আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
11 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম

শায়খ দয়া করে প্রশ্নটির উত্তর দিবেন,যুবকটি মৃত্যু আর পরকাল নিয়ে একসময় উদাসীন ছিলো কিন্তু এখন পরিপূর্ণভাবে নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করে,সবসময় মৃত্যুর টেনশন কাজ করে তার মনের মধ্যে।।

 

মানুষের জিনিসপত্র-মালের হক নষ্ট করলে সেই হক আদায় করা সম্ভব হয়,গীবত করলে গীবতের কাফফারা দেওয়া যায়।কিন্তু এমন কিছু হক আছে যেগুলো আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব না,মাফ চাওয়াটাও সম্ভব না।মাফ চাইতে গেলে গোমড় ফাঁস হবে,পাপ প্রকাশিত হয়ে যাবে যেহেতু তার অধিকারটা গোপনে নষ্ট হয়েছে।যেমনঃ একটি যুবক একজন বিবাহিত মহিলার সাথে শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে  যিনা(শারীরিক সম্পর্ক) করে ফেলেছে(এখানে দুইজনেরই সম্মতিতে হয়েছে),তাহলে তো সেই নারীর স্বামীর অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে,,এখন সেই হক আদায় করা তো কোনোভাবেই সম্ভব না,মাফ চাওয়াও সম্ভব না,মাফ চাইতে গেলেও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে,একটি সংসার নষ্ট হবে,সবকিছু প্রকাশিত হয়ে যাবে।।।তাহলে কী এই গুণাহ থেকে আর মাফ পাওয়া সম্ভব নাহ।।কীভাবে মাফ পাওয়া যাবে??

যুবকটি পরিপূর্ণ ইমানদার রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে

বিঃদ্রঃ এখন দুইজন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে,কারো সাথে কারোর কোনো প্রকারের যোগাযোগ নেই ,সেই নারী তার স্বামীর সংসার করছে ঠিকমতো,যুবকটি অনেক টেনশনে আছে,কোনো ইবাদতেই মন দিতে পারছেনা

1 Answer

0 votes
ago by (666,510 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

قُلْ يَا عِبادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعاً إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

‘বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর সীমালংঘন করেছে, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করেন। তিনি তো অতি ক্ষমাশীল বড় মেহেরবান।’
 (সূরা যুমার : ৫৩)
,
وَالَّذِينَ إِذا فَعَلُوا فاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ اللَّهُ

‘এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে- আর আল্লাহ ছাড়া আর কেইবা আছে, যে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? ’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৬)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ما أصر من استغفر 

অর্থাৎ যে বান্দা গোনাহ থেকে ইসতিগফার করতে থাকে সে গোনাহের উপর জমে আছে বলে গণ্য হবে না। (আবু দাউদ : ১৫১৪)

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
,  
আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত যুবক অনুতপ্ত হয়ে খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করবে,নিজের জন্যেও ক্ষমা চাইবে, পাশাপাশি ওই মহিলার স্বামীর জন্যেও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে এবং আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হবে যে জীবনেও আর এ ধরনের গুনাহের ধারকাছেও সে যাবে না,সেক্ষেত্রে তার তওবা কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...