বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালার ইরশাদ :
وَ سَارِعُوْۤا اِلٰی مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ جَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمٰوٰتُ وَ الْاَرْضُ اُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِیْنَ .
তোমরা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং এমন জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রশস্ততা হবে আকাশসমূহ ও জমিনসম। তা মুত্তাকিদের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৩
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
فَاسْتَبِقُوْا الْخَیْرٰتِ.
তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করো। -সূরা বাকারা (২) : ১৪৮
.
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ سَبْعًا هَلْ تنْظرُونَ إِلاّ إِلَى فَقْرٍ مُنْسٍ، أَوْ غِنًى مُطْغٍ، أَوْ مَرَضٍ مُفْسِدٍ، أَوْ هَرَمٍ مُفَنِّدٍ، أَوْ مَوْتٍ مُجْهِزٍ، أَوِ الدّجّالِ فَشَرّ غَائِبٍ يُنْتَظَرُ، أَوِ السّاعَةِ فَالسّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرّ.
সাতটি বিষয়ের পূর্বে তোমরা দ্রুত নেক আমল করো। তোমরা কি এমন দারিদ্র্যের অপেক্ষা করছ, যা তোমাদেরকে সবকিছু ভুলিয়ে দেবে? না ওই ঐশ্বর্যের, যা তোমাদেরকে দর্পিত বানিয়ে ছাড়বে? নাকি এমন রোগের, যার আঘাতে তোমরা জরাজীর্ণ হয়ে পড়বে? না সেই বার্ধক্যের, যা তোমাদেরকে অথর্ব করে ছাড়বে? নাকি মৃত্যুর, যা আকস্মিক এসে পড়বে? নাকি দাজ্জালের, অনুপস্থিত যা কিছুর জন্যে অপেক্ষা করা হচ্ছে, সে হচ্ছে সেসবের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট? না কিয়ামতের অপেক্ষা করছ, যে কিয়ামত কিনা সর্বাপেক্ষা বিভীষিকাময় ও সর্বাপেক্ষা তিক্ত? -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৩০৬
.
https://ifatwa.info/19110/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সা. দিয়েছেন। যেমন- আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯,সহীহ মুসলিম-২৯৯০)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/906
.
https://www.ifatwa.info/1855 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইমাম নববী রাহ বলেন,
" قَالَ الْعُلَمَاء : كَانَ الصَّوَاب فِي حَقّه إِجَابَتهَا لِأَنَّهُ كَانَ فِي صَلَاة نَفْل , وَالِاسْتِمْرَار فِيهَا تَطَوُّع لَا وَاجِب , وَإِجَابَة الْأُمّ وَبِرّهَا وَاجِب , وَعُقُوقهَا حَرَام , وَكَانَ يُمْكِنهُ أَنْ يُخَفِّف الصَّلَاة وَيُجِيبهَا ثُمَّ يَعُود لِصَلَاتِهِ ... " انتهى
উলামায়ে কেরাম বলেন,জুরাইজের উচিৎ ছিলো, মায়ের ডাকের জবাব দেয়া। কেননা উনিতো নফল সালাতে ছিলেন। নফল নামাযকে সম্পন্ন করা মুস্তাহাব। ওয়াজিব নয়। অন্যদিকে মায়ের ডাকে জবাব দেয়া এবং মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করা ওয়াজিব এবং মায়ের নাফরমানি করা হারাম।উনার জন্য সম্ভব ছিলো যে,নামাযকে সংক্ষেপণ করে মায়ের ডাকে জবাব দেয়া উনার জন্য সম্ভব ছিলো। অতঃপর ফিরে গিয়ে আবার নামাযকে সমাপ্ত করবেন। (আল মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২০/৩৪২)
.
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
.
নিয়ত ঠিক রেখে সওয়াব ও নেক আমলের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যাবে বা নিজের নেক আমল প্রকাশ করা যাবে।
তেমনী ভাবে নিজে সংশোধন হওয়ার নিমিত্তে কোনো মুফতির নিকট বা বড় কারোর কাছে কৃত পাপ সম্পর্কে অবগত করা যাবে। এতে কোনো গোনাহ হবে না। তবে এমনি এমনি কারো কাছে নিজের গোনাহকে প্রকাশ করা যাবে না।