০/১৫ লাখ টাকা ঋন করছে। আমার স্বামী তার ঋন পরিশোধ করার জন্য আমার মার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে ২ বছর আগে সেই টাকা এখনও দিতে পারেনি এখন আমার মার সাথে তার সম্পর্ক খুবই খারাপ হয়ে গেছে!এই ৩ লাখ টাকার জন্য আমার মা আমার স্বামীকে জঘন্য অশ্লীল ভাষায় বাবা মা তুলে গালি দেয়,পুলিশের ভয় দেখায়,মানহানী করে কিন্তু আমার স্বামীর বর্তমান অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত!সে ধারের টাকা দিতে ব্যর্থ হয় প্রতিবার। আমার মা আমার সাথে সকল যোগাযোগ সম্পর্ক বন্ধ করে দিয়েছে। আমার খালার কাছ থেকে কয়েকমাস আগে আমার স্বামী সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে এখন সেই টাকাও দিচ্ছে না। অথচ আমার খালাকে আমার স্বামী বলেছে ধারের এই সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার কথা যেন আমি কোনভাবে না জানি। এখন আমার খালাও আমাকে প্রতিদিন ৪/৫ বার করে ফোন দিয়ে স্বামীর কাছ থেকে সেই টাকা তুলে দিতে চাপ দেয় কিন্তু আমি তো নিরুপায় আমি আমার স্বামীকে বিশ্বাস করতাম কিন্তু ঋনে পড়ে সে আমার সাথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মিথ্যা কথা বলে যেগুলো বিভিন্ন সময় আমি জানতে পারি কারন সত্য তো কখনো গোপন থাকেনা। আল্লাহর রহমতে আমি পরিপূর্ণ পর্দা করি,মারহাম ননমারহাম মেনে চলি কিন্তু আমার খালার কাছ থেকে স্বামী সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ধার নেয়ার কারনে আমার খালা বিভিন্ন সময় যখন তখন আমার বাসায় আসে,আমার খালা তো আমার স্বামী এবং আমার ছেলের মারহাম না সেক্ষেত্রে তাদের দেখা সাক্ষাৎ করা তো জায়েজ নেই। কিন্তু আমি স্বামীর জন্য এখানেও ইসলাম পরিপূর্ণ পালন করতে পারিনা। আমার ছেলেকে আমি ছোট থেকেই মারহাম ননমারহাম মেনে চলা শিখাতে চাই সেটাও পারছিনা আমার স্বামীর জন্য। মোটকথা,স্বামীর টাকা ধার নেয়ার কারনে আমার আপন বাবা,মা,আপন খালা সবার সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে। আমি সবসময় মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকি,না আমি নিজে পরিপূর্ণ ইসলাম পালন করতে পারছি না ছোট ছেলেটাকে পরিপূর্ণ ইসলামের নিয়ম শেখাতে পারছি। কিছুদিন পরপর বাসায় ব্যাংক, এনজিও এর লোকজন এসে চিল্লাচিল্লি করে যায় এতে আমি ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে যাই,আমার পর্দা লঙ্ঘন করে ননমারহামদের সাথে বাধ্য হয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করেনা। কিন্তু এটাও স্বামীর জন্য করতে হয়। আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন আর ভয়ে আছি, আমার সর্বদা মনে হয় শুধুমাত্র স্বামী জন্য আমার বাচ্চার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ বাচ্চাটার উপর রহমত করবেন না। আমার আসলে কোন যাওয়ার জায়গায় নেই কবর ছাড়া,বিয়ের পর মেয়েদের কবর ছাড়া যাওয়ার কোন জায়গা থাকেনা। শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করি তাই সবকষ্ট সহ্য করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। আমার স্বামীর জন্য আমার মন থেকে কোন দোয়া আসেনা। আমার স্বামীকে দেখলেই আমার মনে হয় সে আমার ছেলের সবচেয়ে বড় শত্রু তার জন্যই আমার ছেলে নেক সন্তান হবেনা, হাফেজ হতে পারবেনা আলেম হতে পারবেনা। স্বামীকে কোন সম্মান করতে ইচ্ছে করে না,তার সাথে ভালো ব্যবহার করতে ইচ্ছে করেনা,তাকে সহ্য করতে পারিনা,দেখলেই রাগ উঠে যায়। কিন্তু মেয়ে হিসেবে আমি নিরুপায় এজন্য তাকে তালাক দেয়াও সম্ভব না। এখন আমার কি করনীয় একটু বলে দিন দয়া করে। আমার ছেলের ভবিষ্যতটা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাকে উত্তম নসীহা দিন দয়া করে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী হিসেবে এবং মা হিসেবে আমার করনীয় কি??? স্বামী আগে শিক্ষক ছিল কিন্তু এখন মুদি দোকান চালায়। দুনিয়াতে স্বামীর কোন ধন সম্পদ জমিজমা মোটকথা কোন সম্পদই নেই। সে রেগুলার তাহাজ্জুদ পড়ে কিন্তু ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না ২/৩ ওয়াক্ত পড়ে। সে কথা দিয়ে কথা রাখে না।
স্বামীর জন্য সবাই আমাকে ভুল বুঝছে,কথা শোনাচ্ছে,ছেলের ভবিষ্যত অন্ধকার দেখি,আল্লাহর আদেশ নিষেধ মানার পথেও স্বামীর জন্য বাধা পাই, ইদানীং সে আমার সাথে মিথ্যা কথা বলে,বারবার ঋন করে, নিজ থেকে কথা দিয়ে কথা রাখে না। এসব কারনে আমি তাকে দেখতে পারিনা সহ্য করতে পারিনা। প্রতিনিয়ত নিজের সাথে দ্বন্দ্ব করতে থাকি এধরণের মানুষের সাথে থাকা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। এই অবস্থায় আমার করনীয় কি? কিভাবে স্বামীর হেদায়েতের মাধ্যম হতে পারি আমি? ছেলের কিভাবে নেক সন্তান বানাবো প্রথম শর্তে তো আমি ফেল হয়ে যাচ্ছি। আমাকে একটু সমাধানের রাস্তা বাতলে দিন উস্তাদ