আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
edited ago by
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাসা থেকে আমার ভার্সিটির ফি বাদে আর কোন খরচ আমাকে দেয়া হয়না। আমি একজন মেয়ে।  আমার বোরকা, জুতা, ব্যাগ, সাবান স্নো, বই খাতা সব আমার নিজের কিনতে। সারাদিন ভার্সিটি থাকি কিন্ত বাসা থেকে টিফিন অব্দি নিতে দেয়না কিংবা টিফিন করার টাকাও দেয়না। আমি টিউশনি করাতাম তা দিয়ে চালাই এসব যেভাবে পারি। আমার মা তালিম করতে যায়, তালিমের ঘরে টাকা দেয়, টাকা জমিয়ে গয়না কেনে কিন্ত আমাকে ভাড়া টাকা দেয়না। আমি মাদ্রাসায় পড়ি IOM এ। সেই খরচও দেয়না।

রিসেন্টলি একটাই টিউশনি আছে আমার। কিন্ত আমি শুরু থেকেই এখানে পড়াতে চাইনা। স্টুডেন্ট এর মা আমার উপর রিতিমত জুলুম করে। সে আমাকে কোরবানিতে অব্দি ছুটি দিতে চাইনি জোর করে মাত্র ৩ দিন ছুটি পেয়েছি, যখন তখন ফোন দেয় যা ইচ্ছা আমাকে কথা শুনায়। তার ছেলে মেয়ে আমাকে যা ইচ্ছা বলে। ছেলেকে একবার পড়া বাড়তি দেইনি কারন সে পড়া পারেনি। ওই ছেলে বাসায় গিয়ে কান্না করে বলছে আমি অপমান করে বাসা থেকে বেড় করে দিছি। পরে ওদের মা মহিলা বাসায় এসে আমার যাচ্ছে তাই বলছে।আমার নামে তারা প্রচুর মিথ্যা বলে অপমান জনক কথা বলে, আমার বেতন নিয়ে সমস্যা করে, এমনকি আমার এক্সাম আমি কিছুদিন পড়া অফ দেব পরে আবার তা এক্সট্রা পরিয়ে দেব তারা তাও মানেনা। আমার নানা মারা গেছেন তার ৩য় দিন ফোন দিছে আমি কখন পড়াব।

অনেক অনেক ঝামেলা করে এরা। যখন তখন কল দেয়, বাসায় আসে যা ইচ্ছা কথা শুনায় মিথ্যা বানিয়ে আমার বাসায় বলে। আমি এই প্রেশার আর নিতে পারিনা, এর বাজে কথা আর শুনতে পারিনা। আমি পড়াতেই চাইনা। কিন্ত আমার বাবা মার কারনে পারিনা। তারা যা ইচ্ছে শুরু করছে, আমার বোনের কাছে অব্দি মনগড়া কথা বলতেছে যেন আমি পড়াই এর জন্য।

আমার কি উচিত পড়ানো আমার বাবা মার কথায় ?  যেখানে আমাকে খুব অপমান করা যায়, মিথ্যে বদনাম দেয়া হয়, বেতন ঠিক ভাবে দেয়না। আবার আমি অনেকের কাছে টাকা পাই, কিন্ত আমার মা কারোর কাছে আমার হয়ে টাকা চায়না এমনকি আমাকেও চাইতে দেয়না। উল্টো এওসব নিয়ে আমারই বদনাম করে। আমার কি উচিত আমার পাওনা টাকা মানুষ এর কাছে চাওয়া?
আমাকে একটু বলবেন প্লিজ মেয়েদের রিজিক কি আল্লাহ পিতার কাছ থেকে পাঠায় না?  আল্লাহ স্বামীর কাছ থেকে পাঠায় না?  আমার রিজিক কই? আমার সদ্য বিবাহ হয়েছে আর আমার স্বামীর চাকুরিও গেছে, আমার স্বামী আমাকে নিতে পারছেনা তার কাছে । আমার বাবা মাসে অন্তত ৪০-৪৫ হাজার ইনকাম করেন কিন্ত সে আমাকে প্র‍য়োজনিয় খরচই দেয় না আগে থেকেই। হয়ত আমার মাসে ৫০০ টাকাই লাগে এক্সট্রা, কিন্ত বাসা থেকে টিফিন দিলে আমার তাও লাগতনা।

আরেকটা কথা আমার মা প্রচুর মিথ্যা বলে, এমনকি মিথ্যা বলে আমার বোনের সাথে অব্দি আমাকে বাজিয়ে দেয়।
পিতা মাতার সাথে উহ অব্দি বলা জায়েজ নেই। এদের যতই বুঝাই ভালো করে বলি এরা সব দিক থেকে আমাকে এভাবে করে রাখছে। আমি মাঝে মাঝে ভাষা হারিয়ে ফেলি তেমন আজকেও জানিনা আম্র আর কি প্রশ্ন করা উচিত বা বলা উচিত।

1 Answer

0 votes
ago by (673,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/86082/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
স্বামীর উপর ওয়াজিব যে,সে তার স্ত্রীর ভরণপোষণ করবে।
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।(সূরা নিসা-৩৪)

لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا
বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে।(সূরা তালাক-৭)

হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত।
وعَنْ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : " قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ ؟ قَالَ : ( أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ ، وَلَا تَضْرِبْ الْوَجْهَ ، وَلَا تُقَبِّحْ ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ) 
 তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে।(আবু দাউদ-২১৪২,ইবনে মা'জা-১৮৫০)

স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায় না করলে এবং স্ত্রীকে সঙ্গ না দিলে,স্ত্রী যদি কাযী সাহেবের নিকট বিচার দায়ের করে,তাহলে কাযী সাহেব উক্ত বিবাহকে ভঙ্গ করে দেয়ার অধিকার রাখেন।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৩/১০০)


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
স্বামীর উপর হল, মধ্যম ধরণের খোরাকি স্ত্রীকে প্রদান করা।এবং প্রয়োজনিয় খরচাপাতি স্বামীর উপর ওয়াজিব। 
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)
নারীদের সাথে সদ্ভাবে ব্যবহার করতে হলে তাদেরকে নিয়মমাফিক অন্ন-বস্র-বাসস্থান দিতে হবে।

খোরাকি ব্যতিত বিলাসিতার ব্যবস্থা স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/990

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
বিবাহের আগ পর্যন্ত আপনার ভরণপোষণের দায়িত্ব ছিল আপনার বাবার উপর।

বিবাহের পর আপনার ভরণপোষণের দায়িত্ব আপনার স্বামীর উপর বর্তায়।

স্বাভাবিক ভাবে এভাবেই নারীদের রিজিক বন্টিত হয়ে থাকে। 

বিবাহের আগে আপনার বাবা আপনার ভরণ পোষণ সঠিক ভাবে আদায় না করে তিনি আপনার প্রতি অন্যায় করেছেন।

বিবাহের পরে আপনার স্বামীও আপনার ভরণপোষণ সঠিকভাবে আদায় না করে তিনি আপনার প্রতি অন্যায় করতেছেন।

এক্ষেত্রে আপনি নিজের প্রয়োজনীয় খরচের জন্য স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে মেয়েদের প্রাইভেট পড়াতে পারেন।

আপনি আপনার মা হতে দূরত্ব অবলম্বন করে চলতে পারেন। এক্ষেত্রে আশা করি উক্ত সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে দেখা-সাক্ষাৎ হলে শুধু সালাম বিনিময় করবেন।
অতিরিক্ত কথা আপাতত এড়িয়ে চলতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...