আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
11 views
ago in সালাত(Prayer) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ
আমার একটা সমস্যা হচ্ছে। আমি একজন ২২ বছর বয়সী ছাত্রী।

হলে থাকা অবস্থায় আমার কখনো অলসতা আসে না বাসার মতো। হলে থাকলে আমি ইবাদত,ইলম শিক্ষা,কুরআন, তালিম,ডেইলি জিকির আযকার সবগুলো সম্পুর্ন ফোকাসড থাকতে পারি এবং সবকিছু সুন্দর ভাবে করা হয় । কখনো অলসতা আসে না। বা যদি কখনো আসেও আমি সেটা থেকে বেচে থেকে এক্টিভলি কাজগুলো করতে পড়ি।

কিন্তু বাসায় আসার পর আমার, বা ছুটিতে গেলে আমার প্রচন্ড রকমের অধপতন হয়,গাফেল হয়ে যাই। সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। আমার সালাত, কুরআন, ইলম শিক্ষা কিছুই ঠিকভাবে হয় না। এবার পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে আমি ছুটির ৬ টা দিন একেবারে সলাত আদায় করিনি কোনো অনুসোচনা নেই,ভয় লাগে না, মৃত্যুর চিন্তা আসে না।  মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় কিন্তু সেটাকে চেষ্টা অব্দি নিয়ে যেতে পারছি না (আল্লহুম মাগফিরলি)

উস্তাদ আমার এই পরিস্থিতি দেখে আমি নিজে খুবই হতাশ। আমি আসলে বুঝতে পারছি না রব কি আমার ক্বলবে মোহর মেরে দিয়েছেন?  আমি কি আর কখনো রবের প্রিয় বান্দাদের মতো হতে পারবো না?.হলে তালিম করা মেয়েটা আমার কি ভিষন অধপতন হয়ে গেলো, আমি কি ঈমান হারা হয়ে পরেছি? আমি জানি নামাজে অলসতা, নামাজ না পরার জন্য আমি সাস্তি পাবো তাও আমি নিজেকে টেনে নামাজের পাটিতে দার করাতে পড়ছি না।আমার জন্য কিছু করুন। আমাকে সাহায্য করুন।

এটা কেনো হচ্ছে? এটা কি বদনজরের কারনে হচ্ছে নাকি অন্য কোনো প্যারানরমাল সমস্যার কারনে হচ্ছে।উস্তাদ আমি এমন অলস ছিলাম না৷
আমি শয়তান এর ওসওয়াসায় পরে আমার ইলম অর্জনের জার্নি থেকেও ছিটকে পরেছি(IOM থেকে) আমি প্রচন্ড ভাবে আবার আমার আগের অবস্থায় ইনফ্যাক্ট আগের অবস্থা থেকেও উত্তম রুপে ফিরতে চাই রবের কাছে৷ ইলমের পথে হাটতে চাই।
আমাকে সাহায্য করুন উস্তাদ।

1 Answer

0 votes
ago by (679,740 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)

সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।

মাহরাম পুরুষ এর সাথে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।
এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন।

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

অনুরূপভাবে আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। 

★অধিকহারে আল্লাহর যিকির করুন। কেননা, দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার জীবনের এই সবগুলোর সমস্যার মূল কারণ হল, দ্বীনি ইলমের স্বল্পতা এবং দ্বীনি পরিবেশ দেখার দৈন্যতা।  আপনি দ্বীনি পরিবেশকে কখনো কাছ থেকে অবলোকন করেননি, দ্বীনদার কারো সাথে আপনার তেমন সখ্যতা কখনো গড়ে উঠেনি।  এত্থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হল, যেহেতু আপনি একজন নারী, তাই নারী হিসেবে একজন দ্বীনদার নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। প্রয়োজনে অনলাইনে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবেন। দ্বীনি কিতাবাদি পড়বেন। ইসলামের ইতিহাস ও ঈমানে প্রেরণা দেয়, এমন কিতাবাদি পড়বেন। আল্লাহ আপনাকে তাওফিক দান করুক।আমীন। এইভাবে আ'মল করে নিলে ধীরে ধীরে অলসতা কমে যাবে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 403 views
+3 votes
1 answer 1,977 views
...