ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
প্রকৃত সত্য এই যে,অনেক অবস্থায় বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করার চাইতে উত্তম কোন পথ থাকে না।দাসে পরিণত না করা হলে যৌক্তিক দিক দিয়ে তিন অবস্থাই সম্ভবপর--হয় হত্যা করা হবে,না হয় মুক্ত ছেড়ে দেয়া হবে,না হয় যাবজ্জীবন বন্দী করে রাখা হবে।প্রায়ই এই তিন অবস্থা উপযোগিতার পরিপন্থী হয়।কোন কোন বন্দী উন্নত প্রতিভার অধিকারী হয়ে থাকে,এ কারণে হত্যা করা সমীচীন হয় না।মুক্ত ছেড়ে দিলে অনেক ক্ষেত্রেই এমন আশংকা থাকে যে,স্বদেশে পৌছে সে মুসলমানদের জন্য পূনরায় বিপদ হয়ে দাঁড়াবে।এখন এই দুই অবস্থাই অবশিষ্ট থাকে।হয় তাকে যাবজ্জীবন বন্দী রেখে আজকালকার মত কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপে আটক রাখা,না হয় তাকে দাসে পরিণত করে তার প্রতিভাকে কাজে লাগানো এবং তার মানবিক অধিকারগুলোরও পুরোপুরি প্রদান করা।
চিন্তা করলে প্রত্যেকেই বুঝতে পারে যে,এতদুভয়ের মধ্যে উত্তম ব্যবস্থা কোনটি?
বিশেষতঃ দাসদের সম্পর্কে ইসলামের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার পরিপ্রেক্ষিতে এটা বোঝা আরও সহজ। দাসদের সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি রসূলে করীম সাঃ নিম্নরূপ ভাষায় ব্যক্ত করেছেনঃ
"তোমাদের দাসেরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। এতএব,যার ভাই তার অধীনস্থ হয়,সে যেন তাকে তাই খাওয়ায় যা সে নিজে খায়। তাই পরিধান করায় যা সে নিজে পরিধান করে। এবং তাকে যেন এমন কাজের ভার না দেয় যা তার জন্য অসহনীয় হয়। যদি এমন কাজের ভার দিতেই হয়, তবে যেন সে নিজেও তাকে সাহায্য করে।"(বুখারী -মুসলিম-আবু-দাউদ)
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের দিক দিয়ে ইসলাম দাসদেরকে যে মর্যাদা দান করেছে তা স্বাধীন ও মুক্ত মানুষের মর্যাদার প্রায় কাছাকাছি। সেমতে অন্যান্য জাতির বিপরীতে ইসলাম দাসদের শুধু বিবাহ করার অনুমিতই দেয়নি ;বরং মালিকদেরকে
وانكحوا الايامي منكم
আয়াতের মাধ্যমে জোর তাগিদও করেছে।এমনকি তারা স্বাধীন-মুক্ত নারীদেরকেও বিবাহ করতে পারে।তারা জেহাদেও অংশগ্রহণ করতে পারে এবং যুদ্ধলব্ধ সম্পদে তাদের অংশ স্বাধীন মুজাহিদের সমান।শত্রুকে যে কোন ধরণের নিরাপত্তা দানের ব্যাপারে তাদের উক্তিও তেমনি ধর্তব্য যেমন স্বাধীন ব্যক্তিবর্গের উক্তি।কোরআন ও হাদীসে তাদের সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশাবলী এত অধিক বর্ণিত হয়েছে যে,সেগুলোকে একত্রে সন্নিবেশিত করলে একটি স্বতন্ত্র পুস্তক হয়ে যেতে পারে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/5229
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাসপ্রথা মূলত যুদ্ধবন্ধিদেরকে হত্যা থেকে বাঁচানোর মোক্ষম একটি হাতিয়ার হিসেবে ইসলামে বিবেচিত। যুদ্ধবন্ধিদেরকে হত্যা থেকে থেকে বাঁচাতেই মূলত ইসলামের দাস প্রথার রুখসত দেয়া হয়েছে। আল্লাহর ইবাদত কোনো প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হলে কুরআন কোরআন দাস মুক্ত করে অপরাধমুক্ত হওয়ার বিধান রেখেছে। কাজেই ইসলামও চায়, দাসপ্রথা হ্রাস পাক।
যেহেতু দাসদের অধিকার আদায় পূর্বক তাদের কাছ থেকে ফায়দা গ্রহণ কুরআন অনুমোদিত, তাবেয়ী এবং তাবে তাবেয়ী এবং আওলিয়াগণ দাস গ্রহণ করেছিলেন।
(২)
হাত তালি দেয়া জায়েজ নয় দু’টি কারণে। যথা-
১-
এটি একটি অযথা কাজ। আর অযথা কাজ ইসলামে জায়েজ নয়।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ [٣١:٦
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। {সূরা লুকমান-৬}
فى رد المحتار- ( قوله وكره كل لهو ) أي كل لعب وعبث فالثلاثة بمعنى واحد كما في شرح التأويلات والإطلاق شامل لنفس الفعل ، واستماعه كالرقص والسخرية والتصفيق وضرب الأوتار من الطنبور والبربط والرباب والقانون والمزمار والصنج والبوق ، فإنها كلها مكروهة لأنها زي الكفار ، واستماع ضرب الدف والمزمار وغير ذلك حرام وإن سمع بغتة يكون معذورا ويجب أن يجتهد أن لا يسمع قهستاني (رد المحتار- كتاب الحظر والإباحة، فصل في البيع-6/395
২-
এটি মূলত ইহুদী খৃষ্টানদের আনন্দ প্রকাশ পদ্ধতি। আর বিধর্মীদের পদ্ধতি অনুসরণ জায়েজ নয়। তাই একাজ পরিত্যাজ্য। {কেফায়াতুল মুফতী-৯/১১৬}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৪০৩৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদিস নং-২৯৬৬, মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-২০৯০৮৬)(আহলে হক মিডিয়া)
শিষ দেয়া মুসলমানদের জন্য কখনো কাম্য নয়,বরং শিষ দেয়া মূলত কাফিরদের বৈশিষ্ট্য। সে হিসেবে শিষ দেয়া মাকরুহ হওয়ার মতামত যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে।তাই বলা যায় যে,অযথা শিষ দেয়া মাকরুহ।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3276
(৩)
ডেলা কুলুপ নিয়ে হাটাহাটি করার বিষয়টা রাসূলুল্লাহ সাঃ করেছেন বা নির্দেশ দিয়েছেন বলে কোনো হাদীসের স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়নি।
তবে একতা সত্য যে উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন একজন মু'মিনের ঈমানী দায়িত্ব।নতুবা কবরে শাস্তি হবে।নামায তেলাওয়াত ইত্যাদি পবিত্রতার উপরই নির্ভরশীল তাই পবিত্রতা ব্যতীত কোনো ইবাদতই গ্রহণযোগ্য হবে না।
পেশাবের পর ফোটা ফোটা করে যাদের পেশাব আসার সম্ভাবনা নেই,তাদের জন্য ডেলা কুলুপ ব্যবহার করে হাটাহাটি করার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।তবে পেশাবের পর যাদের ফোটা আসার সম্ভাবনা রয়েছে যেমন বয়স্ক, অসুস্থ তাদের জন্য অবশ্যই ডেলা-কুলুপ ব্যবহার করতে হবে।
লক্ষণীয় যে,ডেলা কুলুপ নিয়ে প্রয়োজন হলে একাকি কোনো গোপন স্থানে হাটাহাটি করাই শ্রেয়।কেননা তা দৃষ্টি কটু।এজন্য যাদের পেশাবের পর ফোটা আসার সম্ভাবনা রয়েছে,তারা যেন পেশাবের জন্য একাকী স্থানকেই বেছে নেয়।
(৪)
ব্যবসা হিসেবে কালারফুল খিমার+ জিলবাব কাজ করা ছাড়া বিক্রি করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/242
(৫)
আপনি যতটুকু পারবেন,ততটুকুই শিখাবেন। কখনো নিজের কাছে ভূল মনে হলে, সেই বিষয়টা সম্পর্কে কনফার্ম না হয়ে শিখাতে যাবেন না।
(৬) পাজামায় লিকুরিয়ার স্রাব লেগে থাকলে কি মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে বা বাচ্চাদের পড়ানো যাবে। তবে এক দিরহামের বেশী হলে ঐ কাপড় দ্বারা নামায পড়াতে পারবেন না।
(৮) যদি কোনো কারণে ঐ সব সুদী ব্যাংক সমূহে কারেন্ট একান্ট খুলা দুস্কর হয়ে যায়,তাহলে সুদ গ্রহণ না করার শর্তে তাতে সেভিংস একাউন্ট খুলে টাকা রাখা যাবে।উলামায়ে কেরাম এ অনুমোদন দিয়েছেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/753