আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
538 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (35 points)
আসসালামু আলাইকুম, শায়েখ,
আমি এর আগে ১টা প্রশ্ন করেছিলাম সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করা নিয়ে। যেহেতু সেখান মহিলা teacher এর কোটা বেশি থাকে সেহেতু আমার মনে হচ্ছে সেখানে আমার জন্য পর্দা maintain করে চাকরি করাটা নিরাপদ। আর যেহেতু সরকারি চাকরি। আর আমাদের দেশের বাড়িও গ্রামে। সেখানে পর্দা হিজাব maintain করেই ইনশাআল্লাহ চাকরি করতে পারবোা। শুধু পুরুষ teacher দের সঙ্গে প্রয়োজনের অধিক কথা না বলাই শ্রেয় হবে। আপনি কি তাহলে বলছেন যে  বাবা মাকে বেশি কসট না দিয়ে আমার প্রাইমারির জন্য try করা উচিত। তখন আমার বিয়ের জন্যও আমার relatives রা আমার মতোই ছেলে খোজার চেষ্টা করবে। আমি তখন বলব নেককার দীনদার  ব্যক্তিকেই আমি husband হিসেবে চাই। বাকিটা তো আল্লাহ জানেন আমার মনের অবস্থা। আমি moderate Muslim type এর কোন husband চাই না। যে নামাজ কালাম সবই পরে কিন্তু ইসলামে নারীকে কি মর্যাদা দেয়া হয়েছে। নারীদের পর্দা কেমন হওয়া উচিত তা জানেনা, ইসলাম স্ত্রীকে কতটুকু সম্মান দিয়েছে তা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই বা জানলেও পালন করে না তাহলে তো আমি মহা মসিবতে পড়ব। বাবার বাড়ি থেকেও কোন support পাবো না। এই জবটা করলে অন্তত আমার মতামতকে সবাই কিছুটা হলেও গুরুতব দিবে। না হয় সবাই বলে বেড়াবে হুট করেই একেবারে হুজুরনি হয়ে গেছে General line এ পড়ে। কেউ তো আর বুঝছে না আমি শুধু এখন আমার আল্লাহকে ভয় করি। এ সমাজ ব্যবস্থায় শুধু গুনাহের কাজের দিকেই মানুষ বেশি ধাবিত। দুর্বলের উপরই চলে সব অত্যাচার। আমার গ্রামে প্রাইমারি চাকরি হয়ে গেলে আব্বু আম্মু হয়তো আমাদের বাড়ির বাকি কাজটা শেষ করে ফেলবেন। আব্বুর তো বয়স হচ্ছে আমিও চাইনা আব্বুকে বেশি tension দিতে। আল্লাহই জানেন আমার মনে কি ঝড় চলছে। শায়েখ, আপনি কি দয়া করে বলতে পারেন আমি কি ঠিক পথে এগোচ্ছি?? আমার কাছে কিছু বাচ্চারা কিছু ভলো জিনিস হলেও শিখতে পারবে।  যেহেতু আমার উদ্দেশ্য সৎ। আমার জন্য দোয়া করবেন আমি এখন যেমন জীবন সাথী চাইছি আল্লাহ যেন তেমন জীবন সাথী মিলিয়ে দেয়। যে আমার জন্য দুনিয়াতেও কল্যাণ নিয়ে আসবে  এবং আখিরাতেও কল্যাণ নিয়ে আসবে। আল্লাহ যেন আমাকে এমন একটা husband দান করেন।
by
শায়েখ, আপনি আজকেই আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন যেটা আমি প্রাইমারি স্কুলে চাকরির ব্যাপারেই জিজ্ঞেস করেছিলাম। এখন আমি শুধু জানতে চাই আমি কি ঠিক পথে এগোচ্ছি।        

1 Answer

0 votes
by (566,100 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

নারীদের চাকুরির ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হলোঃ  
প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। 
যেমন,
– যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
– চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
– কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
– চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
– কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
– নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

মহিলাদের জন্য পর্দা রক্ষা করে ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকুরী করা জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে যেন পর্দা লঙ্ঘণ না হয়, সেই সাথে শরয়ী অন্য কোন বিধান লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
হ্যাঁ, যদি উপার্জনক্ষম কোন মাহরাম আত্মীয় থাকে, বা অভিভাবক থাকে, তাহলে মহিলাদের জন্য ব্যবসা ও চাকরীর জন্য বাহিরে যাওয়া উচিত নয়।

শরয়ী পর্দা ও বিধান অনুসরণ করে মহিলাদের ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকুরী করাতে কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি। তা’ই শরয়ী কোন কারণ ছাড়া মহিলাদের ব্যবসা করা ও চাকুরী করাকে হারাম বলার সুযোগ নেই।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/১১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৫; আলবাহরুর রায়েক ১/২০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮, ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯

তবে যদি পর্দা লঙ্ঘণ হয়, পুরুষদের মিলে একসাথে কাজ করতে হয়, সেই সাথে ফিতনার আশংকা হয়, তাহলে জায়েজ নেই।

ولها ان تقوم بالتدريس والبيع والشراء والصناعة من نسيج وصيغ وغزل وخياطة ونحو ذلك إذا لم يفض إلى مالا يجوز شرعا من خلوتها بأجنبى، أو اختلاطها برجال غير محارم اختلاطا تحدث منه فتنة أو يؤدى إلى فوات ما يجب عليها نحو اسرتها دون أن تقيم مقامها من يقوم بالواجب عنها ودون رضاهم (فقه النوازل-3/359
যার সারমর্ম হলো শরয়ী সীমারেখার থেকে প্রয়োজনে মহিলাদের জন্য শিক্ষাদান,ব্যবসা বানিজ্য,,,,ইত্যাদি করা জায়েজ আছে। 
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আপনার বাবা পরিবার চালানোর মতো এখনো ইনকাম করে, যেহেতু পরিবারে সক্ষম পুরুষ আছে,তাই আপনার জন্য চাকুরী করা উচিত নয়।
,
আর যদি আপনার বাবার জন্য পরিবার চালানো কষ্টকর হয়ে যায়,তাহলে আপনার বাবার অনুমতি সাপেক্ষে প্রশ্নে উল্লেখিত চাকুরী করতে পারবেন।   
তবে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত শর্ত মেনে যেতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...