যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে।কথা বলতে পারবে।
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)
যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।
(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)
" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".
বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)
পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উভয়পক্ষের আচরণ এরকম হওয়া উচিতঃ-
★পাত্রীপক্ষের দৃষ্টিকোণ থেকে
1. নিজের সীমাবোধ প্রকাশ করা স্বাভাবিক —
পাত্রী যদি ভিডিও কলে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন, তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। অনেকেই ক্যামেরায় কথা বলতে লজ্জা পান বা প্রথমে একটু সময় নিতে চান।
2. ভদ্রভাবে জানানো উচিত —
সরাসরি "না" না বলে ভদ্রভাবে বলতে পারেন যেমন:
“আমি একটু লাজুক প্রকৃতির, তাই ভিডিও কলে কথা বলায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। সরাসরি দেখা হলে আলাপটা স্বাভাবিকভাবে করা যাবে।”
3. পরিবারের মাধ্যমে জানানো ভালো —
পাত্রপক্ষ যেন ভুল না বোঝে, সে জন্য পাত্রীর বাবা-মা বা অভিভাবকরা নরম ভাষায় ব্যাখ্যা করতে পারেন। এতে পরিস্থিতি সম্মানজনক থাকে।
★পাত্রপক্ষের দৃষ্টিকোণ থেকে
1. সম্মান প্রদর্শন করা উচিত —
পাত্রপক্ষের উচিত পাত্রী বা তার পরিবারের সীমাবোধকে সম্মান করা। সবাই ভিডিও কলে কথা বলায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না, এটা বোঝা জরুরি।
2. চাপ প্রয়োগ না করা —
বারবার ভিডিও কলের জন্য চাপ দিলে তা পাত্রীপক্ষের কাছে অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। এতে সম্পর্কের শুরুতেই নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে।
3. সমঝোতার মনোভাব দেখানো ভালো —
বলা যেতে পারে:
“আমরা শুধু পরিচয়ের জন্য কথা বলতে চেয়েছিলাম, তবে যদি আপনারা চান সরাসরি দেখা হোক, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।”