আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
ডাকসু, রাকসু, জাকসু, চাকসু এসব জায়গায় ভোটে অংশ নেয়া যাবে? ভোট দেয়া যাবে? মেয়েরা কি সেন্ট্রালি অংশ নিতে পারবে? মেয়েদের হল কেন্দ্রিক আলাদা ভোটের ব্যবস্থা বা পদ থাকে। এটাতে অংশ নেয়া যাবে? নেয়া গেলে কেন নেয়া যাবে? একটু বুঝিয়ে বলবেন।

1 Answer

0 votes
ago by (83,250 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/29571/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব ও হাকীকত জেনে নেওয়া দরকার। হযরত মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. এ সংক্রান্ত একটি পুস্তিকায় লিখেছেন যে, ইসলামের দৃষ্টিতে ভোট হচ্ছে তিনটি বিষয়ের সমষ্টি। ১.সাক্ষ্য প্রদান ২.সুপারিশ ও ৩.প্রতিনিধিত্বের অথরিটি প্রদান।

.

কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল সকলেরই জানা রয়েছে যে, শরীয়তে উপরোক্ত তিনটি বিষয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, কোনো ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা তৈরির এবং রাষ্ট্র্পরিচালনার জন্য প্রতিনিধিত্বের সনদ দেওয়ার মানে হচ্ছে প্রতিনিধিত্ব দানকারী (ভোটার) তার ভবিষ্যত সকল কার্যকলাপের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিচ্ছে। এমনিভাবে সুপারিশের বিষয়টিও প্রনিধানযোগ্য। কুরআনুল কারীমের ভাষায়,

مَّن يَشْفَعْ شَفَاعَةً حَسَنَةً يَكُن لَّهُ نَصِيبٌ مِّنْهَا ۖ وَمَن يَشْفَعْ شَفَاعَةً سَيِّئَةً يَكُن لَّهُ كِفْلٌ مِّنْهَا

‘যে ভালো সুপারিশ করবে সে তার নেকীর ভাগী হবে। আর যে মন্দ সুপারিশ করবে সেও মন্দের হিস্যা পাবে।’ (সূরা নিসা, আয়াত-৮৫)

.

ভোটের মধ্যে যে তিনটি (সাক্ষ্য প্রদান, সুপারিশ, প্রতিনিধিত্বের সনদপ্রদান) বিষয় রয়েছে এর মধ্যে ‘শাহাদত’ বা সাক্ষ্যের বিষয়টি মৌলিক। অর্থাৎ কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ হল, তার ব্যাপারে এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, লোকটি ভালো এবং যোগ্য। এখন যদি যথাযথ জায়গায় সীল দিয়ে এ সাক্ষ্য প্রদান করা হয় তবে সে হবে সত্য সাক্ষী অন্যথায় হবে মিথ্যা সাক্ষী। আর মিথ্যা সাক্ষ্য অনেক বড় কবীরা গুনাহ ও হারাম কাজ ভোট একটি মতামত, একটি রায় ও সাক্ষ্য বিশেষ। এটা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার নিকট গচ্ছিত আমানত। পবিত্র কোরআনে কারিমে এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ

‘হে ইমানদার বান্দারা! তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের সঙ্গে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করো না এবং জেনে-শুনে নিজেদের আমানতেরও খিয়ানত করো না।’ (সূরা আল আনফাল:২৭)

.

ভোট প্রদানের অর্থ হল- দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নতি, অগ্রগতি ও কল্যাণের লক্ষ্যে নিজের সমর্থন ও সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা দলকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মনোনীত করা। তবে এক্ষেত্রে ইসলামে কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। কারণ আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য সত্যের সাক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করো।(সূরা আত তলাক:২)

.

অন্যত্র আরো ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ইনসাফের সঙ্গে আল্লাহর জন্য সাক্ষী হয়ে দাঁড়াও। (সূরা আন নিসা:১৩৫)

.

যেহেতু ভোট একটি রায় বা সাক্ষ্য তাই এ ভোট প্রদানের ব্যাপারে প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন হতে হবে। কেননা, অন্যায় করা আর অন্যায়কে সমর্থন করা একই অপরাধ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কল্যাণকর কাজ এবং তাকওয়ার ব্যাপারে (একে অপরের) সহযোগিতা করো। আর গোনাহ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে সাহায্য-সহযোগিতা করো না। (সূরা আল মায়েদা:২)

.

ভোট প্রদান বা সমর্থনের মাধ্য দিয়ে একটি দেশ ও জাতির ভবিষ্যদ্ভাগ্য নির্মিত হয়। সুতরাং প্রকৃত সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান, মানবদরদী, সমাজসেবক খোদাভীরু প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে। অন্যথায় অসৎ, অযোগ্য, প্রতারক, আল্লাহবিমুখ প্রার্থী ক্ষমতার মসনদে সমাসীন হলে শুধু সে নয়- গোটা সমাজ, দেশ ও জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

.

অনেক সময় দেখা যায়, নির্বাচনের পূর্বে প্রার্থীরা জনগণকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে, প্রতিশ্রুতি শুনিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্ট করে থাকে। নির্বাচনের পরে কৃত প্রতিশ্রুতি পূরণে কোনো চেষ্টাই করতে দেখা যায় না। ফলে নাগরিকদের নানাবিধ বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। কোনো দায়িত্বশীল নেতার আচরণ এমন হতে পারে না। এমন নেতাকর্মীদেরকে সতর্ক করে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে দায়িত্বশীল মুসলিম জনপ্রতিনিধি, সে যদি তাদের সঙ্গে প্রতারণা এবং খিয়ানতকারী অবস্থায় মারা যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা তার জান্নাতে প্রবেশ করা হরাম করে দেবেন। ’ (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

.

কোন অযোগ্য ব্যক্তি যদি শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে অর্থকড়ি ব্যয় করে মানুষককে তোষামদ করে মেম্বারকমিশনার বা চেয়ারম্যান হতে চায় তাহলে তা তার জন্য জায়েয হবে না এবং এমন ব্যাক্তিকে ভোট দেওয়াও জায়েয নেই। তবে উপরে উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে যদি কেউ নির্বাচন করতে চায় তাহলে তা জায়েয আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...