আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায।

উস্তায, আল্লাহর ৩/৪ জন গাফেল বান্দি, যারা নামাজের ব্যাপারে উদাসীন, কুরআন তিলাওয়াত করেনা বললেই চলে, বিভিন্ন কবীরা গুনাহে লিপ্ত, দৈনন্দিন সুন্নাহের ব্যাপারে গাফেল (আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ক্ষমা করুন) কিন্তু তারা প্রতিনিয়ত তাদের এসব গুনাহের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত। তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দি হতে চায়। রাসুল সাঃ এর সুন্নাহ মীতাবেক নিজেদের জীবন সাজাতে চায়।

একদিন তারা আলোচনা করলো তাদের প্রতিনিয়ত করতে থাকা গাফেলতির ব্যাপারে এবং নিয়ত করলো তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য তারা একে অন্যকে দ্বীন পালনে সহযোগিতা করবে ও বিভিন্ন বিষয় রিমাইন্ডার দিবে। তারা সিদ্ধান্ত নিলো googl sheet এ কিছু দৈনন্দিন টাস্ক যেমন ৫ ওয়াক্ত সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, মিথ্যা না বলা, গীবত না করা, পর্দা করা, শর্টস/রিলস না দেখা, বিভিন্না যিকির আযকার, স্বামীর ও সন্তানদের হক আদায় ইত্যাদি বিষয় সমূহ দিয়ে টাস্ক সাজিয়ে নেয়ার। সেই টাস্ক তারা প্রতিদিন আমল করে এবং দিনশেষে শীটে ✅ বা ❌ চিহ্ন দেয়।
এবং তারা কে কতটুকু সফল বা ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিদিন একে অন্যের আপডেট শীটে দেখতে পাচ্ছে। নিয়মিত গাফেল হতে থাকলে ওই বিষয়ে একে অন্যকে মোটিভেট করা, শাস্তির কথা বা করতে পারলে আল্লাহ তায়ালা থেকে প্রতিদান পাওয়ার বিষয়টি স্মরন করিয়ে দেয়া হয়।৷
উল্লেখ্য যে, এভাবে Sheet এর মাধ্যমে তারা ৬ মাসের বেশি সময় ধরে আপডেট দিচ্ছে এবং আস্তে আস্তে আমল-আখলাকের উন্নতি হয়েছে আর তাই বিভিন্ন টাস্ক আরও এড হয়েছে মাশা আল্লাহ। এই শীটে আপডেট দেয়া বেশ কয়েকবার বিভিন্ন কারণে বন্ধ করা হয়েছিলো, পুনরায় তারা গাফেলতিতে লিপ্ত হয়ে যায়।

উস্তায, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতে বলেছেন। সেই সাথে ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করারও আদেশ দিয়েছেন। অপরদিকে এটাও বলেছেন যে, আমরা যেন আমাদের গুনাহকে গোপন রাখি তাহলে কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তায়ালাও তা গোপন রাখবেন ও বান্দাকে ক্ষমা করে দিবেন। একই ভাবে ভালো কাজগুলোও গোপন রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সবকিছু মিলে আমার মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরী হয়েছে উস্তায। অনুগ্রহ করে বুঝিয়ে দিলে উপকৃত হবো।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১. এভাবে একজন আরেকজন গুনাহগুলো দেখছে ভালোকাজগুলোও দেখছে এভাবে কি তাদের গুনাহ হবে উস্তায? বিশেষত ফরজ নামাজের বিষয়ে?

২. যদি গুনাহ হয় তাহলে কিভাবে তারা নিজেদের পরিশুদ্ধ করবে উস্তায? তারা একা একা আপডেট দিয়ে নিজেদের ইমপ্রুভ করতে পারছেনা বলেই সম্মিলিতভাবে এটা শুরু করেছে। অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে তারা এভাবে ধরে রাখতে পারেনা। এখানে তারা নিজেদের অনেক ইমপ্রুভ করেছে উস্তায।
৩. উল্লেখ করা জরুরী মনে করছি, তাদের নেক সাহচর্য পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাদের চারপাশ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে তারা দ্বীন পালনের চেষ্টা করে। যেখানেই যায় ফেতনার ছড়াছড়ি, আর আমল ইবাদতে তাদের গাফেলতি চলে আসে।
এ অবস্থায় তাদের করনীয় কি? তারা প্রত্যেকেই আইওএম আলিম কোর্সের শিক্ষার্থী।

1 Answer

0 votes
ago by (82,440 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/19110/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সা. দিয়েছেন। যেমন- আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯,সহীহ মুসলিম-২৯৯০)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/906

.

https://www.ifatwa.info/1855 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

ইমাম নববী রাহ বলেন,

" قَالَ الْعُلَمَاء : كَانَ الصَّوَاب فِي حَقّه إِجَابَتهَا لِأَنَّهُ كَانَ فِي صَلَاة نَفْل , وَالِاسْتِمْرَار فِيهَا تَطَوُّع لَا وَاجِب , وَإِجَابَة الْأُمّ وَبِرّهَا وَاجِب , وَعُقُوقهَا حَرَام , وَكَانَ يُمْكِنهُ أَنْ يُخَفِّف الصَّلَاة وَيُجِيبهَا ثُمَّ يَعُود لِصَلَاتِهِ ... " انتهى

উলামায়ে কেরাম বলেন,জুরাইজের উচিৎ ছিলো, মায়ের ডাকের জবাব দেয়া। কেননা উনিতো নফল সালাতে ছিলেন। নফল নামাযকে সম্পন্ন করা মুস্তাহাব। ওয়াজিব নয়। অন্যদিকে মায়ের ডাকে জবাব দেয়া এবং মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করা ওয়াজিব এবং মায়ের নাফরমানি করা হারাম।উনার জন্য সম্ভব ছিলো যে,নামাযকে সংক্ষেপণ করে মায়ের ডাকে জবাব দেয়া উনার জন্য সম্ভব ছিলো। অতঃপর ফিরে গিয়ে আবার নামাযকে সমাপ্ত করবেন। (আল মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২০/৩৪২)

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

.

নিজে সংশোধন হওয়ার নিমিত্তে কোনো মুফতির নিকট বা বন্ধু-বান্ধবের কাছে নিজের কৃত পাপ সম্পর্কে অবগত করা যাবে। এতে কোনো গোনাহ হবে না। তবে এমনি এমনি কারো কাছে নিজের গোনাহকে প্রকাশ করা যাবে না।

তেমনী ভাবে সওয়াবের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেও নিয়ত ঠিক রেখে তাতে অংশগ্রহণ করা যাবে বা প্রকাশ করা যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...