আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমি একটা অনলাইন শপ থেকে আঙ্গুরের বীজের তেল (Grapeseed oil) নিয়েছি,চুলের প্রব্লেমের জন্য।আমি নেওয়ার পরে বিভিন্ন জায়গায় গুগল করে দেখলাম এই তেল আঙ্গুর থেকে মদ বানানোর পরে যে বীজ থাকে সেই বীজ থেকে বানানো হয়।আবার সরাসরি মদ ছাড়াও বানানো হয়।আমি যেই ব্র‍্যান্ড নিয়েছি সেটাতে 100% Pure cold pressed grapeseed oil লেখা।বাট হালাল কিনা সেটা স্পেসিফিকভাবে উল্লেখ করা নেই।আমার প্রশ্ন হলো,

এই তেল আমি ব্যবহার করতে পারবো কিনা?

যদি আমার জন্য ব্যবহার করা না যায় তাহলে কি ফেলে দিব?নাকি এটা ইউজ করে আর কিনবো না?

দয়া করে উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (680,310 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبْهَاتِ استبرَأَ لدِينهِ وعِرْضِهِ ومَنْ وقَعَ فِي الشبُّهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيهِ أَلَا وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلَا وَإِنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُله أَلا وَهِيَ الْقَلْبُ.

নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘হালাল এবং হারাম সুস্পষ্ট, আর ঊভয়ের মধ্যে অনেক সন্দেহজনক বিষয় বা বস্তু আছে।(যেগুলি হালালের অন্তর্ভুক্ত না হারামের অন্তর্ভুক্ত,) সে সম্পর্কে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এরূপ ক্ষেত্রে যেই ব্যক্তি সন্দেহের বস্তুকে পরিহার করে চলবে, তার দ্বীন এবং আবরু-ইজ্জত, মান-সম্মান পাক-পবিত্র থাকবে। পক্ষান্তরে যেই ব্যক্তি সন্দেহের কাজে লিপ্ত হবে, সে অচিরেই হারামেও লিপ্ত হয়ে পড়বে। (ফলে তার দ্বীন এবং মান-সম্মান কলুষিত হবে।) যেমন যেই রাখাল তার পশুপালকে নিষিদ্ধ এলাকার সীমার ধারে চরাবে, খুব সম্ভব তার পশু নিষিদ্ধ এলাকার ভিতরেও মুখ ঢুকিয়ে দিবে। তোমরা ম্মরণ রেখো প্রত্যেক বাদশাই নিজ পশুপালের চারণভুমি (নিষিদ্ধ এলাকা) বানিয়ে রাখেন। তদ্রূপ (সকল বাদশাহর বাদশাহ) আল্লাহ তা’আলার চারণভূমি তাঁর হারাম বস্তুসমূহকে নির্ধারিত করে রেখেছেন। ‘মনে রেখো মানুষের দেহের ভিতরে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে, যা সঠিক থাকলে সমস্ত দেহই সঠিক থাকে। আর সেই অংশের বিকৃতি ঘটলে সম্পূর্ণ দেহেরই বিকৃতি ঘটে। সেই গোশতের টুকরাটি হল অন্তর’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)।

মেয়েদের প্রসাধন সামগ্রী,কসমেটিকস এ  এ্যালকোহল, হারাম কিছুর ব্যবহার করা হয় মর্মে শুনা যায়। এক্ষেত্রে মাসআলা হল,

যে সমস্ত এলকোহল খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হয়নি, তেমন বস্তু নেশা না আসা পর্যন্তের জন্য ব্যবহার জায়েজ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এবং ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ এর মতানুসারে। {ফাতহুল কাদীর-৮/১৬০, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৪১২, আল বাহরুর রায়েক-৮/২১৭-২১৮, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৯}
.
والمحرم منها أربعة ) أنواع الأول ( الخمر وهي النيء من ماء العنب إذا غلى واشتد وقذف بالزبد وحرم قليلها وكثيرها ) بالإجماع ( و ) الثاني ( الطلاء وهو العصير يطبخ حتى يذهب أقل من ثلثيه  وقيل ما طبخ من ماء العنب حتى ذهب ثلثاه وبقي ثلثه ) وصار مسكرا ( وهو الصواب ونجاسته كالخمر ) به يفتي ( و ) الثالث ( السكروهو النيء ماء الرطب )

( و ) الرابع ( نقيع الزبيب وهو النيء من ماء الزبيب ) بشرط أن يقذف بالزبد بعد الغليان ( والكل ) أي الثلاثة المذكورة ( حرام إذا غلي واشتد ) وإلا لم يحرم اتفاقا وإن قذف حرم اتفاقا وظاهر كلامه فبقية المتون أنه اختار ها هنا قولهما(تنوير الأبصار مع الدر المختار-  كتاب الأشربة -2/259

যার সারমর্ম হলো খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হলে,বা নেশা তৈরী কারী হলেই কেবল সেটা হারাম হবে।
অন্যথায় নয়। 

বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে, বর্তমানে এলকোহল খেজুর বা আঙ্গুর থেকে বানানো হয় না। তাই এটি ব্যবহার করা জায়েজ হবে। তবে যদি জানা যায় যে, এসব আঙ্গুর বা খেজুর থেকে বানানো হয়, তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ নয়।

আর হারাম কোন বস্তু যেমন শুকর ইত্যাদির যদি এমনভাবে রিফাইন করা হয় যে, এসবের কোন মৌলিকত্ব বাকি না থাকে, তাহলেও উক্ত বস্তু ব্যবহার করা জায়েজ আছে। আর যদি সেসব হারাম বস্তুর মৌলিকত্ব বাকি থাকে, তাহলে উক্ত বস্তু যাতে মিশ্রিত করা হবে, তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। {নিহায়াতুল মুহতাজ লির রামালি-৮/১২}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আঙ্গুর নিজেই হালাল ফল।
আঙ্গুরের বীজও স্বাভাবিকভাবে হালাল ও পবিত্র। বীজ থেকে তেল বের করে খাবারে ব্যবহার করা হলে, এতে কোনো নাজায়েয উপাদান বা মদজাতীয় রূপান্তর থাকে না।

যেহেতু এটি কোনো হারাম জিনিস থেকে প্রাপ্ত নয়, তাই মূলত এটি হালাল (জায়েজ)।

তবে যদি কোনো কোম্পানি প্রসেসিং বা সংরক্ষণের সময় এতে হারাম উপাদান (যেমন অ্যালকোহল-ভিত্তিক ফ্লেভার, ইমালসিফায়ার ইত্যাদি) মেশায়, তাহলে সেই ক্ষেত্রে আলাদা বিষয় হবে।

সেক্ষেত্রে উপকরণের লেবেল যাচাই করা উচিত।

★সুতরাং, আঙ্গুরের বীজের তৈল (Grapeseed oil) স্বাভাবিক অবস্থায় ব্যবহার করা জায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 287 views
...