আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited ago by
আসসালামু আলাইকুম।  আমার ১ম স্বামী র সাথে বিয়ের ১ বছর পর খোলা তালাকের পর তিন হায়েজ পার না করেই ২য় বিয়ে করি। কারন আমি বা আমার ২য় স্বামী আমরা কেউ জানতামনা তালাকের পর ২য় বিয়ে করতে ইদ্দত পালন করতে হয়। ইদ্দত শব্দ টাই আমাদের কাছে অপরিচিত ছিল তখন।

অনেক বছর হয়ে গেছে। এখন আমাদের সন্তানও আছে।এর মধ্যে আমার ২য় স্বামী আমাকে রাগ করে তিন তালাক দেয়। সেটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে তালাকের পর বিয়ে করতে তিন হায়েজ ইদ্দত লাগে এটা জানতে পারি। এবং কিছু আলেমদের কাছে জানি যে তিন হায়েজ ইদ্দত পালন না করায় আমাদের বিয়েটাই সহীহ ছিলনা। তাই তালাকও হয়নি।
তারপর একজন মুফতি হুজুরের পরামর্শ মতে আমরা মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেব এর মাধ্যমে দুজন স্বাক্ষী সামনে রেখে নতুন মোহর ধার্য করে বিয়ে করি।

তারপরও মনে সন্দেহ থাকায় স্হানীয় এক মাদ্রাসা য় যাই। সেখানেও তারা বলে বিয়ে সহীহ ছিলনা। যেহেতু না জেনে করেছি তাই ফাসেদ বিয়ে হওয়ায় আমাকে এখন বর্তমান স্বামী কেই আবার পুনরায় বিয়ে করতে তিন হায়েজ ইদ্দত লাগবে।

এখন আমার প্রশ্ন
১.ইদ্দত ছাড়া বিয়ে টা কি সহীহ  ছিল?

২.তারপর তিন তালাক টা কি তালাক ধরা হবে?

৩.মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেবের মাধ্যমে আমাদের বিয়ে টা কি
সঠিক ছিল?

৪. অন্যান্য অনেক মুফতি হুজুর বলেছেন বর্তমান ২য় স্বামী কে পুনরায় বিয়ে করতে নতুন ইদ্দত লাগবে না। তবে অন্য ৩য় পুরুষ কে বিয়ে করতে লাগবে।

কিন্তু স্হানীয় মাদ্রাসা য় যে বললেন বর্তমান ২য় স্বামী কে পুনরায় বিয়ে করতে হলে নতুন করে তিন হায়েজ ইদ্দত পালন করা লাগবে। কোনটা সঠিক?

এখন আমার করণীয় কি অনুগ্রহ করে আমাকে অতি শীঘ্রই পরামর্শ দিয়ে বাধিত করবেন।

1 Answer

0 votes
ago by (668,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইদ্দত একটি ওয়াজিব বিধান। এটি লঙ্ঘন করা কবিরা গুনাহ। 

স্বামী যেখানেই থাক, যদি সে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে থাকে তাহলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। (ফাতাওয়া উসমানী ২/৪৫১)

ইদ্দত শুরু হয়, তালাক সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী সময় থেকে তিন হায়েয পরিমাণ। 
তিন হায়েয শেষ হওয়ার আগে অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয হবে না। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ

আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। (সূরা বাকারা-২২৮)

وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ [٢:٢٣٤] 

আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে।

وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا عَرَّضْتُم بِهِ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَاءِ أَوْ أَكْنَنتُمْ فِي أَنفُسِكُمْ ۚ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ سَتَذْكُرُونَهُنَّ وَلَٰكِن لَّا تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا إِلَّا أَن تَقُولُوا قَوْلًا مَّعْرُوفًا ۚ وَلَا تَعْزِمُوا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتَّىٰ يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي أَنفُسِكُمْ فَاحْذَرُوهُ ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ [٢:٢٣٥] 

আর যদি তোমরা আকার ইঙ্গিতে সে নারীর বিয়ের পয়গাম দাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই, আল্লাহ জানেন যে, তোমরা অবশ্যই সে নারীদের কথা উল্লেখ করবে। কিন্তু তাদের সাথে বিয়ে করার গোপন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখো না। অবশ্য শরীয়তের নির্ধারিত প্রথা অনুযায়ী কোন কথা সাব্যস্ত করে নেবে। আর নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্তি পর্যায়ে না যাওয়া অবধি বিয়ে করার কোন ইচ্ছা করো না। আর একথা জেনে রেখো যে, তোমাদের মনে যে কথা রয়েছে, আল্লাহর তা জানা আছে। কাজেই তাঁকে ভয় করতে থাক। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ ক্ষমাকারী ও ধৈর্য্যশীল। {সূরা বাকারা-২৩৪-২৩৫}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
১.ইদ্দত ছাড়া বিয়েটা সহীহ  ছিলনা।
এক্ষেত্রে আবার বিয়ে পড়িয়ে নিতে হবে।  এবং অতীতের জন্য আল্লাহর কাছে খালিছ দিলে তওবাহ করতে হবে। 

২.তারপর সেই ব্যাক্তি যে তিন তালাক দিয়েছিলো,সেই তালাক ধরা হবেনা।
সে আপনার গায়রে মাহরাম ছিলো। তার সাথে সংসার আপনার পুরোপুরি যেনা হয়েছে।

৩.মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেবের মাধ্যমে আপনাদের বিয়ে যদি শরীয়ত সম্মত পন্থায় হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সেই বিবাহ সঠিক হয়েছে।

৪. আপনার যেহেতু দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ হয়নি তালাকও শুদ্ধ হয়নি, সুতরাং এক্ষেত্রে তো কোন ইদ্দত আপনার পালন করতে হবেনা। 

বর্তমান ২য় স্বামী কে পুনরায় বিয়ে করতে নতুন ইদ্দত লাগবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (1 point)
edited ago by
জাজাকাল্লাহ খয়রন। 
মাদ্রাসা য় আমাকে বলা হইছে যেহেতু ইদ্দত সম্পর্কে ধারনা ছিলনা, না জেনে করছি।  নিজেদের বৈধ স্বামী স্ত্রী ভেবেই থেকেছি এতোদিন।তাই এটা যেনা হয়নি পুরোপুরি। তবে ফাসেদ বিয়ে হয়েছে।না জেনে ফাসেদ বিয়েতে নাকি ইদ্দত লাগে।
একটা প্রশ্ন ছিল মনে,  আমার ক্ষেত্রে কি ২য় স্বামী না হয়ে অন্য কোন ৩ য় পুরুষকে বিয়ে করতে হলে ইদ্দত লাগতো? 
ago by (1 point)
হুজুর কমেন্ট টার উত্তর দিলে পেরেশানি মুক্ত হতে পারতাম ইনশাআল্লাহ্।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...