আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (18 points)
closed by
ঘটনা ১:

বাসা থেকে মসজিদ দূরত্ব ৫ মিনিট, & মসজিদ যাওয়ার পথে একটা  ছোট বাজার আছে।।  আবার আমার কিছু বন্ধুর বাসাও আছে।
প্রশ্ন হলো-- মাঝে মাঝে নামায পরতে যেতে ইচ্ছা  করে না, তবে ঐ সময় যদি আমার বাজারে বা বন্ধুর বাসায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় তখন আবার ঠিকই বাইরে যাই এবং এর পাশাপাশি নামায ও পরে আসি৷।  এখন এটা কি ঠিক হলো। মানে যেহেতু বাজারে যাচ্ছি তো নামায ও  পরে আসি, এই মনোভাব থাকে আমার। যেখানে আমার নামাযকে মেইন প্রায়োরিটি দেওয়া উচিত।  এই সমস্যার সমাধান কি?


২য় ঘটনা :যখন আমি কোনো ভালো কিছু শুরু করবো, তখন পাপের ব্যাপারে সিরিয়াস হয়ে যাই,পাপ থেকে দূরে থাকার চেসটা করি। যেমন,  সামনে পরীক্ষা থাকলে পাপ করার সময় মনে হয়, এই পাপের কারনে পরীক্ষায় খারাপ করতে পারি।তাই পাপ করা যাবে না।। আবার ব্যবসা করার সময় ভাবি এখন নজর,পাপ থেকে বাচলে রিযিকে বরকত হবে।তাই পাপ করি না, ইবাদত বাড়াই । আবার এগুলা থেকে দূরে থাকলে পাপ হয়ে যায়,আল্লাহ মাফ করুক।

  এখন এরকম ভাবা ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন? এই সমস্যা গুলো থেকে বের হবো কিভাবে?
closed

1 Answer

0 votes
by (680,310 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
https://ifatwa.info/19136/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মসজিদে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অনেক বেশি, তাই আমাদের মসজিদেই নামাজ পড়া উচিত।

মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ৪৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ ﴿۴۳﴾
আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর ও যাকাত দাও এবং রুকূ’কারীদের সাথে রুকূ কর।

এর মর্ম এই যে, সালাত আদায়কারীগণের সাথে সালাত আদায় কর। অর্থাৎ “রুকূ’কারীদের সাথে” শব্দদ্বয়ের দ্বারা জামা'আতের সাথে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَعْظَمَ النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلاَةِ أَبْعَدُهُمْ إِلَيْهَا مَمْشًى فَأَبْعَدُهُمْ وَالَّذِي يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنَ الَّذِي يُصَلِّيهَا ثُمَّ يَنَامُ " . وَفِي رِوَايَةِ أَبِي كُرَيْبٍ " حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ فِي جَمَاعَةٍ " .
আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আল আশ'আরী ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... আবূ মূসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাঁটার পথ (অর্থাৎ- ঘর) মসজিদ থেকে বেশী দূরে সে সলাতের অধিক সাওয়াব লাভের হাকদার। আর যে ব্যক্তি সলাতের জন্য অপেক্ষা করে ইমামের সাথে (জামা'আতে) সলাত আদায় করে সে ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশী সাওয়াবের হাকদার যে একাকী সলাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।

আবূ কুরায়ব-এর বর্ণনাতে "জামা'আতে ইমামের সাথে সলাত আদায় করে" কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। (মুসলিম শরীফ ১৩৯৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৩৮৫, ইসলামীক সেন্টার ১৩৯৭)

حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، - يَعْنِي ابْنَ عَمْرٍو - عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَطَهَّرَ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ مَشَى إِلَى بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ لِيَقْضِيَ فَرِيضَةً مِنْ فَرَائِضِ اللَّهِ كَانَتْ خَطْوَتَاهُ إِحْدَاهُمَا تَحُطُّ خَطِيئَةً وَالأُخْرَى تَرْفَعُ دَرَجَةً " .

ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বাড়ী থেকে পাক-পবিত্র হয়ে (ওযু করে) তারপর কোন ফারয (ফরয) সলাত আদায় করার জন্য হেঁটে আল্লাহর কোন ঘরে (মাসজিদে) যায় তার প্রতিটি পদক্ষেপের একটি পাপ ঝরে পড়ে এবং অপরটিতে মর্যাদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। (মুসলিম শরীফ ১৪০৭.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৩৯৩, ইসলামীক সেন্টার ১৪০৫)

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ قَالَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ وَرَاحَ أَعَدَّ اللهُ لَهُ نُزُلَهُ مِنَ الْجَنَّةِ كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ.

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ্ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন। (মুসলিম ৫/৫১, হাঃ ৬৬৯, আহমাদ ১০৬১৩) (বুখারী ৬৬২.আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬২৯)

বাসায় হোস্টেলে, মেসে,রুমে জামা'আত করলে যদিও জামা'আতের সাথে নামাজ আদায়ের ছওয়াব পাওয়া যাবে।
তবে বিনা ওযরে মসজিদে জামা'আতে শরিক না হয়ে এইভাবে ঘরে জামা'আতের অভ্যাস গড়ে তোলা জায়েজ নেই।  
এতে গুনাহ হবে।

হাদীস শরীফে বিনা ওযরে মসজিদে এসে জামা'আত ছেড়ে দেওয়ার উপর কঠিন হুমকি এসেছে।

 حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَبِي جَنَابٍ، عَنْ مَغْرَاءٍ الْعَبْدِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ سَمِعَ الْمُنَادِيَ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنَ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ " . قَالُوا وَمَا الْعُذْرُ قَالَ خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ " لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّى

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনা সত্ত্বেও কোনরূপ ওজর ছাড়া (বিনা কারণে) জামা‘আতে সলাত আদায়ে বিরত থাকে তার অন্যত্র (একাকী) সলাত কবুল হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভয়-ভীতি অথবা অসুস্থতা। 
আবূ দাঊদ ৫৫১, আল জামি‘ ৫৬৩৪, দারাকুত্বনী ১৫৫৭।
বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৩/৭৫), হাকিম (১/পৃঃ ২৪৫), দারাকুতনী (১/পৃঃ ৪২১), 

وسئل الحلواني عمن یجمع بأہلہ أحیاناً، ہل ینال ثواب الجماعۃ؟ فقال لا، ویکون بدعۃ ومکروہاً بلا عذر۔ (فتح القدیر ۱؍۳۴۵)
সারমর্মঃ
হালওয়ানি রহঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো যে কেহ তার পরিবার নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘরে জামা'আত করে,সে কি জামা'আতের ছওয়াব পাবে?
তিনি বলেছিলেনঃ না, এটি বিদ'আত ও মাকরুহ হবে।      
واختلف العلماء في إقامتہا في البیت، والأصح أنہا کإقامتہا في المسجد إلا في الأفضلیۃ۔ (شامي ۲؍۲۹۰ زکریا)
সারমর্মঃ
ঘরে জামা'আতের সাথে নামাজ পড়ার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
ছহীহ মত হলো এটি মসজিদে জামা'আতের ন্যায়।
তবে উত্তম হলো মসজিদেই নামাজ আদায় করা।    
   
فإذا ترکہا الکل مرۃ بلا عذر، أثموا، فتأمل۔ (شامي ۱؍۵۵۲ کراچي، ۲؍۲۸۸ زکریا)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বিনা ওযরে প্রত্যেকবার মসজিদের জামা'আত তরক করে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।    
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বাজারে যাওয়ার সময় মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়েরও তো আপনার নিয়ত থাকে।

সুতরাং এ ক্ষেত্রে ছওয়াব কম হবে না।
সমস্যা হবেনা।

তবে আপনার প্রতি পরামর্শ, অলসতাবশত কখনো বাসায় নামাজ পড়বেন না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবেই হোক মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত আদায় করবেন।

(০২)
নেককারদের মজলিসে বেশি উঠাবসা করবেন, আশা করি বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

গুনাহ করা যে সর্বদা হারাম এটি আপনার অন্তরে বসাতে হবে।

নিম্নোক্ত লিংকে কিছু আমল রয়েছে,সেই আমল গুলি করার পরামর্শ থাকবেঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...