আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. উস্তায আমি রুকাইয়া করতে যাই এক সেন্টারে। সেখানে রুকাইয়া সেশন শেষ হয় তখন আসরের ওয়াক্ত আর ১০/৭/১৬ নিনিটের মতো বাকি থাকে। উযু থাকে না তখন করার জন্য চেষ্টা করলে দেখি সব রুমে রুকাইয়া সেশন চলতেছে যাওয়ার সুযোগ নাই। কমন যে ওয়াশরুম সেটায় লো কমোড। যেহেতু লো কমোডে পেসাব এর ছিটা আসে এটা নিশ্চিত। কেনো উপায় না পেয়ে লো কমোড ব্যবহার করে উযু করে ওমন অবস্থাতেই নামাজ পড়ি।
যেহেতু পোশাক পাক ছিল না তখন তাই বাসায় এসে আবার কাজা আদায় করি এক্ষেত্রে কী আমার নামাজ ঠিক আছে?
২. মেয়েরা মাহরামের সাথে জামায়াত করে নামাজ পড়লে সেক্ষেত্রে মাহরাম মানে তখনের ইমাম যা বলবে মেয়েরাও কী তাই বলবে? নাকি মেয়েরা পুরোটা সময় চুপ থাকবে? শুধু সুজদা রুকু করে যাবে? জামায়াতের নামাজের ক্ষেত্রে করনীয় কী?
৩. ইমাম ভুল করলে মানে দিতীয় রাকাতে তাশাহদুদ পরার পরে দুরুদ পরে ফেললে যদি বুঝতে পারি ভুল হচ্ছে তখন করনীয় কী? তাকে কীভাবে সতর্ক করব?

৪. মাগরিব নামাজে প্রথম দুই রাকাতে সুরা মিলায় কিন্তু তৃতীয় রাকাতে শুধু সূরা ফাতিহা পরে এটা কতোটুকু সহীহ?

৫. আকদ না হয়ে রেজিষ্ট্রি হলে সেক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে লিমিটেশন রেখে কথা বলতে পারবে?

৬. নফল নামাজে সূরা ফাতিহার পরে সূরা আদ দুহা সাথে সূরা কাসাস এর আয়াত পরে এভাবে কী পড়া যাবে?

৭. আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলহামদুলিল্লাহ ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ি। তবে এই কয়েকদিন থেকে আমার খুব বেশি নামায কাজা হচ্ছে। ফজরেও উঠতে পারি না। বাইরে গেলে নামায পড়তে ভুলে যাই। এমন অনেক কারন। আগে এমন হত না।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ কি আমার উপর নারায এ জন্য আমি নামায থেকে দূরে সরে যাচ্ছি? আমার ইমান কি দিন দিন আরও দুরবল হচ্ছে এজন্য এমন নামায কাজা হচ্ছে? আমার খুব ভয় হচ্ছে।

৮.. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ,
আমার পরিচিত এক বোনের প্রশ্ন।
কালকে রাতে আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম একটি পেয়ারা গাছ আর একটি মন্ডল গাছ থেকে ফল গুলো পেরে খাচ্ছি
পেয়ারা এবং মন্ডল গুলো পুষ্ট সুন্দর বড় বড়।
একই স্বপ্ন আজকে 12 tar দিকে ঘুমানোর পর দেখেছি।
এই স্বপ্ন কি কাকতালীয়? নাকি কোনো ব্যাখ্যা আছে?

৯. অনেকে মানত করে এটা হলে  বা চাকরি হলে এত রাকাত নামাজ পড়ব বা এটা ওটা করব এভাবে কী মানত করা যায়?

১০. যদি এশার নামাজ না পরে ঘুমাই কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি ৫/৬ মিনিট আছে সময় এক্ষেত্রে কোন নামাজ আগে পরা উচিত? এশা নাকি বিতর?

1 Answer

0 votes
by (683,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আপনার নামাজ আদায় হয়েছে। 
পুনরায় আর সেই নামাজ আদায় করতে হবেনা।

এহেন পরিস্থিতিতে সেখানে রুকইয়াহ করাবেননা। প্রয়োজনে টাইম পরিবর্তন করে নিবেন। নামাজের যেনো কোনো সমস্যা না হয়,এমন টাইমে রুকইয়াহ করাবেন। 

(০২)
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  
وإذا قرئ القرآن فاستمعوا له وأنصتوا لعلكم ترحمون ” يعني في الصلاة المفروضة

অর্থ : যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোন এবং চুপ থাক, যাতে তোমাদের প্রতি করুণা করা হয় (ফরজ নামাজে)

হযরত ইবনে মাসঊদ রা. এর মতও তাই। তাফসীরে তাবারীতে বলা হয়েছে:

صلى ابن مسعود، فسمع أناسا يقرءون مع الامام، فلما انصرف، قال: أما آن لكم أن تفقهوا ؟ أما آن لكم أن تعقلوا ؟ وإذا قرئ القرآن فاستمعوا له وأنصتوا كما أمركم الله
অর্থাৎ হযরত ইবনে মাসঊদ রা. নামায পড়ছিলেন, তখন কতিপয় লোককে ইমামের সঙ্গে কেরাত পড়তে শুনলেন। নামায শেষে তিনি বললেন : তোমাদের কি অনুধাবন করার সময় আসেনি, তোমাদের কি বোঝার সময় হয় নি? যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং নীরব থাকবে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন। (৯ খ. ১০৩ পৃ.)

হযরত আবূ মূসা আশআরী রা. বলেছেন,
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا قرأ الإمام فأنصتوا، فإذا كان عند القعدة فليكن أوّل ذكر أحدكم التشهد. أخرجه مسلم (৪০৪) في باب التشهد في الصلاة، وأحمد في المسند ৪/৪১৫ (১৯৯৬১)، وأبو داود (৯৭৩) وابن ماجه (৮৪৭) واللفظ له. ؟

অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যখন ইমাম কুরআন পড়বে,তোমরা তখন চুপ করে থাকবে। আর বৈঠকের সময় তাশাহহুদ-ই প্রথম পড়তে হবে।

(মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪০৪; আবূ দাউদ, হাদীস নং ৯৭৩; ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৮৪৭; মুসনাদে আহমাদ, ৪খ, ৪১৫ পৃ, হাদীস নং ১৯৯৬১। ইমাম আহমদ, (দ্র. তামহীদ ১১/৩৪), ইমাম মুসলিম, ইবনুল মুনযির (দ্র. আল আওসাত, ৩/১০৫), ইমাম ইবনে জারীর তাবারী র. (দ্র. তাফসীরে তাবারী, ৯/১০৩) ও ইবনে হাযম জাহেরী (দ্র. আল মুহাল্লা, ২/২৭০) প্রমুখ এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন।
,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)ইরশাদ করেছেন যে, 

 مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ

যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৫০, সুনানুল বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৭২৩, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১১৮৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৪৬৪৩, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-১০৫০, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৮০০, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২৭৯৭, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৭৫৭৯, মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ-৯৬, মুসনাদে ইমামে আজম-৬১)    

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে ইমামের পিছনে কিরাআত পাঠ করবেন। ইহা ছাড়া বাকি বিষয় যেমন রুকু সেজদার তাসবিহ,তাশাহুদ,দরুদ,দোয়ায়ে মাছুড়া সবই পাঠ করবেন।

(০৩)
ইমাম দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহদুদ পরার পরে দুরুদ পরে ফেললে, আপনি কিভাবে বুঝবেন?

৩ বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে ইমাম যদি ২য় রাকাতে সালাম ফিরায়,তখন আপনি লোকমা দিয়ে তাকে সতর্ক করবেন।
আল্লাহু আকবর বলে দাঁড়িয়ে যাবেন।

(০৪) 
এটিই সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 
আকদ না হয়ে রেজিষ্ট্রি হলে সেক্ষেত্রে তো বিবাহ হয়না। সুতরাং এমতাবস্থায় ছেলে মেয়ে লিমিটেশন রেখে কথা বলতে পারবেনা।
তারা এখনো একে অপরের জন্য গায়রে মাহরাম। 

(০৬)
এভাবে পড়লে নামাজের সমস্যা হবেনা।

তবে চেষ্টা করবেন আগে সূরা কাসাস এর আয়াত পড়বেন এরপর সুরা আদ দুহা।

(০৭)
আপনার ঈমান দিন দিন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে,পূর্ণ চেষ্টার কমতি, এজন্য নামায কাজা হচ্ছে।

এক্ষেত্রে করনীয় জানুনঃ- 
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নের ব্যাখ্যাঃ-

আপনি যদি বিবাহিতা হোন,সেক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সন্তান দান করবেন।

আর যদি অবিবাহিতা হোন,সেক্ষেত্রে নেক আমল করার তওফিক বৃদ্ধি পাবে,ইনশাআল্লাহ। 

পথ চলতে বাধা আসতে পারে,আশা করি আপনি সমস্ত বাধা ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৯)
মান্নত করা হতে শরীয়ত অনুৎসাহিত করনে।

তবে মান্নত করলে সেটি পূরন করা ওয়াজিব হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ- 

(১০)
এক্ষেত্রে আগে ইশার নামাজ আদায় করবেন।
এরপর বিতর নামাজ আদায় করবেন।
ইশার নামাজ আদায় করতেই নামাজের ওয়াক্ত চলে গেলেও ইশার পর বিতর আদায় করবেন।

এক্ষেত্রে বিতর নামাজ কাজা হিসেবে আদায় হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...