আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম।
কিছুদিন আগে আমাদের বাসার কাজের লোক (আমরা ফুপু ডাকি) তার গলায় একটা চেইন দেখে আমার
আম্মু। আম্মুর সেটি পছন্দ হয়।
ফুপুকে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন যে, এটা উনি বাড়ি যাওয়ার সময় রাস্তায় পেয়েছেন। তখন আম্মু বলেন “এটা আমার পছন্দ হয়েছে, আমি এই রকম একটা বানিয়ে নিবো, এটা আমাকে দিয়ে যাও।” আর ফুপুও সেটা দিয়ে দেন।

এরপর আম্মু যখন আব্বুকে চেইনটা দেখান, আব্বু
(আগে স্বর্ণকার ছিলেন) হাতে নিয়েই বুঝতে পারেন এটা আসল সোনার চেইন। তিনি আরও বলেন যে, এটা বিদেশি সোনার চেইন।

ফুপু জানে না এটা সোনার। উনি আম্মুকে বলেছেন,
“আপনার পছন্দ হয়েছে, আপনি নিয়ে নেন।”

এখন আমরা দ্বিধায় আছি কী করা উচিত।

আম্মুর বলছে, গহনার দোকানে নিয়ে দাম জেনে, সেই টাকা ফুপুকে দিয়ে চেইনটা কিনে নিবে।

আবার এটাও ভাবা হচ্ছে, ফুপুকে বলা হবে যে এটা সোনার। এরপর উনি চাইলে আমাদের দিতে পারেন, নাহলে
উনি নিজের কাছে রাখবেন।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, যদি ফুপুর মেয়েরা জেনে যায়,
তাহলে তারা হয়তো বিক্রি করতে দিবে না বা নিজেরা রেখে দেবে।

আবার মাথায় আসছে, উনি গরিব মানুষ— আল্লাহ তাকে এটি পাইয়ে দিয়েছেন। এখন এটা আমাদের জন্যও একটা পরীক্ষা, আমরা কী করি সেটাই আল্লাহ দেখবেন।

আমাদের কে একটু পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন কি
করলে ভালো হবে ?  দ্রুত উত্তর  দিলে খুব উপকার
হতো।

1 Answer

0 votes
by (664,740 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/9913/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে তার মুল মালিকের খোজ করে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنِي سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ اللُّقَطَةِ فَقَالَ " عَرِّفْهَا سَنَةً فَإِنِ اعْتُرِفَتْ فَأَدِّهَا وَإِلاَّ فَاعْرِفْ وِعَاءَهَا وَعِفَاصَهَا وَوِكَاءَهَا وَعَدَدَهَا ثُمَّ كُلْهَا فَإِذَا جَاءَ صَاحِبُهَا فَأَدِّهَا "

যাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, কোন হারানো জিনিস প্রাপ্তি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেনঃ এক বছর না হওয়া পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি সনাক্তকারী কোন লোক পাওয়া যায় তাহলে তাকে তা ফিরত দাও। এর ব্যতিক্রম হলে তুমি এর থলে ও থলের বন্ধনী সঠিকভাবে চিনে রাখ এবং এর মধ্যকার জিনিস গণনা করার পর কাজে ব্যবহার কর। তারপর মালিক এসে গেলে এটা তাকে ফিরিয়ে দিও।
(ইবনে মা-জাহ (২৫০৭),তিরমিজি ১৩৭৩.)

বিস্তারিত জানুনঃ 

যদি বস্তুটির মূল্য ১০ দিরহামের কম হয়, তাহলে কয়েকদিন ঘোষণা দিবে।

পক্ষান্তরে ১০ দিরহাম বা তার বেশি হলে এক বছর ঘোষণা দেবে। 

যদি কুড়ানো বস্তু এমন প্রকৃতির হয় যে, মালিক তা খোঁজ করবে না, যেমন দানা বা ডালিমের খোসা  তাহলে  নেওয়া ফেলে রেখে যাওয়া মুবাহ। 

এমনকি ঘোষণা করা ছাড়াই তা দ্বারা উপকৃত হওয়া বৈধ হবে। এর সপক্ষে হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) বলেন, 'রাসুলুল্লাহ (সা.) পথ দিয়ে যাওয়ার সময় একটি খেজুর দেখতে পেলেন, তিনি বললেন, যদি সদকার খেজুর হওয়ার সম্ভাবনা না থাকত, তবে আমি অবশ্যই তা ভক্ষণ করতাম।' (বোখারি : ২৪৩১)। 

মূল হাদীসটি হলো 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِتَمْرَةٍ فِي الطَّرِيقِ قَالَ " لَوْلاَ أَنِّي أَخَافُ أَنْ تَكُونَ مِنَ الصَّدَقَةِ لأَكَلْتُهَا ". وَقَالَ يَحْيَى حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِي مَنْصُورٌ وَقَالَ زَائِدَةُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ طَلْحَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ.

মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাস্তায় পড়ে থাকা খেজুরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বললেন, আমার যদি আংশকা না হত যে এটি সা’দকার খেজুর তা হলে আমি এটা খেতাম।

بَاب إِذَا وَجَدَ خَشَبَةً فِي الْبَحْرِ أَوْ سَوْطًا أَوْ نَحْوَهُ
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلًا مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَسَاقَ الْحَدِيثَ فَخَرَجَ يَنْظُرُ لَعَلَّ مَرْكَبًا قَدْ جَاءَ بِمَالِهِ فَإِذَا هُوَ بِالْخَشَبَةِ فَأَخَذَهَا لِأَهْلِهِ حَطَبًا فَلَمَّا نَشَرَهَا وَجَدَ الْمَالَ وَالصَّحِيفَةَ

১৫১৬. পরিচ্ছেদঃ সমূদ্রের কাঠ বা চাবুক বা এ জাতীয় কোন কিছু পাওয়া গেলে
লায়ছ (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বণী ইসরাঈরের জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে উল্লেখ করেন এবং পুরা ঘটনা বর্ণনা করেন। (শেষ পর্যয়ে বলেন) সে ব্যক্তি দেখতে বের হল, হয়ত কোন জাহাজ তার মাল নিয়ে এসেছে। তখন সে একটি কাঠ দেখতে পেল এবং তা পরিবারের জন্য জ্বালানী কাঠ হিসাবে নিয়ে এল। যখন তাকে চিরে ফেলল তখন সে (এর মধ্যে) তার মাল ও একটি চিঠি পেল।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত গহণা আপনার আম্মুর জন্যে নেয়া কোনোক্রমেই জায়েজ নেই,টাকা দিয়ে কিনে নেয়াও জায়েজ নেই।

উক্ত গহনা কাজের লোকটির জন্যেও নেয়া জায়েজ নেই।

এক্ষেত্রে সেই গহনা উক্ত কাজের লোক কে ফিরিয়ে দিতে হবে।

তাকে বলতে হবে যে আপনি গহনা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নেওয়াই ভুল করেছেন।

এক্ষেত্রে আপনার জন্য করণীয় হলো এক বছর এলাকাবাসীর মাঝে ঘোষণা দেওয়া যে গহনাটি কার?

আসল মালিক খুঁজে বের করে তার নিকট গহনাটি দিয়ে দেওয়া উক্ত কাজের লোকের উপর আবশ্যক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...