আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
12 views
ago in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (34 points)
আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় শায়েখ। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।  মুফতী মুহাম্মদ আতাউর রহমান কাসেমী সাহেবের একটা কিতাব আদর্শ নারী ও নাজাতের পথ। এই কিতাবে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে আপনার কাছে জানতে চাই।

১. নবীজি সাঃ বলেছেন, আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরাইলের নবীদের সমান। এই হাদিসের নাম্বার আর কিতাবের নাম জানতে চাই।

২. নবী করিম সাঃ বলেছেন , আলেমগনের নিকট কিছু সময় বসা আল্লাহ্‌ তায়ালার নিকট হাজার বছর ইবাদত করা থেকে উত্তম। কিতাব ও হাদিসের নম্বর।

৩. নবীজি সাঃ বলেছেন, হে আলিমগণ , তোমাদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য  ইলমে দ্বীন দান করি নাই, যাও তোমাদেরকে মাফ করে দিলাম। কিতাব ও হাদিস নম্বর।

৪. হাসান বসরী রহঃ বলেন, আলিম গনের কলমের কালি ষীদের রক্তের সাথে ওজন করা হবে, আলিম গনের কলমের কালি শহীদগনের রক্তের  উপর প্রাধান্য লাভ করবে। কিতাব ও হাদিস নম্বর।

৫. হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, আলিম ব্যক্তির চেহারার দিকে নজর করাও একটা ইবাদত। কিতাব ও হাদিস নম্বর।

৬. নবীজি বলেন, কোনো হক্কানী আলেম / তালেবে ইলম যখন কোনো এলাকার উপর দিয়ে হেটে যায় আল্লাহ্‌ পাক ঐ এলাকার করবরের আজাব ৪০ দিনের জন্য মাফ করে দেন।

৭. নবীজি সাঃ বলেন, একজন মোহমুক্ত আলিমের দুই রাকাত নামাজ অসংখ্য ইবাদতকারীর যুগ যুগ ধরে সম্মিলিত  ইবাদতের চেয়েও উত্তম।
৮. নবীজি সাঃ বলেছেন, যে ব্যাক্তি আলেমকে সম্মান করলো , সে যেন ৭০ জন নবীকে সম্মান করলো। যে ব্যাক্তি তালেবে  ইলমকে সম্মান করলো সে যেন ৭০ জন শহীদকে সম্মান করলো। আর যে ব্যাক্তি তালেবে ইলম ও আলিমকে সম্মান করলো ও ভালোবাসলো তার জীবনে কোনো সগিরা গুনাহ লিখা হয় না।
৯. অজুর সময় কি প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় আলাদা আলাদা কোনো দোয়া আছে ?

১০. বে নামাজির কবরে ১৪ টি শাস্তি সম্পর্কে ।

১১. হযরত ফাতেমা রাঃ স্বামীর খেদমত করার কারণে নাকি জান্নাতের সরদারিনি হয়েছেন ?

আরও অনেক আছে। শায়েখের কাছে এগুলোর রেফারেন্স দেওয়ার দরখাস্ত রইলো। অনুগ্রহ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ্‌। যেন আমি এগুলোর সত্যতা মানুষের কাছে বলতে পারি। দোয়া চাই হযরতের কাছে। আল্লাহ্‌ আপনাদের ভালো রাখুন সুস্থ রাখুন। আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

1 Answer

0 votes
ago by (669,300 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে লোকমুখে প্রসিদ্ধ বর্ণনাটি হলোঃ
علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل
“আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরাইলের নবীদের মত।”

বিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ বলেন, এটি কোনও হাদিস নয় বরং হাদিসের নামে ভিত্তিহীন কথা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে চরম মিথ্যাচার। 

নিম্নে এ কথিত হাদিস সম্পর্কে সম্মানিত মুহাদ্দিসগণের অভিমত উপস্থাপন করা হল:

● যরকাশি এ হাদিস সম্পর্কে বলেন, لا يعرف له أصل “এর কোনও ভিত্তি জানা যায় না।” (আল লাআলি/১৬৭)
● আজলুনী বলেন, এটি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কথা। (কাশফুল খাফা ওয়া মুযীলিল ইলবাস)
● সু্য়ূতী বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (আদ দুরারুল মানসুরা)
● মোল্লা আলি কারী বলেন, قيل لا أصل له أو بأصله موضوع “বলা হয়েছে, এর কোন ভিত্তি নাই বা এর মূল হল বানোয়াট।” (আল আসরার আল মরফুআহ ২৪৭)
● যুরকানি বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (মুখতাসারুল মাকাসিদ/৬৫২)
● আলবানি বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (সিলসিলা যাঈফা/৪৬৬)

ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
النبي أفضل من الولي وهو أمر مقطوع به عقلاً ونقلاً، والصائر إلى خلافه كافر لأنه أمر معلوم من الشرع بالضرورة
“একজন নবী, আল্লাহর ওলি থেকেও শ্রেষ্ঠ। এটি বিবেক ও দলিলের আলোকে চূড়ান্ত কথা। এর বিপরীত মত পোষণকারী কাফের। কারণ এটি শরিয়তের এমন বিষয় যা জানা অপরিহার্য।” (সহিহ বুখারি ভাষ্য গ্রন্থ ফাতহুল বারী)

সুতরাং এই উম্মতের আলেমদেরকে বনি ইসরাইলে নবীদের সাথে তুলনা করা নবীদের শানে চরম বেয়াদবি।

আল্লাহর নবীগণ সমগ্র মানব জাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্বাচত সর্বোত্তম মানুষ। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি প্রাপ্ত-যে মর্যাদা আর কোন মানুষকে দেয়া হয় নি।

তবে এক কথা সঠিক যে, আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ (উত্তরসূরী)। যেমন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ، وَإِنَّ الْأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا، وَلَا دِرْهَمًا وَرَّثُوا الْعِلْمَ، فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ

“আলেমগণ নবীদের উত্তরসূরী। নবীগণ উত্তরাধিকারী সম্পদ হিসেবে দিনার-দিরহাম তথা অর্থ-সম্পদ রেখে যান না বরং তারা উত্তরাধিকারী সম্পদ হিসেবে রেখে গেছেন ইলম। যে সেটাকে গ্রহণ করল সে যেন পুর্ণ অংশকেই গ্রহণ করল।” (তিরমীজি-২৬৮২,আবু দাউদ-৩৬৪১, ইবনে মাজাহ-২২৩, মুসনাদে ইবনে আবি শায়বা-৪৭, মুসনাদে আহমাদ- ২১৭১৫)

নবীদের দায়িত্ব ছিল, আল্লাহর পক্ষ অবর্তীণ ওহীর জ্ঞানকে মানুষের মাঝে প্রচার করা। ওলামাগণ সেই ওহীর জ্ঞানেরই ধারক ও বাহক। এই দৃষ্টিতে তাদেরকে ‘নবীদের উত্তরাধিকারী’ বলা হয়েছে।

সুতরাং বানোয়াট ও হাদিসের নামে প্রচলিত মিথ্যা ও বানোয়াট হাদিস বর্ণনা ও প্রচারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। অন্যথায় তার পরিণত অত্যন্ত ভয়াবহ। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّداً فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ” (رواه البخاري)

“যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যা রোপ করল (মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করল), সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা করে নিল।” (সহিহ বুখারি, অনুচ্ছেদ: নবিদের হাদিস, হাদিস নং ৩২৭৪)

 عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার পক্ষ হতে (মানুষের কাছে) একটি বাক্য হলেও পৌঁছিয়ে দাও। বনী ইসরাঈল হতে শোনা কথা বলতে পারো, এতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে প্রস্তুত করে নেয়।
(বুখারী ৩৪৬১,মিশকাত ১৯৮)
(কিছু তথ্য সংগৃহীত) 

(০২)
এটি একটি প্রচলিত কথা,এর সঠিক ও নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ খুঁজে পাইনি। 

তবে, আলেমদের সান্নিধ্যে সময় কাটানো জ্ঞান ও সঠিক পথের নির্দেশনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা ঈমান বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য লাভে সহায়তা করে।  

(০৩)
হাদীসের কিতাবে এ ধরনের কোনো বর্ণনা খুজে পাইনি। 

(০৪)
আলেমের কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান’’ এ কথাটি হাদীস হিসেবে জনশ্রুতি থাকলেও হাদীস বিশারদগণের নির্ভরযোগ্য মতানুসারে এটি হাদীস নয়; বরং পরবর্তী কারো বাণী। ইমাম সাখাবী রাহ. ‘আল মাকাসিদুল হাসানাতে’ ( পৃ. ৪৪২, বর্ণনা: ১০০৫ ) এটিকে হাসান বসরী রাহ.-এর বাণী বলে উল্লেখ করেছেন।

শাওকানী রাহ.,যারকাশী রাহ.,তাহের পাটনী রাহ.-সহ আরো অনেক হাদীস বিশারদ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। 

( আল ফাওয়াইদুল মাজমূআ, খ. ১ পৃ. ২৮৭, বর্ণনা: ৫৩; আললাআলিল মানছূরাহ,  পৃ. ১০১, বর্ণনা: ১০; আল আসারুল মারফূআ ২০৭; কাশফুল খাফা, খ.২ পৃ.২০০; তাযকিরাতুল মাওযূআত খ. ২ পৃ. ৩৬৯; মিযানুল ইতিদাল খ.৩ পৃ. ৪৯৮।)

সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা উচিত নয়। (কিছু তথ্য সংগৃহীত) 

(০৫)
এক্ষেত্রে লোকমুখে প্রসিদ্ধ বর্ণনাটি হলোঃ

نَظْرَةٌ إِلَى وَجْهِ الْعَالِمِ أَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنْ عِبَادَةِ سِتِّيْنَ سَنَةً صِيَاماً وَقِيَاماً

‘‘আলিমের চেহারার দিকে তাকানো আল্লাহর কাছে ৬০ বছরের সিয়াম (রোযা) ও কিয়াম (তাহাজ্জুদের) ইবাদতের চেয়ে অধিক প্রিয়।’’

অন্য জাল হাদীসে বলা হয়েছে:

النَظَرُ إِلَى وَجْهِ الْعَالِمِ عِبَادَةٌ ً

‘‘আলিমের চেহারার দিকে তাকানো একটি এবাদত।’’

এ দুটি বাক্যের কোনটিই হাদীস নয়। মুহাদ্দিসগণ বাক্য দুটিকে মিথ্যা বা বানোয়াট হাদীস বলে উল্লেখ করেছেন।

(সাখাবী, আল-মাকাসিদ, ৪৪২পৃ, মোল্লা কারী, আল আসরার, ২৫৩ পৃ, যারকানী, মুখতাসারুল মাকাসিদ ১৯৬ পৃ।)

(০৬)
ان العالم والمتعلم اذا مرا على قرية، فإن الله تعالى يرفع العذاب عن مقبرة تلك القرية أربعين يوما

যখন কোন আলেম বা তালেবে ইলম কোন জনপদ অতিক্রম করে, তখন আল্লাহ তাআলা (তার বরকতে) চল্লিশ দিনের জন্য সে জনপদের কবরস্থানের আযাব মাফ করে দেন।

এ বর্ণণাটি যদিও সমাজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নামে প্রচলিত। কিন্তু এটি জাল ও ভিত্তিহীন।

সুতরাং এ কথাকে হাদীস হিসেবে বর্ণনা করা জায়েজ নেই।

হাফেজ জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহঃ এবং আল্লামা কাউকজী রহঃ বলেন, এর কোন ভিত্তি নেই। [আলমাসনূ-৬৫, কাশফুল খাফা-১ এর ২২১, আলমাওযূআতুল কুবরা-৪২, আল লুউলুউল মারসূ-২৬]

মোল্লা আলী কারী রহঃ বলেন, বলা হয় যে, এর কোন ভিত্তি নেই বা এটি জাল। [আলআসরারুল মারফূআ-১৪২]

(০৭)
হাদীসের কিতাবে নির্দিষ্ট আকারে উক্ত বর্ণনা খুজে পাইনি। 

(০৮)
হাদীসের কিতাবে নির্দিষ্ট আকারে উক্ত বর্ণনা খুজে পাইনি। 

(০৯)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(১০)
অনেক হাদীস একত্র করে এটি সংকলন করা হয়েছে।

নির্দিষ্ট আকারে হুবহু এই বাক্যে উক্ত বর্ণনা নির্ভরযোগ্য হাদীসের কোনো কিতাবে খুজে পাইনি। 

আল্লামা ইবনে হযর মক্কী (রহ.) এর বর্ণনা বলেও অনেকে উল্লেখ করেছেন।

(১১)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...