আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in সালাত(Prayer) by (7 points)
আসসালামুআলাইকুম।
সফরের সময় নামাজ আদায় প্রসঙ্গে।

১)ট্রেনে অথবা বাসে সফর করার সময় অযু না করে তায়াম্মুম করে কি নামাজ পড়া যাবে।যদি ট্রেনের টয়লেট পানি থাকে কিন্তুু হিজাব নিকাপ খুলে অযু করতে কষ্ট হলে এবং টয়লেট থেকে নাপাকি লাগার ভয়ে যদি তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ি তাহলে কি নামাজ হবে???

২)তায়াম্মুম করা পদ্ধতি টা জানাবেন?

৩)তখন কি আমাকে কসর পড়তেই হবে।যেহেতু আমি সিলেট থেকে ঢাকা একটা মুসাফির হওয়ার মতো দূরত্বে আছি।নাকি কসর না করেও চার রাকাআত ফরজ আদায় করলেই হবে।

৪) বাসে, ট্রেনে থাকা অবস্থায় যদি কসর আদায় করতে হয়।তাহলে গন্তব্যে পৌঁছানোর পরই কি কসর আদায় করবো নাকি স্বাভাবিক ভাবে সুন্নত, ফরজ পুরোটা আদায় করবো।কারণ আমি তখনও ঢাকা অবস্থান করতেছি(যেখানে আমি মুসাফির এখনও)।

৫)সফররত অবস্থায় যদি গোসল কোনো কারণে ফরজ হয়ে যায়।তাহলে তখন করনীয় কি??

৬)ট্রেনে তো কিবলামুখী হয়ে সবসময় চলে না এমতাবস্থায় কি কিবলার দিক ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে নামাজ পড়া যাবে কি??

1 Answer

0 votes
by (665,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  

https://ifatwa.info/25387/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
শরীয়তের বিধান হলো যদি গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়, অথবা যানবাহনটি এমন কোথাও না দাঁড়ায় যেখানে পানি দ্বারা অযু করে নামায আদায় করা সম্ভব, তবে এমতাবস্থায় গাড়িতে পানিতে পানির ব্যবস্থা না থাকলে মাটি জাতীয় বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করে নামায পড়া জায়েজ আছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন  
قوله تعالى-وَإِن كُنتُم مَّرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاء أَحَدٌ مِّنكُم مِّن الْغَآئِطِ أَوْ لاَمَسْتُمُ النِّسَاء فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا (سورة المائدة-6)
যার সারমর্ম হলো যদি তোমরা অসুস্থ হও,বা সফর অবস্থায় থাকো,,,,,, পানি যদি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করো।
    
وفى الفتاوى الهندية- ومنها عدم القدرة على الماء يجوز التيمم لمن كان بعيدا من الماء ميلا هو المختار في المقدار سواء كان خارج المصر أو فيه وهو الصحيح وسواء كان مسافرا أو مقيما هكذا في التبيين لا يجوز التيمم لعدم الماء في المصر وكذا القرى التي لا يفارقها أهلها أو أكثرهم نهارا (الفتاوى الهندية-1/27)
যার সারমর্ম হলো পানির উপর যদি শক্তি না থাকে, যেমন সে যদি পানি থেকে এক মাইল দুরত্বে থাকে,,,, তাহলে সে তায়াম্মুম করতে পারবে। 

বাসে/যানবাহনে উঠতে হলে অযু করেই উঠতে হবে। অযু না থাকলে বা অযু করার পর তাহা ভেঙ্গে গেলে সেক্ষেত্রে বিধানঃ

বাস বা যানবাহনে থাকার কারণে যদি কোনো মহিলা পর্দা করতে সক্ষম না হয়,এবং তায়াম্মুম করতেও সক্ষম না হয়,তাহলে ইশারায় নামায আদায় করবে,তবে যদি তায়াম্মুম করার সুযোগ থাকে,তাহলে তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করবে।জনসম্মুখে তায়াম্মুম করতে যদি হাত মুখ খুলতেই হয়,তাহলে হাত মুখ খুলে অজু/তায়াম্মুম করে নেবে।তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে,যাতে নিজেকে পুরপুরুষের দৃষ্টি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/9190

যানবাহনে কোন জিনিস দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে,জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(১-২))
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়, অথবা ট্রেন এমন কোথাও না দাঁড়ায় যেখানে পানি দ্বারা অযু করে নামায আদায় করা সম্ভব,এবং ট্রেনে যদি অযু করার মতো কোনো পানি না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি ট্রেনে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

তায়াম্মুমের কাজ দুটিঃ-
১। মাটিতে হাত মেরে পুরো চেহারা একবার মাসেহ করা।
২।পুনরায় মাটিতে হাত মেরে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা। 

★উল্লেখ্য, নিয়ত করা তায়াম্মুমের জন্য শর্ত।
নিয়ত ছাড়া তায়াম্মুম শুদ্ধ হবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রশ্নের বিবরণ মতে ট্রেনে যেহেতু পানির ব্যবস্থা আছে, সুতরাং এক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা বৈধ হবে না।

তায়াম্মুম করে নামাজ পড়লে পরবর্তীতে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।

আপনি ট্রেনের ইস্তেঞ্জা খানাতে গিয়ে যেভাবেই হোক অযু করবেন,সেখানে অযু করলে কোনোক্রমেই যদি নাপাকি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে ইস্তিঞ্জা খানা থেকে বাহিরে এসে মগে বা বোতলে করে পানি নিয়ে অযু করতে হবে।

অযু করতে যদি জনসম্মুখে হাত মুখ খুলতেই হয়,অর্থাৎ সেখানে যদি গায়রে মাহরাম পুরুষ থাকে,তাহলে হাত মুখ খুলেই অজু করে নিতে হবে।তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে,যাতে নিজেকে পুরপুরুষের দৃষ্টি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে।

(০৩)
এক্ষেত্রে কসরের নামাজ আদায় করতে হবে।

(০৪)
আপনি সেখানে ১৫ দিনের কম অবস্থানের নিয়ত করলে সেখানেও আপনি কসর এর নামাজ আদায় করবেন।

(০৫)
এক্ষেত্রে অবশ্যই ফরজ গোসল করতে হবে।
হ্যাঁ যদি পানি না পাওয়া যায়,তায়াম্মুমের সমস্ত শর্ত বিদ্যমান থাকে,সেক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা যাবে।

(০৬)
ট্রেনে কিবলামুখি হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি ট্রেন কিবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায় তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলামুখি ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে ফিরেই নামাজ শেষ করবে। পরে নামাজ আবার দোহরিয়ে নিতে হবে।
,
ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে এই নামাজ পরে আবার পড়ে নিতে হবে। কিবলামুখি ফিরে নামাজ আদায় করতে পারলে পরে তা আবার আদায় করার প্রয়োজন নেই।

অন্য দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করলে সেই নামাজ আদায় হবেনা।

গন্তব্য স্থলে এসে সেই নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।

ট্রেনে নামাজ আদায়ের পদ্ধতি জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...