আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
10 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
edited ago by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমি একজন মেয়ে। আমি একটা বুকশপ ও টিউশনি করে মাসিক ১৮০০  টাকা আয় করি, যা দিয়ে শুধুমাত্র আমার পড়াশোনার খরচ চলে যায় আলহামদুলিল্লাহ। জানুয়ারিতে আমি নতুন কোর্সে ভর্তি হবো ইন শা আল্লাহ।  তখন আমার এই সামান্য আয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব হবে না। আবার টিউশনিও থাকবে কিনা নিশ্চিত না। আর টিউশন না থাকলে পড়াশোনার বর্তমান খরচ আমার পক্ষে বহন করা সম্ভব হবে না।  আমার বাবা মৃত।  আর ভাইয়ারা হারাম ইনকাম করেন। বড় ভাইয়া মাসিক খরচ বাবদ ৫০০ টাকা দেন। তবে পড়াশনা বাবদ টাকা চাইলে কখনোই দিবেন না। আর জামাকাপড় কেনা বাবদও কোনো টাকা দেন না।
১। ভাইয়ার দেওয়া এই হারাম টাকা আমি পড়াশোনার খরচ বাবদ জমিয়ে রাখতে পারবো?

২। পড়াশোনার খরচ বাবদ জমিয়ে রাখা টাকা প্রয়োজন হলে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে? যেমন,  জামা কাপড় কেনা, ঔষধ কেনা, খাবার খরচ, ডাক্তার খরচ, যাতায়াত খরচ।

1 Answer

0 votes
ago by (682,200 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

مسألة إذا كان الحرام أو الشبهة في يد أبويه فليمتنع عن مؤاكلتهما فإن كانا يسخطان فلا يوافقهما على الحرام المحض بل ينهاهما فلا طاعة لمخلوق في معصية الله تعالى فإن كان شبهة وكان امتناعه للورع فهذا قد عارضه أن الورع طلب رضاهما بل هو واجب فليتلطف في الامتناع فإن لم يقدر فليوافق وليقلل الأكل بأن يصغر اللقمة ويطيل المضغ ولا يتوسع فإن ذلك عدوان (احياء علوم الدين– 2/147)
সারমর্মঃ
পিতা মাতার হাতে হারাম বা সন্দেহজনক টাকা থাকলে সেটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবে।
যদি তারা খাবারের জন্য চাপ দেয়,অথবা সে যদি নিজের খরচে চলতে অক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে কম খাবে,ছোট ছোট লোকমা খাবে,,,,,

রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

وَفِي جَامِعِ الْجَوَامِعِ: اشْتَرَى الزَّوْجُ طَعَامًا أَوْ كِسْوَةً مِنْ مَالٍ خَبِيثٍ جَازَ لِلْمَرْأَةِ أَكْلُهُ وَلُبْسُهَا وَالْإِثْمُ عَلَى الزَّوْج ِتَتَارْخَانِيَّةٌ

যদি স্বামী সন্দেহজনক মাল দ্বারা খাদ্য বা কাপড় ক্রয় করে,তাহলে স্ত্রীর জন্য উক্ত খাদ্য এবং কাপড়-কে গ্রহণ করা জায়েয রয়েছে। গুনাহ অবশ্য স্বামীরই হবে।(তাতারখানিয়া)(রদ্দুল মুহতার-৬/১৯১)

আরো জানুনঃ

শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে। যেমন, উপার্জন অক্ষম মাতা-পিতা, নাবালিগ ছেলে,মেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।

এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলে, সেই সম্পদ থেকে খরচ না করে নিজ মাল থেকে খরচ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে। তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যে,তার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে। হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে। কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা ঐ উপার্জন সক্ষম ব্যক্তির একান্ত দায়িত্ব ছিলো। সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের-ই হবে। বিস্তারিত জানতে দেখুন-(ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

বাবার ইনকাম হারাম হলেও বাবার উপর শরীয়ত কর্তৃক মেয়েকে লালন পালন করা ওয়াজিব।হারাম খাওয়ানোর দরুণ বাবাকে জবাবদিহি করতে হবে।তবে মেয়ে নিরাপরাধ হিসেবেই থাকবে।

নাবালক ছেলে সন্তান এবং সকল বয়সের মেয়ে সন্তানের লালনপালনের দায়িত্ব নিকটাত্মীয় মাহরাম পুরুষের উপর।পিতা ভাই চাচা ইত্যাদি মাহরাম পুরুষরা ধারাবাহিক মেয়ে সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এটা তাদের উপর ওয়াজিব।তারা এ দায়িত্ব পালন না করলে গোনাহগার হবে।
ونفقة البنت بالغة والابن بالغا زمنا أو أعمى على الأب خاصة به يفتى 
বালেগ মেয়ে এবং বালেগ পঙ্গু বা অন্ধ ছেলের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার উপর।এটার উপরই ফাতাওয়া।(আল-উকুদুদ-দুররিয়া-১/৮২) 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/2362

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আপনার ভাইয়ের থেকে এই হারাম টাকা আপনি আপনার প্রয়োজনীয় খরচ বাবদ নিতে পারবেন।

আপনার যদি কোন প্রয়োজনীয় খরচ না থাকে, সেক্ষেত্রে সেই হারাম টাকা আপনি নিতে পারবেননা।

(০২)
আপনি আপনার ভাই থেকে হারাম টাকা নিয়ে জামা কাপড় কেনা, ঔষধ কেনা, খাবার খরচ, ডাক্তার খরচ, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি জরুরী কাজে ব্যয় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে পূর্ব হতে যদি আপনার ভাই থেকে টাকা নিয়ে আপনি জমিয়ে রাখেন, সেক্ষেত্রে আপনি আপনার বিশেষ প্রয়োজনীয় কাজে সে টাকা ব্যয় করতে পারবেন।

বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত অন্য কোন খাতে সে হারাম টাকা ব্যয় করতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...