আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
6 views
ago in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমার ২টা বিষয়ে প্রশ্ন,

১)আমি যিকির করি,প্রায় সময়ই দেখা যায় রান্নার কাজ,যানবাহনে থাকলে,ট্যুরে গেলে,গল্পের ফাকে এস্তেগফার করি।আমার প্রশ্ন হলো অনেক ক্ষেত্রেই আমার মনোযোগ যিকিরের দিকে থাকে না,কিন্তু মুখে আওরাতেই থাকি এতে কি আদবের খেলাফ হবে?

২)দরুদের ফজিলত শুনে আমি ছোট দরুদ পড়তাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম....এই ২টা।আমার এক ফ্রেন্ড বললো দরুদ পাঠের ফজিলত নাকি দরুদে ইব্রাহিম এর, যে এক লাইনের দরুদ সেটার নাকি শক্ত কোনো দলিল নেই।তাই কম হলেও যেন দরুদে ইব্রাহিম পড়ি।এরপর থেকে দেখা যায় আমার দরুদ পাঠের ফ্লো টা চলে গিয়েছে।বড় হওয়ায় আগের মতো যখন তখন পড়ে শেষ করতে পারি না।একটু এইটা ক্লিয়ার করে দিলে ভালো হতো।আমি কি ছোট দরুদপাঠ করলে সেম ফজিলত আশা করতে পারি?

৩)এশার নামাজের পর ২রাকাত নফল সালাত তাহাজ্জুদের নিয়তে পড়া যাবে?শেষ রাতে উঠে কেউ  তাহাজ্জুদ আদায়ে সক্ষম না হলে।

1 Answer

0 votes
ago by (673,620 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে আদবের খেলাফ না হলেও পূর্ণ আদব রক্ষার জন্য একাগ্র চিত্তে যিকির করার পরামর্শ থাকবে। 

রান্নার কাজ,যানবাহনে থাকলে,ট্যুরে গেলে,গল্পের ফাকে আপনার অভ্যাস মোতাবেক এস্তেগফার, যিকির চালিয়ে যাবেন, একাগ্র চিত্ত না হলেও কখনো যিকির বাদ দিবেননা।

এটাই আখেরাতে আপনার নাজাতের জন্য বড় সহায়ক হবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اِنَّ اللّٰہَ وَ مَلٰٓئِکَتَہٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ﴿۵۶﴾ 

নিশ্চয় আল্লাহ নবীর প্রশংসা করেন এবং তার ফেরেশতাগণ নবীর জন্য দোআ-ইসতেগফার করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর উপর সালাত পাঠ কর এবং তাকে যথাযথ ভাবে সালাম জানাও।
(সুরা আহযাব ৫৬)

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ عَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ فِي الْوَتْرِ قَالَ " اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ وَإِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ " .

মুহাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ) ... হাসান ইবনু আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এ বাক্যগুলো শিক্ষা দিয়েছেন বিতরের সালাতে (পড়বার জন্য) তিনি বলেছেন, তুমি বলঃ

اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ وَإِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ
(সুনানে নাসায়ী ১৭৪৯ ইফাঃ)

উপরোক্ত হাদীসের আলোকে অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে সব চেয়ে ছোট দরুদ হলোঃ-
صَلَّى اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ

সাল্লাল্লাহু আলান নাবিয়্যি মুহাম্মাদ।

কেউ কেউ নিম্নোক্ত তিনটি দরুদকে ছোট দরুদ বলেছেনঃ
(الف) اللّہم صلّ علی محمد وعلی آل محمد 

۔ (ب) وصلی اللہ علی النبي الأميّ ۔ 

(ج) وصلی اللہ علی النبيّ محمد۔ (زاد السعید، ص: ۱۳، ۲۲، ۳۲، ط: لاہور)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি ছোট দরুদ পাঠ করলেও ফজিলত পাবেন। তবে কোন দরুদের ব্যাপারে যদি হাদিসে বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত নির্দিষ্ট দরুদ পাঠ করারই পরামর্শ থাকবে।

এমতাবস্থায় নির্দিষ্ট দরুদ শরীফ পাঠ না করে অন্য কোন দরুদ পাঠ করলে সেম ফজিলত এর আশা করা যাবে না।

তদুপরি ফজিলত থেকে খালি নয়, ফজিলত অবশ্যই পাওয়া যাবে।

(০৩)
হ্যাঁ পড়া যাবে।

শরীয়তের বিধান হলো কাহারো যদি শেষ রাত্রিতে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকার দরুন ইশার নামাজের পড়েই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে নেয়,তবে সেও ছওয়াব পাবে।
তবে শেষ রাতেই তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।  
,
তাহাজ্জুদের মূল ওয়াক্ত হল, রাতের শেষ প্রহর। শেষ প্রহর বলতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থেকে ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তকে বোঝানো হয়েছে। হ্যাঁ, ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাযের পর দু রাকআত সুন্নত ও বিতরের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া জায়েয আছে। তবে পরিপূর্ণ তাহাজ্জুদের মর্যাদা পেতে হলে রাতের শেষ প্রহরে উঠে এই নামায আদায় করতে হবে।

আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ নামায করবে। (বুখারি ৯৯৮ মুসলিম ৭৫১)

জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَنْ خَافَ أَنْ لَا يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ ، وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ ، فَإِنَّ صَلَاةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ ، وَذَلِكَ أَفْضَلُ

যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিতির পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিতির সমাধা করে। কারণ, রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফেরেশতারা হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল। (মুসলিম ৭৫৫)

আরো জানুনঃ 

عن أیاس بن معاویة المزني رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ تعالیٰ علیہ وسلم قال: لا بد من صلاة اللیل، ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل(رواہ الطبراني في الکبیر، کذا في الترغیب والترہیب، کتاب النوافل / الترغیب في قیام اللیل رقم: ۹۳۳)،وروی الطبراني مرفوعاً: لابد من صلاة بلیل ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل، وہٰذا یفید أن ہٰذہ السنة تحصل بالتنفل بعد صلاة العشاء قبل النوم(رد المحتار۲:۴۶۷، ط: مکتبة زکریا دیوبند، تبیین الحقائق ۱:۲۶۲، ط: مکتبة زکریا دیوبند)

সারমর্মঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে রাতের (নফল) নামাজ খুবই জরুরি।      
যদিও বকরির দুধ দহনের সময় হোক। ঈশার নামাজের পরে নামাজ পড়া এটা রাত্রিতেই নামাজ পড়ার হুকুমে।
এখান থেকে ঘুমানোর পূর্বে ঈশার পর নফল পড়ার বিধান হাসিল হয়।   

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...