আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7 views
ago in সালাত(Prayer) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম।
কেউ যদি কোন সফরের গন্তব্যে পৌছানোর পর ওযু করে যোহরের নামায নিয়ত করে পড়ে নেয়।  পরে দেখতে পায় যে যখন নামাযে দাড়ায় তখন আর ১ মিনিটের মত ওয়াক্ত ছিল। অর্থাৎ নামাযের অল্প সময় ওয়াক্তের মধ্যে ছিল।

১) এই নামায কি ওয়াক্তের মধ্যে পড়া হয়েছে ধরা হবে? নাকি কাযা হিসেবে ধরা হবে?

২) কাযা নামায পড়ার সময় কি আলাদা নিয়ত করতে হয়? ৩)যেহেতু এখানে সে সাধারণ নামাযের নিয়তেই আদায় করেছে, এখন যদি কাযা হয়ে যায় তাহলে সে তো আলাদাভাবে কাযার নিয়ত করেনি। তাহলে কি তার এই নামায হয়ে গেছে? নাকি পুনরায় কাযার নিয়ত করে আদায় করতে হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (83,490 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সালাতের মুস্তাহাব সময়

ফজরের সালাত পুরষদের জন্য ফর্সা করে পড়া মুস্তাহাব। আর মহিলাদের জন্যে একটু অন্ধকারে পড়া মুস্তাহাব। 

রাফি’ ইবনে খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা. ) বলেছেন,

"أَصْبِحُوا بِالصُّبْحِ فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لأُجُورِكُمْ ". أَوْ" أَعْظَمُ لِلأَجْر" .

ভোরের আলো প্রকাশিত হলে ফজর সালাত আদায় করবে। কারণ এতে তোমাদের জন্য অত্যাধিক সওয়াব বা অতি উত্তম বিনিময় রয়েছে।’’ আবু দাউদ, হাদীস নং - ৪২৪

ফজরের এই সময়টুকু দুই ভাগে ভাগ করা যায়। শরিয়তের পরিভাষায় প্রথম ভাগকে ‘গালাস’ আর দ্বিতীয় ভাগকে ‘ইসফার’ বলে। রাসূল সা.  অধিকাংশ সময় দ্বিতীয় অংশ তথা ইসফারে ফজরের সালাত আদায় করতেন। ফিকাহবিদগণ বলেন; প্রথম ভাগ তথা ‘গালাস’ এর সময় মহিলাদের আর দ্বিতীয় ভাগ তথা ‘ইসফার’ এর সময় পুরুষদের ফজর সালাত আদায় করা উত্তম। দুররুল মুখতার ০১/২৬৩, আল- বাহরুর রায়েক ০১/২৪৪

.

গ্রীষ্মকালে যোহরকে শীতল করে পড়া মুস্তাহাব

আবু হুরায়রা (রাঃ) ও ‘আবদুল্লাহ্ ইবনে 'উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আল্লাহ্র রাসূল (সা. ) বলেছেন,

إِذَا اشْتَدَّ الْحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ الصَّلاَةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ.

যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে সালাত আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ।’’ সহীহ বুখারী-হাদীস নং-৫৩৩

.

আসরকে দেরী করে পড়া মুস্তাহাব

আলী ইবনে শায়বান (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

قَدِمْنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ فَكَانَ يُؤَخِّرُ الْعَصْرَ مَا دَامَتِ الشَّمْسُ بَيْضَاءَ نَقِيَّةً .

একদা আমরা মদীনা হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে গেলাম। সে সময় তিনি সূর্যের রং উজ্জ্বল থাকা পর্যন্ত আসরের সালাত বিলম্ব করে আদায় করলেন।’’ আবু দাউদ ৪০৮

.

মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাড়াতাড়ি আসরের সালাত পড়া মুস্তাহাব

বুরায়দাহ আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমরা রাসুলুল্লাহ (সা. ) এর সাথে এক যুদ্ধে যোগদান করেছিলাম। তিনি সা.  বলেন,

بَكِّرُوا بِالصَّلاَةِ فِي الْيَوْمِ الْغَيْمِ فَإِنَّهُ مَنْ فَاتَتْهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ حَبِطَ عَمَلُهُ

তোমরা মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাড়াতাড়ি (প্রথম ওয়াক্তে) সালাত আদায় করবে। কারণ যার আসরের সালাত ছুটে যায় তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।’’ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৯৪

.

মাগরিবের সালাতের মুস্তাহাব সময়

মারসাদ ইবনে ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন,

لاَ تَزَالُ أُمَّتِي بِخَيْرٍأَوْ قَالَ عَلَى الْفِطْرَةِ مَا لَمْ يُؤَخِّرُوا الْمَغْرِبَ إِلَى أَنْ تَشْتَبِكَ النُّجُومُ

আমার উম্মাত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে অথবা মূল অবস্থায় থাকবে যতদিন তারা মাগরিবের সালাত আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করবে না।’’ আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮

.

এশার সালাতের মুস্তাহাব সময়

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবী (সা. ) বলেছেন,

لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُؤَخِّرُوا الْعِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ

যদি আমি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম; তাহলে তাদেরকে এশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধরাত পর্যন্ত দেরি করে আদায়ের নির্দেশ দিতাম।’’ সুনানে তিরমিযী, হাদীস ন!-১৬৭

.

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

.

১. উক্ত নামাজ আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং এখন আর কাজা করা লাগবে না। 

২. না, আপনি কাজা বলেও নিয়ত করতে পারেন। আবার আদায় করছি বলেও নিয়ত করতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।

৩. উক্ত নামাজ আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং এখন আর কাজা করা লাগবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...