জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ الشَّعْبِیِّ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ قَالَ لامْرَأَتهِ: کُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا عَلَیْک فَهَیَ طَالِقٌ، قَالَ: فَکُلُّ امْرَأَةٍ یَتَزَوَّجُهَا عَلَیْهَا، فَهِیَ طَالِقٌ.
ابن أبي شیبة، المصنف، 4: 65، رقم: 17838، الریاض: مکتبة الرشد
সারমর্মঃ
শা'বি রহঃ থেকে বর্ণিত,তার নিকটে এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, যে তার স্ত্রীকে বলেছে যে আমি যেই মহিলাকেই তোমার উপরে বিবাহ করবো,সে তালাক।
ইমাম শা'বী রহঃ বলেন,তাহলে যেই মহিলাকেই সেই তার স্ত্রীর উপরে (স্ত্রী থাকা অবস্থায়) বিবাহ করবে,তার উপরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৪ঃ৬৫ হাদীস নং ১৭৮৩৮।)
أَلْفَاظُ الشَّرْطِ إنْ وَإِذَا وَإِذْمَا وَكُلُّ وَكُلَّمَا وَمَتَى وَمَتَى مَا فَفِي هَذِهِ الْأَلْفَاظِ إذَا وُجِدَ الشَّرْطُ انْحَلَّتْ الْيَمِينُ وَانْتَهَتْ لِأَنَّهَا تَقْتَضِي الْعُمُومَ وَالتَّكْرَارَ فَبِوُجُودِ الْفِعْلِ مَرَّةً تَمَّ الشَّرْطُ وَانْحَلَّتْ الْيَمِينُ فَلَا يَتَحَقَّقُ الْحِنْثُ بَعْدَهُ إلَّا فِي كُلَّمَا لِأَنَّهَا تُوجِبُ عُمُومَ الْأَفْعَالِ فَإِذَا كَانَ الْجَزَاءُ الطَّلَاقَ وَالشَّرْطُ بِكَلِمَةِ كُلَّمَا يَتَكَرَّرُ الطَّلَاقُ بِتَكْرَارِ الْحِنْثِ حَتَّى يَسْتَوْفِيَ طَلَاقَ الْمِلْكِ الَّذِي حَلَفَ عَلَيْهِ فَإِنْ تَزَوَّجَهَا بَعْدَ زَوْجٍ آخَرَ وَتَكَرَّرَ الشَّرْطُ لَمْ يَحْنَثْ عِنْدَنَا كَذَا فِي الْكَافِي.
ভাবার্থঃ
শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)َإِذَا-যখন
(৩)َإِذْمَا-যখন
(৪)َكُلُّ-সব
(৫)َكُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
1237
وَلَوْ دَخَلَتْ كَلِمَةُ كُلَّمَا عَلَى نَفْسِ التَّزَوُّجِ بِأَنْ قَالَ: كُلَّمَا تَزَوَّجْت امْرَأَةً فَهِيَ طَالِقٌ أَوْ كُلَّمَا تَزَوَّجْتُك فَأَنْت طَالِقٌ يَحْنَثُ بِكُلِّ مَرَّةٍ وَإِنْ كَانَ بَعْدَ زَوْجٍ آخَرَ هَكَذَا فِي غَايَة السُّرُوجِيِّ.
যদি কুল্লাম কে বিবাহের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়, যেমন কেউ বলল, যখনই আমি কোনো নারীকে বিয়ে করবো, তখনই সে তালাক। অথবা কেউ বলে, যখনই তোমাকে বিয়ে করবো, তখনই তুমি তালাক। তাহলে এমতাবস্থায় ঐ মেয়েকে বিয়ে করার সাথে সাথেই ঐ মেয়ে তালাক হয়ে যাবে। যদি একবার তালাক প্রাপ্ত হওয়ার দ্বিতীয় স্বামীর গ্রহণ করার পর আবার প্রথম স্বামীর ঘরে সে আসে, তাহলেও বিয়ের সাথে সাথেই সে তালাক প্রাপ্ত হয়ে যাবে।
وَلَوْ قَالَ: كُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا فَهِيَ طَالِقٌ فَتَزَوَّجَ نِسْوَةً طُلِّقْنَ وَلَوْ تَزَوَّجَ امْرَأَةً وَاحِدَةً مِرَارًا لَمْ تَطْلُقْ إلَّا مَرَّةً وَاحِدَةً كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَلَوْ نَوَى بَعْضَ النِّسَاءِ صَحَّتْ نِيَّتُهُ دِيَانَةً لَا قَضَاءً وَقَالَ الْخَصَّافُ: تَصِحُّ نِيَّتُهُ فِي الْقَضَاءِ أَيْضًا وَالْفَتْوَى عَلَى ظَاهِرِ الْمَذْهَبِ وَإِنْ أَخَذَ بِقَوْلِ الْخَصَّافِ إذَا كَانَ الْحَالِفُ مَظْلُومًا فَلَا بَأْسَ بِهِ كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.
«الفتاوى الهندية» (1/ 415)
যদি কেউ বলে যে সব মহিলাদেরকে আমি বিয়ে করবো তারা প্রত্যেকে তালাকপ্রাপ্ত হবে। যদি এখন এই ব্যক্তি কোনো এক মহিলাকে একাধিক বার বিয়ে করে, তাহলে শুধুমাত্র ঐ মহিলা একবারই তালাক প্রাপ্ত হবে। যদি সে তার উপরোক্ত কথা দ্বারা নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক মহিলাদেরকে নিয়ত করে, তাহলে তার নিয়ত দিয়নাত হিসেবে বিশুদ্ধ হবে। কিন্তু বিচারিকভাবে তা বিশুদ্ধ হবে না।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি বয়স্কা মহিলা হোক বা যুবতী মহিলা হোক, যাকেই বিবাহ করবে,তার উপরেই তিন তালাক পতিত হবে।
এক্ষেত্রে সে যে একজন বয়স্কা অভাবী কিংবা ভিখারি মহিলাকে বিয়ে করে শর্ত থেকে বের হওয়ার পরিকল্পনা করছেন,প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে সে শর্ত থেকে বের হতে পারবেনা।
★এক্ষেত্রে শর্ত থেকে বের হওয়ার একটি পদ্ধতি উল্লেখ রয়েছে,তাহা হলোঃ-
“তার কোন পরিচিত জন তাকে না জানিয়ে তার পক্ষ থেকে দুইজন স্বাক্ষ্যির সামনে কনেকে বিয়ের প্রস্তাব দিবে। উক্ত মহিলা সেই বিয়ে কবুল করে নিবে। প্রস্তাবকারী তার কাছে এসে বলবে যে, “আমি তোমার বিয়ে ওমুক মেয়ের সাথে এত টাকা মোহরের বিনিময়ে দিয়ে দিলাম, সুতরাং তুমি মোহর হিসেবে কিছু টাকা/গহনা দাও”।
তারপর তিনি কোন কথা না বলে কমপক্ষে দু’জন স্বাক্ষীর সামনে চুপচাপ মোহর বাবত কিছু টাকা/গহনা দিয়ে দিবেন। তখন উক্ত মোহর বাবত প্রাপ্ত টাকা/গহনা সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর কাছে পৌঁছিয়ে বলবে যে, এটা তোমার স্বামী মোহর বাবত দিয়েছে। এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
তখন আর পূর্বোক্ত কথার দরূন কোন তালাক পতিত হবে না।
★আরো বিস্তারিত জানার জন্য নিকটতম কোনো দারুল ইফতায় স্বশরীরে যোগাযোগ করার পরামর্শ রইলো।