আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
তালাক সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর ৪ মাজহাব থেকে যে কোনো একটি থেকে নেওয়ার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাই। অর্থাৎ কেউ হানাফি অনুসারী কিন্তু দেখা গেলো অন্য ২/১টি মাজহাবের আলেম হানাফির বিপরীত জবাব দিয়েছেন। ওইটা পছন্দ হলে গ্রহণ করার সুযোগ আছে কিনা যেহেতু উভয়েই আল কোরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকেই জবাব দিয়েছেন। আর যেহেতু তালাক একটি স্পর্শকাতর বিষয়।

1 Answer

0 votes
by (677,850 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

এটি জায়েজ নেই।
এতে নফসের পূজা হবে। 

আপনি যে মাযহাব মানেন,সমস্ত মাসয়ালাতেই নিজ মাযহাব অনুযায়ীই আমল করতে হবে।

অন্যথায় নফস ও খাহেশাতের পূজা হবে,যাহা হারাম। 
আল্লাহ তায়ালা সুরা সোয়াদের ২৬ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

 وَ لَا تَتَّبِعِ الۡهَوٰی فَیُضِلَّکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَضِلُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ لَهُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا نَسُوۡا یَوۡمَ الۡحِسَابِ ﴿۲۶﴾

আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। কারণ তারা হিসাব দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।

বিস্তারিত জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে কারো মতকে খেয়ালখুশি মত প্রাধান্য দেয়ার মানসিকতা ভ্রান্তিতা ছাড়া আর কিছু নয়।

যাকে ইচ্ছে তাকে মানা শরীয়তের অনুসরন নয় মন পূজা

যখন যে ইমামকে ইচ্ছে তাকে মানার প্রবণতা দ্বীনে শরীয়তের পাবন্দী হবে না, হবে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। মন যখন চাইবে ইমাম আবু হানীফার অনুসরণ করা, আবার মন যখন চাইবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতকে অনুসরন করা, কিংবা অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা এটা দ্বীনে শরীয়তের আনগত্ব হবে? না মন আর খাহেশাতের আনুগত্ব হবে?

যখন মন চাইল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুসরণ করে বলে দিলেন যে, মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না। আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্য যে, মহিলা স্পর্শ করলে অজু ভেঙ্গে যায়, মতটিকে ছেড়ে দিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।

আবার কিছুক্ষণ পর হাত কেটে গেল, এবার যখন দেখা গেল যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুপাতে অজু ভেঙ্গে গেছে, আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে অজু ভাঙ্গেনি। তখন সাথে সাথেই মাযহাব পাল্টে বলতে শুরু করে দিলেন যে, না, না আমি হানাফী না, আমি শাফেয়ী। তাই আমার অজু ভাঙ্গেনি।

এভাবে প্রতিটি মাসআলায় স্বীয় খাহেশাত অনুযায়ী মত পাল্টাতেই থাকলে এর নাম দ্বীন মানা? না মনপূজা?

এ কারণেই শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ “লাগামহীনভাবে যে মাযহাব যখন মনে চায়, সেটাকে মানা সুষ্পষ্ট হারাম ও অবৈধ। {ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/২৪১}

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/3549/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
https://www.ifatwa.info/1936 নং ফাতাওয়ায় আমরা তাকলীদ সম্পর্কে বলেছিলাম যে, 
তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।

 তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ-
(১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা।
(২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1936

মাযহাব মানার আবশ্যকীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
এই বিষয়ে তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়।

তালাক সম্পর্কিত একই প্রশ্নে যদি হানাফি মাজহাবের অনুসারী একাধিক আলেম ও ফতওয়া বিভাগ থেকে ভিন্ন ফতওয়া আসে তাহলে নিজের কাছে যেটা ভালো মনে হয়, ইতিবাচক  মনে হয় সেটা গ্রহণ করা কি নফসের বা প্রবৃত্তির পূজা হবে না? 


না হলে এই ক্ষেত্রে ফতওয়া গ্রহণের মূলনীতি কী? 
by (677,850 points)
এক্ষেত্রে যেই ফতোয়ায় স্পষ্ট দলিল পাবেন,সেই ফতোয়া মানার পরামর্শ থাকবে। 
by (10 points)
দলিল ছাড়া তো কেউ ফতওয়া দেয় না। আর সাধারণ মানুষ দলিল কোনটার ওজন কেমন কীভাবে বুঝবে। যেমন ফতওয়ার জবাব আসলো, মসজিদুল আকবর থেকে, পটিয়া থেকে, মারকাজুদ দাওয়াহ থেকে তখন কি প্রতিষ্ঠান যেটা শীর্ষ সেটা প্রাইওরিটি থাকবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...