আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আমি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা করেছি। আমার বাবা মায়ের হিসেব অনুযায়ী ৪ বছরে পড়া থাকা খাওয়া সহ আমার পিছে ১৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যদিও আমি স্কুল, কলেজে সরকারিতেই পড়েছি। তবুও প্রাইভেট, রিক্সাভাড়া এসব তো গিয়েছেই৷ কিন্তু আমার ভাই বরাবরই ভালো স্টুডেন্ট ছিলো, স্কুলে থাকতে বৃত্তি পাইতো, তারপর সেভেনে ক্যাডেটে চলে গেলো। তারপর ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে নৌবাহিনীতে চলে গেলো৷ এখন সে লেভেনেন্ট কমান্ডার, ভালো পজিশনে আছে। টাকা পয়সার কমতি নেই আলহামদুলিল্লাহ, মানে অনেক কোটিপতি এমন না, কিন্তু যেরকম টাকা হলে মানুষ নিজেকে নিয়ে চিন্তা করা লাগে না সেরকম টাকা আছে আলহামদুলিল্লাহ।  আমার বাবা, মা দুইজনই ভালো পজিশনে চাকরি করে রিসেন্টলি রিটায়ার্ড করেছেন। আমাদের একটা ৩ তালা বাড়ি, একটা প্লট, একটা ফ্ল্যাট, একটা নির্মানাধীন ফ্ল্যাট আছে। স্বাভাবিক ভাবেই মেয়ে পালনে তুলনামূলক খরচ হয় বেশি। ইসলাম কি সম্পত্তি ভাগের ক্ষেত্রে এমন কোনো নিয়ম মানতে বলেছে যেখানে যেই সন্তানের পড়ালেখায় বেশি টাকা খরচ হয়েছে তাকে শরীয়ত অনুযায়ী ভাগ করে যেই টাকা পাওনা তার চেয়ে কম দিবে? অথবা যত টাকা খরচ হইসে সেটা হিসাব করে কেটে রাখা? ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ হিসাব করা, কথা শুনানো এগুলো শরীয়ত কতোটুকু সাপোর্ট করে?
বলা বাহুল্য, আমরা ভাই বোনের মধ্যে দুইজনের কেউই এই সম্পত্তির প্রত্যাশি অথবা আমাদের টাকা পয়সার ঘাটতি তাই খুব প্রয়োজন এমন না। আমাকে যদি আগে বলা হতো প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়াইলে সেটার টাকা পাওনা সম্পত্তি থেকে কেটে রাখা হবে সেটা আমি আগেই মাথায় রাখতাম। আর এমন নিয়ম থাকলে শুধু পড়ালেখা হিসাব হবে কেনো? জন্মের পর থেকে যা যা খরচ হয়েছে সবই কি হিসাব হওয়ার কথা না? আমাকে প্লিজ শরীয়ত কি বলে এটা বলুন। আমি কথাটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি। আমাকে সম্পত্তি না দিলেও আমার চাহিদা নাই। কিন্তু এই পড়ালেখার খরচ কেটে রাখবে বলাটা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে।

1 Answer

0 votes
by (83,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/46515/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তির সাথে ক্রমান্বয়ে চারটি হক রয়েছে।

,

১. অপচয় ও কার্পণ্য ছাড়া তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা।

২. অবশিষ্ট সম্পদ থেকে তা ঋণ পরিশোধ করা। (যদি ঋণ থাকে)

৩. ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সমুদয় সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দ্বারা অসিয়ত পূরণ করা। (যদি শরীয়ত সম্মত অসিয়ত করে থাকে।)

৪. তারপর অবশিষ্ট সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে ফারায়েজ মোতাবেক বন্টন করা হবে।

হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ

ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ

নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।

অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়। তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

,

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

,

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

কুরআন-হাদীসে কোথাও এমন বর্ণনা নেই। ভার্সিটিতে পড়াইলে সেটার টাকা পাওনা সম্পত্তি থেকে কেটে রাখা হবে। এমন কথা কোথাও নেই। সুতরাং এসব বলে কাউকে কষ্ট দেওয়া বা সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না। তবে অবশ্যই আপনার ভাই যা সম্পদ পাবে ইসলামিক অনুযায়ী আপনি তার অর্ধেক সম্পদ পাবেন। এটাই আল্লাহ তায়ালার বিধান। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...