আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
20 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
হাজবেন্ড বলেছে," এক তালাক দিলাম  and I mean it "
সেটা একান্তই রাগের সময় আমার জোরজবরদস্তিতে বলেছে। এখন ফতোয়াতে দেখলাম এক সাথে থাকতে হলে কিছু নিয়ম আছে।

১। সেই সময় থেকেই আমার সাথে থাকতে ইচ্ছুক। এখন কি করতে পারি?  লোক ডেকে এরপর তাদের সামনে বলা ব্যাপারটাতে নিজেদের সম্মান বাহিরে নষ্ট হবে আর চাই না এসব ঝামেলা কেউ জানুক।
2। হাজবেন্ড চায় তার মুখের কথার মাধ্যমে মিলে যেতে কিন্ত যদি ওয়াইফ না চায় তবে কি ৩ মাস ইদ্দতের মাধ্যমে বিবাহ শেষ হয়ে যাবে?
৩। ইদ্দতের পরে আবারও তাকেই বিবাহ করা হলে কি পূর্বের এক তালাক বহাল থাকবে, এরপর কোন তালাক দিতে তা ২য় ৩য় হিসেবে গন্য হবে নাকি ১নং তালাক হবে?

৪। যতদিন না সে মুখ থেকে সরাসরি বলে যে সে আমাকে আবারও গ্রহন করছে এবং আমিও তাকে মেনে নিচ্ছি ততদিনে কি নিজেদের মধ্যে কোন শারিরীক স্পর্শ হতে পারবেনা? এই ৩ মাসে কথা বললে বা কাছে আসলে কি ইদ্দত ভেংয়ে যাবে এবং বিবাহ বহাল থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (677,700 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/41771/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সুরা বাকারার ২২৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَأْخُذُوا مِمَّا آَتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَنْ يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (229)

"এ তালাক দু'বার, অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিসম্মতভাবে রাখবে অথবা সদয়ভাবে বিদায় দেবে। আর স্ত্রীকে দেয়া কোন কিছু ফেরৎ নেয়া তোমাদের পক্ষে উচিত নয়। তবে যদি তাদের উভয়ের আশংকা হয় যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তবে (সে অবস্থায়) স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে (স্বামী থেকে) নিষ্কৃতি পেতে চাইলে তাতে (স্বামী-স্ত্রীর) কারো কোনো পাপ নেই। এসব আল্লাহর সীমারেখা। কাজেই তা লংঘন কর না। যারা আল্লাহর (নির্দিষ্ট) সীমারেখা লংঘন করে তারাই অত্যাচারী।" (২:২২৯)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَلِكَ إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا

আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। (সূরা বাকারা ২২৮)

★কয়েকটি জিনিস এমন রয়েছে, যেগুলো ইচ্ছা, অনিচ্ছায় বা না বুঝে করা হলেও সর্বাবস্থায় সেগুলো কার্যকর হয়ে থাকে।

হাদিস শরিফে এসেছে,

ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২১৯৪; সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ১১৮৪]

★স্পষ্ট বাক্যে এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার পর স্বামীর অধিকার থাকে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। 

রাজআত দু’ভাবে হতে পারে–
১. কথার মাধ্যমে ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো। যেমন সরাসরি অথবা ফোনে অথবা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে একথা বলা যে, ‘তোমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলাম’। একথার মাধ্যমে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃবহাল হয়ে যাবে।
২. কর্মের মাধ্যমে ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো। অর্থাৎ স্ত্রীর সঙ্গে এমন কোনো আচরণ দেখানো যা একজন স্বামী একজন স্ত্রীর সঙ্গেই দেখাতে পারে। যেমন তাকে চুমো দেয়া কিংবা তার সঙ্গে সহবাস করে নেয়া ইত্যাদি। এজাতীয় কর্মের মাধ্যমেও তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃবহাল হয়ে যাবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামী যদি আপনাকে ফিরিয়ে নিতে চায়, সেক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই ফিরিয়ে নিতে চাইলে উপরে উল্লেখিত যে কোন পদ্ধতিতে আপনাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। 

আর যদি ইদ্দত কাল অতিবাহিত হওয়ার পর আপনাকে ফিরিয়ে নিতে চায়, সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ পরিয়ে নিতে হবে।

(০২)
স্বামী যদি ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই উপরে উল্লেখিত যে কোন পদ্ধতিতে আপনাকে ফিরিয়ে নেয়,সেক্ষেত্রে আপনি না চাইলেও ফিরিয়ে নেয়া হবে।
বৈবাহিক সম্পর্ক আবারো বহাল হয়ে যাবে।

(০৩)
ইদ্দতের পরে আবারও তাকেই বিবাহ করা হলে পূর্বের এক তালাক বহাল থাকবে, এরপর কোন তালাক দিলে তা ২য় ৩য় হিসেবে গন্য হবে।

(০৪)
শারীরিক ভাবে স্পর্শ বা শারীরিক সম্পর্ক করলেও ফিরিয়ে নেয়া হয়ে যাবে।

ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে স্ত্রীর সাথে স্বামী সুলভ দৈহিক আচরণ করলেই ফিরিয়ে নেয়া হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...