(০১)
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা বাক্বারা১৮৫)
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুনরায় উক্ত রোযা আদায় করতে হবে।
কাজা রোযার নিয়ত করে সেই রোযা গুলি আদায় করতে হবে,নফল রোযা এক্ষেতে যথেষ্ট নয়।
(০২)
রোযার কাফফারা হলোঃ
(ক)একজন গোলাম আযাদ করা,(খ)সম্ভব না হলে লাগাতার ৬০টি রোযা রাখা,(গ)সেটিও সম্ভব না হলে ৬০জন মিসকিনের প্রত্যেককে দুই বেলা খাবার দেওয়া।
বা একজন মিসকিনকে ৬০ দিন খাবার প্রদান।
প্রথম প্রকার তথা গোলাম প্রথা যেহেতু বর্তমানে নেই,তাই দ্বিতীয় প্রকার তথা দুই মাস রোযা-ই আপনাকে রাখতে হবে।হ্যা যদি শারিরিক অসুবিধার কারণে আপনি রোযা রাখতে অক্ষম হন,তখন সেক্ষেত্রে আপনি ষাটজন মিসকিনকে খানা খাওয়াতে পারবেন।এক্ষেত্রে আপনার জন্য অপশন রয়েছে,চাইলে আপনি ষাটজন মিসকিনকে একদিনে খাওয়াতে পারেন,বা একজন একজন করে ষাটদিনে ষাটজনকে খানা খাওয়াতে পারেন।অথবা সেই পরিমাণ টাকা গরীব-মিসকিনদেরকে সদকাহ করে ও দিতে পারেন{ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-১০/১৭০}
আরো জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্তি সামর্থ রাখেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।
,
আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া ।
যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»
অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
বিস্তারিত জানুনঃ
★যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার কাফফার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা কোনো এতিম খানায় দিয়ে দেওয়ার পর যদি উক্ত টাকা পুরোপুরি ভাবে দরিদ্রদের পিছনে ব্যায় করে,তাহলে কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।