আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম,
USA  আমার এখানে ৫ মিনিট হাটা দুরত্বে একটা মসজিদ আছে আলহামদুলিল্লাহ। পুরা শহরজুরে এই একটি মাত্র মসজিদ। মুসলিম ভাইয়েরা অনেক দুর থেকে নামাজ পড়তে আসে (ঈশার নামাজে বিশেষ করে, অন্য নামাজে মুসল্লী হয় না)। মসজিদের আশেপাশে অনেক মুসলিম থাকার পরও তারা জামাতে আসে না। নিয়মিত জামাতের জন্য আশপাশ থেকে ৩-৪ জন আসে। কিন্তু এশার জামাত বড় হয় (১০-১২ জন)। কয়েকমাস আগে মালয়েশিয়া থেকে জামাত আসে এবং তারা একটা আমল চালু করে  দিয়ে যায় সেটা হচ্ছে যে কোনো এক ওয়াক্তের নামাজ শেষে তালিম করা (হাদিস থেকে)। যেহেতু এশার নামাজে মুসল্লী বেশী হয়, সবাই ঠিক করেছে এশার নামাজের পর প্রতিদিন একটা করে হাদিস একজন পড়ে শোনাবে রিয়াদুস সালেহীন থেকে।

আলহামদুলিল্লাহ সবই ঠিক আছে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা এশার ফরজ নামাজের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে হাদিসের বইটা থেকে পড়া শুরু করে। আমি বুঝতে পারছি না এটা ঠিক হচ্ছে কিনা। কারন আমি দেশে থাকতে দেখতাম বাদ যোহর আমলের বই থেকে তালিম হতো, কিন্তু সেটা একেবারে যোহর নামাজের শেষে (সুন্নাহ শেষ করে)। আমি এখন যেটা করতেছি সেটা হচ্ছে, এশার সালাম ফিরানোর পর ২ রাকাত সুন্নাহ পড়ে ফেলি, তারপর তাদের সাথে যোগদান করি। মাঝে মাঝে আমার সুন্নাতের মাঝেই তাদের তালিম শেষ হয়ে যায় যদি হাদিসটি ছোটো হয়।

শায়খের কাছে আমার প্রশ্ন, আমার কি করা উচিত? আমি কি এশার ফরয সালাম ফিরানোর পরই কি তাদের সাথে বসবো? নাকি সুন্নাহ টা আগে পড়ে ফেলবো,  তারপর বসবো? অনেক সময় তাদের হাদিস পড়ার কারনে মনোযোগ নষ্ট হয় নামাজের ভিতর।

1 Answer

0 votes
by (677,700 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/56805/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো,যেই ফরজ নামাজের পর সুন্নাত নামাজ আছে,সেই ফরজ নামাজের সালাম ফিরানোর পর দেড়ি করা ছাড়াই সুন্নাত আদায় করা মাসনুন।
অবশ্য 
 «اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَام تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجلَال وَالْإِكْرَام» 
বা এই জাতীয় দোয়া পড়ার সুযোগ রয়েছে।
এর থেকে বেশি দেড়ি করা মাকরুহে তানযিহি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ لَمْ يَقْعُدْ إِلَّا مِقْدَارَ مَا يَقُولُ: «اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجلَال وَالْإِكْرَام» . رَوَاهُ مُسلم

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ফরজ) সালাতের সালাম ফিরাবার পর বসতেননা তবে শুধু এ দু‘আটি শেষ করার পরিমাণ সময় অপেক্ষা করতেন, ‘‘আল্ল-হুম্মা আন্তাস সালা-ম, ওয়া মিনকাস্ সালা-ম, তাবা-রকতা ইয়া- যালজালা-লি ওয়াল ইকর-ম’’ (অর্থা- হে আল্লাহ! তুমিই শান্তির আঁধার। তোমার পক্ষ থেকেই শান্তি। তুমি বারাকাতময় হে মহামহিম ও মহা সম্মানিত)।
( সহীহ : মুসলিম ৫৯২, মিশকাত৷ ৯৬০)

یکرہ أخیر السنة إلا بقدر اللہم أنت السلام الخ قال الشامي: لأن السنة من لواحق الفریضة واتوابعہا ومکمّلاتہا فلم تکن أجنبیة عنہا․ (الدر المختار: ۱/ ۲۴۶، ط: زکریا دیوبند)
সারমর্মঃ-
সুন্নাত আদায় দেড়ি করা মাকরুহ,তবে আল্ল-হুম্মা আন্তাস সালা-ম, (শেষ পর্যন্ত)  পড়া সমপরিমাণ সময় দেড়ি করা যাবে।
কেননা সুন্নাত ফরজ নামাজের তাবে'।

وأما ما ورد من الأحادیث في الأذکار عقیب الصلاة فلا دلالة فیہ علی الإتیان قبل السنة؛ بل یحمل علی الإتیان بہا بعدہا (الدر المختار: ۲/ ۲۴۶، ط: زکریا دیوبند)
সারমর্মঃ-
হাদীস শরীফে ফরজ নামাজের পর যে সমস্ত যিকির আযকারের কথা উল্লেখ রয়েছে,সুন্নাতের আগে এসব যিকির আযকার করার কোনো ইঙ্গিত নেই।
বরং এগুলো সুন্নাত নামাজ পড়ার পর পড়তে উদ্ভুদ্ধ করে।

সুতরাং ফরজ নামাজের পর(ফজর এবং আসর ব্যতীত) আয়াতুল কুরসি,তাসবীহে ফাতেমী,মাসনুন দুয়াসমূহ  সুন্নত নামাজ পড়ার পরে পড়তে হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এভাবে ইশার ফরজ নামাজের পর সুন্নাত নামাজ আদায়ের আগে তা'লিম করা ঠিক হচ্ছে না।

কেননা এ ক্ষেত্রে অনেকে মাসবুক হয়,অর্থাৎ  ইমামের সাথে এক রাকাত বা দুই রাকাত পরে এসে শরিক হয়, তো তারা ইমাম সাহেবের সালাম ফিরানোর পর তাদের ছুটে যাওয়া নামাজ আদায় করতে দাঁড়িয়ে যায়, আবার অনেকে সুন্নাত আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তো তাদের নামাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়।

তালিম করা তো এটা নফল কাজ,আর তাদের নামাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি করা নাজায়েজ।

সুতরাং ফরজ নামাজের পর মুসল্লিদের সুন্নাত ও অন্যান্য নামাজ শেষ হলে তারপর তালিম করতে হবে।

অন্যথায় আপনাদের মসজিদে ফরজ নামাজের আগে একদম আগে তালিমের ব্যবস্থা করতে পারেন।

একদম নামাজের আগ মুহূর্তে তালীম করবেন অথবা ফজর বা আসর নামাজের পর তালিম করবেন।
কেননা ঐ নামাজ গুলোর পর কোন সুন্নাত নামাজ নেই।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি ইশার ফরজ নামাজ আদায় করে সুন্নাত ও অন্যান্য নামাজ আদায় করে তা'লিমে বসবেন।

এক্ষেত্রে তা'লিম শেষ হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে সমস্যা নেই। তা'লিম শোনা তো ফরজ/ওয়াজিব নয়।

পরামর্শ থাকবে, আপনি তালিমের কিতাব ক্রয় করে বাসায় পরিবারের সকলকে নিয়ে সেখান হতে প্রত্যাহ হাদীস পড়বেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...