আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামুয়ালাইকুম
আমি অনলাইন এর একজন সুপরিচিত ইসলামিক বক্তা ( নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না) এর কাছে কুরআন রিসাইটেশন এর বেসিক কোর্স করেছি। ওনার কোর্স ফি ছিল ১০০০ টাকা। কোর্স ডিটেইল এ ছিল যে ১ম স্থান অধিকারীর জন্য ওমরাহ প্যাকেজ আর ২য় থেকে ১০ম স্থান অধিকারীর জন্য মূল্যবান হাদিয়া।ঐ কোর্সটি ছিল ৩ মাসের।এবং কোর্স শেষে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।এর শেষ পর্যায় অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায় গত  বছরের জুলাই আন্দোলনের আগে।আলহামদুলিল্লাহ আমি ঐ প্রতিযোগিতায় ৩য় হয়েছিলাম। এই প্রতিযোগিতার হাদিয়া দেওয়ার ব্যবস্থাও ঢাকাতেই করা হয়েছিল ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখে।যেহেতু ঢাকায় গিয়ে পরিক্ষা দিতে অনেক টাকা খরচ হয়েছিল এবং যাতায়াত এর ঝামেলা থাকায় আমার আর হাদিয়া নিতে ঢাকায় যাওয়া হয় নি। তবে ঐখানের কতৃপক্ষকে জানালে ওনারা হাদিয়া ও সার্টিফিকেট কুরিয়ার করতে চেয়েছিলেন। এবং এড্রেস নিয়েছিলেন। কিন্তু তারা হাদিয়া পাঠান নি । তারপর আবারো প্রায় ৩ মাস পর আমি আমাদের কোর্সের গ্রুপ এডমিন ভাই কে অনেক বার কল করেছি । রিসিভ করেননি। আবার টেক্সট করলে রিপ্লাই করেন নি। এই ঘটনা আমাদের পরবর্তী ব্যাচ এর সাথেও ঘটেছে। এমনকি আমাদের ব্যাচের ওমরাহ প্যাকেজ বিজয়ীর হাদিয়াও নিশ্চিত করেন নি। তারপর গত সপ্তাহে আমরা সবাই মিলে যখন অভিযোগ জানাই তখন অবশেষে প্রায় দেড় বছর পর আজকে আমরা হাদিয়া পাই আলহামদুলিল্লাহ।তবে কোর্স এর অন্যান্য আপুরা তাদের উপর খুব অসন্তুষ্ট। কারণ তারা নানা ভনিতা করেছে। এবং কথা দিয়ে কথা রাখে নি।এখন তারা বলছে যে আমরা যেন সবাই মিলে রিভিউ পোস্ট করি এবং ওনাদের গাফিলতির ব্যাপারে হাইলাইট করি । যেহেতু তিনি অনলাইন এ পপুলার। সুতরাং এইটা যেন তাদের পর্যন্ত পৌঁছে।এইটা মুলত তারা বলছে কারন একটা কোর্সে প্রায় ১ থেকে ২ হাজার মানুষ এনরোলমেন্ট করে। এক্ষেত্রে অনেক টাকা ওঠে একটা কোর্স থেকে । তারা অনায়াসে আমাদের হাদিয়া সময় মতো দিয়ে দিতে পারতেন। আমার আল্লাহ জানেন আমি এই কোর্স টি করেছি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। আমার হাদিয়া তো আল্লাহই দিবেন শেষ দিবসে। তবে আমি  এবং অন্যান্য আপুরা সবাই এইটা ভেবে ডিপ্রেসড যে ওনারা আমাদের হক এর বিষয় এতটা গাফেল কিভাবে ছিলেন। আমরা সবাই জেনারেল পড়ুয়া হওয়ায় এই কোর্স এর হাদিয়া না হোক অন্তত সার্টিফিকেট টা খুবই জরুরী ছিল। তাদের এই গাফিলতির কারণে আমার এবং আমার ছোট বোন এর দ্বীনি পড়িশোনা অনেক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কারণ এইটাই ছিল আমার প্রথম কোর্স ।প্রত্যেককেই বাড়ি থেকে প্রচুর কথা শুনতে হয়েছে।

প্রশ্ন ১: আপুদের কথা মতো তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের পোস্ট করা কি ঠিক হবে? উস্তাজ এর সাথে কি বেয়াদবি করা হবে? যেহেতু আমি নিশ্চিত না উস্তাদ এই ব্যাপারে অবগত আছেন কি না।

প্রশ্ন ২ : এখন এই বিষয়ে আমার কি করা উচিত?

আমি এই ব্যাপারে কি উস্তাদ এর সাথে সরাসরি কথা বলব? কারণ ওনার সাথে আমার সরাসরি যোগাযোগ করার একটা সুযোগ আছে।

1 Answer

0 votes
by (665,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলাম মানুষকে যেসব উন্নত চরিত্রের শিক্ষা দেয়, তন্মধ্যে অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি ও চুক্তির বাস্তবায়ন। যেকোনো ভালো কাজের অঙ্গীকার পূরণ করা ওয়াজিব।

পবিত্র কোরআনে ওয়াদার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ হয়েছে, 
يا ايها الذين امنوا اوفوا بالعقود
'হে ইমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করবে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১)
الا الذين عاهدتم من المشركين.....

তবে যেসব মুশরিকের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, পরে তারা চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, আর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সেই চুক্তি তোমরা মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ দায়িত্বনিষ্ঠদের ভালোবাসেন। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
,
ওয়াদা (চুক্তি) পালনকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। যেমন তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ওয়াদা পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)। 
.
ইসলামে অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘন করা থেকেও নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, '(অমুহাজির মুসলমানরা) তোমাদের সাহায্য চাইলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্যকর্তব্য, তবে সে সাহায্য যদি এমন কোনো (অমুসলিম) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হয়, যাদের সঙ্গে তোমাদের কোনো চুক্তি আছে, তবে নয়।' (সুরা আনফাল, আয়াত : ৭২)
.
চুক্তি মোতাবেক কাজ করা ইমানের একটি অপরিহার্য বিষয়। প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি কখনো তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও তাঁরা ওয়াদা রক্ষা করেন। নবীজি (সা.) ওয়াদা করলে যেকোনো মূল্যে তা পালন করতেন। ইসলামে ওয়াদা পালনের ব্যাপারে শত্রু-মিত্র, মুসলিম-অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হুদায়বিয়ার সন্ধি। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও কুরাইশদের মধ্যে এ সন্ধিচুক্তি ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু কুরাইশরা যখন এ সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ করে, তখন মহানবী (সা.) অগত্যা এ সন্ধি নাকচ করে দেন। এ ছাড়া কাফিরদের সঙ্গে আরো বহু চুক্তি হয়েছে। যেসব কাফির চুক্তি ভঙ্গ করেনি, এই আয়াতে তাদের সঙ্গে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
.
ওয়াদা,চুক্তি ভঙ্গ কারীকে হাদীস শরীফে মুনাফিক বলা হয়েছেঃ  
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ "

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকের আলামত বা নিদর্শন তিনটি। সে (১) কথা বললে মিথ্যা বলে; (২) ওয়াদাহ করলে তা ভঙ্গ করে এবং (৩) তার নিকট আমানাত রাখা হলে সে তার খিয়ানাত করে।
(তিরমিজি ২৬৩১)
,
অন্য হাদিসে আছে, রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তির ওয়াদার ঠিক নেই, তার ধার্মিকতা (ঈমান) এর ঠিক নেই।’ (সহিহ ইবনু হিব্বান : ১৯৪)।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনারা যে কুরআন রিসাইটেশন এর বেসিক কোর্স করেছেন,কোর্স এর ক্লাশ নিতে যদি তারা কোনো গাফলতি না করে থাকে,উক্ত কোর্স যদি তারা ঠিক ভাবেই সম্পন্ন করে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নিশ্চিত না উস্তাদ এই ব্যাপারে অবগত আছেন কি না,
তাই তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের পোস্ট না করারই পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
এক্ষেত্রে আপনারা চাইলে নিজের মাহরামদেরকে সেই উস্তাযের সাথে সরাসরি দেখা করিয়ে আপনাদের অভিযোগ গুলো সরাসরি তার কাছে গিয়ে তুলে ধরা।
তাহলে আশা করি সুন্দর একটি সমাধান হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 78 views
0 votes
1 answer 140 views
0 votes
1 answer 142 views
asked Dec 21, 2024 in পবিত্রতা (Purity) by meher3444 (19 points)
0 votes
1 answer 229 views
0 votes
1 answer 463 views
asked Feb 6, 2024 in পবিত্রতা (Purity) by mnisa2049 (26 points)
0 votes
1 answer 216 views
asked Jan 24, 2024 in সালাত(Prayer) by MAA (2 points)
...