আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
edited ago by
আমাদের পরিবার প্রথম থেকে দ্বীনি ছায়াতলে ছিলো না, তাই স্পেসিফিক কোনো মাজহাবও মানা হয়নি। আর যেহেতু জ্ঞান কম তাই যেকোনো একজন আলেমকে অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিই

এখানে দ্রষ্টব্য যে আমরা লা মাজহাবী নই, আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে তো আদৌ কোনো কিছু মাজহাবের কিনা বা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে কিনা সেটা বোঝা সম্ভব নয়।
আমাদেরসব ক্ষেত্রে আলেম এর উপর নির্ভর করতে হয়, এই যুগে যেহেতু ধর্ম বিকৃতি খুবই স্বাভাবিক হয়ে গেছে তাই আমরা বিশ্বাস করতে পারি বা ক্ষুদ্র জ্ঞানে আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্গো লেগেছে এমন কোনো আলেম কে অনুসরণ করি

প্রায় প্রথম থেকেই ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ এর ফতোয়া অনুসরণ করি, কারণ উনাকে আমাদের সকলেরই অত্যন্ত পছন্দ হয়।

কিন্তু অনেক মাসআলার ক্ষেত্রে উনি একাধিক মতের উল্লেখ করেন, যেখানে একাধিক মতই সহীহ। এমন সব ক্ষেত্রে উনি কোনটা মানতে হবে সেটা সাধারণত বলেন না

উদাহরণস্বরূপ: বীর্য পাক কি নাপাক সেই প্রশ্নের উত্তরে উনি বলেন, "হাদিসের আলোকে বেশিরভাগ ফকীহ পাক বলেছেন, ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) নাপাক বলেছেন"

আবার উনার মৃত্যুর কারণে অনলাইনে ইনাফ কনটেন্টও নাই

এমত অবস্থায় আমি শাইখ আহমাদুল্লাহ অথবা শাইখ আসিম আল হাকিম এর ফতোয়া অনুসরণ করি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ইনাদের কিছু ফতোয়া ভিন্ন হয়

এখন সে সময় কি যেকোনো একটা মানা যাবে?

নাকি এখন পুরোপুরি যেকোনো একজনকে ফলো করবো?

1 Answer

0 votes
ago by (674,310 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 
   
https://www.ifatwa.info/1936 নং ফাতাওয়ায় আমরা তাকলীদ সম্পর্কে বলেছিলাম যে, 
তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।

 তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ-
(১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা।
(২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1936

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুতরাং আপনাকে আমরা নির্দিষ্ট কোনো ব্যাক্তির নয় বরং নির্দিষ্ট একটি মাযহাব অনুসারন করার পরামর্শ দিচ্ছি।

আপনার এলাকায় যে মাযহাব প্রচলিত, 
আপনার জীবনে চলতে ফিরতে যে কোন সমস্যায় যেকোন মাসয়ালা জানতে আপনি যেনো সেই মাযহাবের মুফতী সাহেবদের কাছে যেতে পারেন,এমন মাযহাব মানার পরামর্শ থাকবে। 

অনির্দিষ্ট ভাবে একেক সময় একেক ইমামের মত মানার বৈধতা নেই।

এতে নফসের পূজা হবে। 

আপনি যে মাযহাব মানবেন,সমস্ত মাসয়ালাতেই নিজ মাযহাব অনুযায়ীই আমল করতে হবে।

অন্যথায় নফস ও খাহেশাতের পূজা হবে,যাহা হারাম। 
আল্লাহ তায়ালা সুরা সোয়াদের ২৬ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

 وَ لَا تَتَّبِعِ الۡهَوٰی فَیُضِلَّکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَضِلُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ لَهُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا نَسُوۡا یَوۡمَ الۡحِسَابِ ﴿۲۶﴾

আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। কারণ তারা হিসাব দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।

বিস্তারিত জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে কারো মতকে খেয়ালখুশি মত প্রাধান্য দেয়ার মানসিকতা ভ্রান্তিতা ছাড়া আর কিছু নয়।

যাকে ইচ্ছে তাকে মানা শরীয়তের অনুসরন নয় মন পূজা

যখন যে ইমামকে ইচ্ছে তাকে মানার প্রবণতা দ্বীনে শরীয়তের পাবন্দী হবে না, হবে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। মন যখন চাইবে ইমাম আবু হানীফার অনুসরণ করা, আবার মন যখন চাইবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতকে অনুসরন করা, কিংবা অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা এটা দ্বীনে শরীয়তের আনগত্ব হবে? না মন আর খাহেশাতের আনুগত্ব হবে?

যখন মন চাইল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুসরণ করে বলে দিলেন যে, মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না। আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্য যে, মহিলা স্পর্শ করলে অজু ভেঙ্গে যায়, মতটিকে ছেড়ে দিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।

আবার কিছুক্ষণ পর হাত কেটে গেল, এবার যখন দেখা গেল যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুপাতে অজু ভেঙ্গে গেছে, আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে অজু ভাঙ্গেনি। তখন সাথে সাথেই মাযহাব পাল্টে বলতে শুরু করে দিলেন যে, না, না আমি হানাফী না, আমি শাফেয়ী। তাই আমার অজু ভাঙ্গেনি।

এভাবে প্রতিটি মাসআলায় স্বীয় খাহেশাত অনুযায়ী মত পাল্টাতেই থাকলে এর নাম দ্বীন মানা? না মনপূজা?

এ কারণেই শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ “লাগামহীনভাবে যে মাযহাব যখন মনে চায়, সেটাকে মানা সুষ্পষ্ট হারাম ও অবৈধ। {ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/২৪১}

আরো জানুনঃ- 

মাযহাব কি 

মুজতাহিদ হল কুরআন সুন্নাহ, সাহাবাদের ফাতওয়া, কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের ঐক্যমত্বে এবং যুক্তির নিরিখে কুরআন সুন্নাহ থেকে মাসআলা বেরকারী গবেষক দলের নাম। যারা নিষ্ঠার সাথে বিভিন্ন মূলনীতি নির্ধারণ করে কুরআন সুন্নাহর বাহ্যিক বিপরীতমুখী মাসআলার মাঝে সামাঞ্জস্যতা এনেছেন। কুরআন সুন্নাহর একাধিক অর্থবোধক শব্দের নির্ধারিত পালনীয় অর্থকে নির্ধারিত করে দিয়েছেন। নতুন উদ্ভূত মাসআলার শরয়ী মূলনীতির আলোকে সমাধান বরে করেছেন। সেই সাথে নতুন নতুন মাসআলার কোন মূলনীতির আলোকে হুকুম আরোপিত হবে যার বিধান সরাসরি কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত নেই, সেই মূলনীতিও নির্ধারিত করেছেন। মূলত সেই গবেষক দলের নাম হল মুজতাহিদ। আর তাদের উদ্ভাবিত মূলনীতির আলোকে বের হওয়া মাসআলার নাম মাযহাব।

এবং কেন?

মাযহাব পালনের কথা এই জন্য বলা হয় যে, যেহেতু কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে আলেম খুবই নগণ্য। যারাও আছে তারা কুরআনে কারীমের কোন আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেছে, কোন আয়াতের হুকুম বহাল আছে, কোন আয়াত কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছে, কোন আয়াত কাদের উদ্দেশ্য করে নাজিল হয়েছে। কোন আয়াতাংশের প্রকৃত অর্থ কি? আরবী ব্যাকরণের কোন নীতিতে পড়েছে এই বাক্যটি? এই আয়াত বা হাদীসে কী কী অলংকারশাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে? ইত্যাদী সম্পর্কে বিজ্ঞ হন না। সেই সাথে কোনটি সহীহ হাদীস কোনটি দুর্বল হাদীস? কোন হাদীস কি কারণে দুর্বল? কোন হাদীস কী কারণে শক্তিশালী? হাদীসের বর্ণনাকারীদের জীবনী একদম নখদর্পনে থাকা আলেম এখন নাই। অথচ হাদীসের শক্তিশালী না হলে তার দ্বারা শরয়ী হুকুম প্রমাণিত হয়না।

এই সকল বিষয়ে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি পাওয়া যাওয়া দুস্কর। একেতু অধিকাংশ মানুষই আলেম না। আর মুষ্টিমেয় যারা আলেম তারাও উল্লেখিত সকল বিষয় সম্পর্কে প্রাজ্ঞ নয়। তাই আমাদের পক্ষে কুরআন সুন্নাহ থেকে সঠিক মাসআলা বের করা অসম্ভব।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (22 points)
সেক্ষেত্রে যখন ইচ্ছা যাকে না মেনে সম্পূর্ণ রূপে আসিম আল হাকিম এর অনুসরণ করা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...