আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
16 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম
বিয়ের জন্য আমি ঘটকের কাছে ছবি দিতে নারাজ। যদিও আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। কারণ আমি জেনেছি ঘটক নিজে আমার জন্য নন মাহরাম আর ছবি যাদের কাছে দিবে সেই ফ্যামিলির নন মাহরাম পারসনও আমাকে দেখে নিতে পারে ছবির মাধ্যমে।
আমাকে ফ্যামিলির মানুষ প্রেশার দেয় একটা ভালো ছবি তুলতে যাতে তারা ঘটকের কাছে দিতে পারে। কারণ কোনো ঘটকই ছবি ছাড়া কাজ করতে চাই না। সবাই বলে আগে ছবি দিতে।
পরিবারকে নানা ভাবে বুঝিয়েছি এরকম করলে আমার পরদা লংঘন হবে, গোনাহ হবে। আমি ছবি তুলি না। দ্বীনের বুঝ আসার পর আগে যত ছবি তুলেছি আমার কাছে যা ছিল সব ডিলেট করে দিয়েছি।
কিন্তু আমার বোনের কাছে দুই একটা ছবি আছে আগে হোয়াটসআপে পাঠানো হত সেই গুলো থেকে হয়তোবা রিকভার করেছে আমি সঠিক জানি না।
মাঝে মাঝে আব্বুর হোয়াটসআপ চেক করে দেখি আমার আগের ছবি পাঠানো। এবং সেগুলো ঘটকের কাছে পাঠানো। আমার বোন পাঠায়। আমি এ নিয়ে বাসায় অনেকবার ঝামেলাও করেছি। কয়েক মাস পর দেখা যায় আবার  একি কাজ করেছে।
আমার খুব কষ্ট লাগে।  একদিন আম্মু আর ভাই এর সামনে কান্নাও করে দিয়েছিলাম।  একবার বোনের ফোন থেকে লুকিয়ে আমার ছবি ডিলেট করে দিয়েছিলাম।  তারপরও কয়মাস পরে দেখি আবার আব্বুর ফোনে সেই ছবি পাঠিয়েছে।  কোথায় কোথায় যে ছবি লুকিয়ে রেখেছে আল্লাহই ভালো জানেন। আমার বোনের যে দ্বীনের জ্ঞান নেই তা নয়।  সব জানে। তাদের একটাই কথা আমার বয়স হয়ে যাচ্ছে। ছবি না দিলে কোনো ঘটকই কাজ করতে চাই না।
যখন দেখি আমার ছবি দেওয়া হয়েছে আমার এত কষ্ট লাগে যে কি বলবো।
আমার অগোচরে ছবি দেওয়া হচ্ছে এতে করে কি আমার গোনাহ হচ্ছে? আমি চাইনা ছবি দিতে। বয়স বেড়ে গেলেও আমি ছবি দিতে চাই না।
আমি এখন কি করবো?

1 Answer

0 votes
ago by (679,920 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পূর্বে পাত্রিকে দেখা জায়েজ আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ 
تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে।
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫ মিশকাত ৩০৯৮।)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمُ الْمَرْأَةَ فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلٰى مَا يَدْعُوهُ إِلٰى نِكَاحِهَا فَلْيفْعَلْ»

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, আর যদি তার পক্ষে এমন কোনো অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা বিবাহের পক্ষে যথেষ্ট, তখন তা যেন দেখে নেয়। 

(আবূ দাঊদ ২০৮২, সহীহাহ্ ৯৯, আহমাদ ১৪৫৮৬, ইরওয়া ১৭৯১, সহীহ আল জামি‘ ৫০৬।)

★ইসলামে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে,ছবির মাধ্যমে নয় ।
কারণ- একেতো বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা, ব্যবহার ও
আদান-প্রদান শরীয়তে নিষিদ্ধ ।
তাছাড়া ছবিতে বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি যাচাই সম্ভব নয় ।
অধিকন্তু পাত্রের নিকট ছবি পাঠানোর দ্বারা বারবার তার জন্য বেগানা নারীকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।
যেটি নাজায়েজ। 
 
অথচ বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্র পাত্রীকে বারবার
দেখার বৈধতা নেই ।
তাছাড়াও এ ছবি পাত্র ব্যতীত অন্যকোন পুরুষও দেখতে পারে ।
অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা জায়িয নয় । এ সকল কারণে ছবির মাধ্যমে পাত্রী দেখা বা
পাত্রীর ছবি পাত্রের নিকট পাঠানো ইসলামের
দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
{সূত্রঃ রদ্দুল মুখতার, ৬ : ৩৭০}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঘটককে ছবি দেয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে আপনার হাজারো নিষেধ করা সত্ত্বেও আপনার পরিবার যেহেতু আপনার ছবি ঘটককে দিয়েছে,সুতরাং এক্ষেত্রে এর গুনাহ তাদের উপর বর্তাবে।

আপনার উপর নয়।

তদুপরি সতর্কতা মূলক মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে।(সূরা বাকারা-১৮৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...