আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
310 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
edited by
১/আমার আম্মাজান এখন ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে যাচ্ছে,তো এখন ওনাকে ওনার ছবি(মাথা হতে গলা)দিতে হবে,ছবিটা হিজাব পরানো পুরো মাথা হতে গলা পর্যন্ত, তো এখন যদি কোন মাহরাম পুরুষ দেখলে ছবিটাকে ইসলামিক ব্যাংকের এতে কি গুণাহ্ হবে?

২/নামায পড়ার সময় জায়নামাজ বিছিয়ে পড়লে কি সওয়াব হয়?এটা কি ইসলামে জায়েজ আছে?থাকলে আমাকে সহীহ দলিল দিন?

৩/যদি মানুষের ৫/২০ফোটা রক্ত পরলে কি ওযু ভেঙ্গে যায়?কতটুকু পরলে ওযু ভাঙ্গা? পুঁজ বের হলে ও কি?আমাকে সহীহ দলিল দিন,তবে আমি রক্ত/পুজ বের হলে ওযু ভাঙ্গা কোন কিতাবুত সিত্তায় পায়নি!

৪/আপনাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার উপায় কি?হলে কি কি লাভ উপকারিতা আছে?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, 
প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।  

হাদিস শরীফে এসেছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)

ছবি তোলা হারাম কেন,জানুনঃ

প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সব ইমাম ও ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও সমকালীন মুফতিদের মতে হারাম। 

তবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট তৈরি বা এজাতীয় বিশেষ প্রয়োজনে ফটো তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা যায়। (ফিকহি মাকালাত; তকি উসমানী : ৪/১২৩)

অহেতুক ছবি তোলা জায়েজ নয়। কিন্তু বাধ্য হলে জায়েজ আছে। 

قَاعِدَة الضرورات تبيح الْمَحْظُورَات

তীব্র প্রয়োজন হারামকে হালাল করে দেয়। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭০] 

قَاعِدَة الضرورات تقدر بِقَدرِهَا

জরুরত তার সীমায় সীমিত থাকবে। [কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা নং-১৭১] 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রয়োজনের ভিত্তিতে  একাউন্ট খোলার জন্য ছবি তোলা তা জমা দেওয়া জায়েজ আছে।
,
উক্ত ছবি যদি কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ দেখে,তাতে আপনার মায়ের কোনো গুনাহ হবেনা।  
প্রয়োজনে কোনো গায়রে মাহরাম  পুরুষ যদি সেই ছবি দেখে,তাহলে তারও গুনাহ হবেনা,তবে কুনজর দিলে ছবি যে দেখেছে তার গুনাহ হবে।
,
(০২)
জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়লে বেশি ছওয়াব হবে,এমন কোনো বিধান ইসলামে নেই।
,
(০৩) 
রক্ত পুজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লেই অযু ভেঙ্গে যাবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে অযু ভেঙ্গে যাবে।     
,
অযু ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম একটি কারন হলো রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া-১/১০)
,
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ

শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَعَفَ، انْصَرَفَ فَتَوَضَّأَ

আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি.-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝরতো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অযু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক ১১০)

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُفْتِي الرَّجُلَ إِذَا رَعَفَ فِي الصَّلَاةِ، أَوْ ذَرَعَهُ قَيْءٌ، أَوْ وَجَدَ مَذِيًّا أَنْ يَنْصَرِفَ فَيَتَوَضَّأُ

আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি যদি কারো নামাযরত অবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, বা বমি হতো, বা মজি বের হতো তাহলে তাকে ফিরে গিয়ে অযু করার ফাতওয়া প্রদান করতেন। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ৩৬১০)
,
আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত,  রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ أَصَابَهُ قَيْءٌ أَوْ رُعَافٌ أَوْ قَلَسٌ أَوْ مَذْيٌ، فَلْيَنْصَرِفْ، فَلْيَتَوَضَّأْ
যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অযু করে নিবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ ১২২১)
,
(০৪)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ   
প্রয়োজনে সেখানে দেওয়া নাম্বারে ফোন দিতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 1,316 views
...