আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
20 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আস-সালামু আলাইকুম উস্তাদ। আমার খুব কাছের একজন মানুষ হারাম সম্পর্কে জড়িয়েছে (মাহরাম) । তার বাড়ির কেউ রাজি নয় । অনেক ঝামেলার পর সবাই রাজি হয়েছে। ছেলের পরিবার মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন । কিন্তু মেয়ের পরিবার থেকে বলছে তারা তাদের মেয়েকে এখন বিয়ে দিবে না। ছেলের বাবা-মা বলেছেন কয়েক বছর পরে হলেও তারা সেই মেয়েকে বউ বানাতে চায়। কিন্তু মেয়ের পরিবার সাফ জানিয়েছে বিয়ে দিবে না ছেলের সাথে। এখন ছেলে চাচ্ছে জাদু করে মেয়ের পরিবারকে রাজি করাতে। একজন কবিরাজ একটা তাবিজ ছেলেকে ব্যবহার করতে বলছে। তাবিজ এখনো আনা হয় নাই। গোপন ভাবে জানতে পেরেছি আজ তাবিজ এনে ছেলে হাতে দিবে মানে ব্যবহার করা শুরু করবে। 

এই মুহূর্তে আমার করনীয় কি? তাবিজ ব্যবহার করা তো হারাম। তার উপর একটা হারাম সম্পর্কের জন্য ব্যবহার করা হবে। এখন আমি চাচ্ছি গোপনে কোনোভাবে তাবিজটা নষ্ট করে ফেলতে। এটা করে কি কোনো লাভ হবে? আমার কি কোনো ক্ষতি হবে? ক্ষতি যেন না হয় করণীয় কি? তাবিজ নষ্ট করার পদ্ধতিটা কি জানা যাবে? দয়া করে জানাবেন প্লিজ এটা। 

1 Answer

0 votes
ago by (662,400 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

দাওয়াতের গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلاً مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ إِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ، وَلاَ تَسْتَوِى الْحَسَنَةُ وَلاَ السَّيِّئّةُ ادْفَعْ بِالَّتِى هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِيْ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةً كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيْمٌ.

‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হ’তে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত। সৎকর্ম ও অসৎকর্ম সমান নয়। প্রতুত্তর নম্রভাবে দাও, দেখবে তোমার শত্রুও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে পরিণত হয়েছে’ (হা-মীম সিজদা ৩৩-৩৪)।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِيْنَ آمَنُوا وَتَوَاصَوا بَالصَّبْرِ وَتَوَاصَوا بِالْمَرْحَمَةِ- أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ.

‘অতঃপর (আল্লাহর নৈকট্য তারাও লাভ করতে পারে) যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরে ধৈর্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরে দয়া করার উপদেশ দেয়। তারাই হল ডানপন্থি, তারাই সফল’ (বালাদ ১৭)। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

 عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার পক্ষ হতে (মানুষের কাছে) একটি বাক্য হলেও পৌঁছিয়ে দাও। বনী ইসরাঈল হতে শোনা কথা বলতে পারো, এতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে প্রস্তুত করে নেয়।
(বুখারী ৩৪৬১,মিশকাত ১৯৮)

عَنْ أبيْ مَسْعُوْدٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ.

আবু মাসঊদ আনছারী (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কল্যাণের পথ দেখাবে সে ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ নেকী পাবে, যে ঐ পথে চলবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/১৯৯ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ... مَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئٌ وَمَنْ سَنَّ فِيْ الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَ وِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئٌ.

জারীর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি (দাওয়াতের মাধ্যমে) ইসলামের একটি (মৃত) সুন্নাত চালু করবে সে তার নেকী পাবে এবং ঐ সুন্নাতের প্রতি মানুষ আমল করে যত নেকী পাবে তাদের সমপরিমাণ নেকী তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো নেকী কমকরা হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ আমল চালূ করবে সে জন্য তার পাপ রয়েছে। আর ঐ মন্দ আমল করে যত লোক যে পরিমাণ পাপ অর্জন করবে সবার সমপরিমাণ পাপ তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো পাপ এতটুকুও কম করা হবে না’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২১০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২০০‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ نَضَّرَ اللهُ إِمْرَاً سَمِعَ مِنَّا شَيْئًا فَبَلَّغَهُ كَمَا سَمِعَهُ فَرُبَّ مُبَلِّغٍ أَوْعَى لَهُ مِنْ سَامِعٍ.

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুক যে ব্যক্তি আমার কোন হাদীছ শুনে এবং যেভাবে শুনেছে ঠিক সেভাবে অপরের নিকট পৌঁছে দেয়। কেননা অনেক সময় যার নিকট পৌঁছানো হয়, সে ব্যক্তি শ্রোতা অপেক্ষা অধিক জ্ঞানী হয়’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারেমী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২১৬ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি শুধু তাকে এতোটুকু বলে দিবেন যে যাদু করা বা উল্লেখিত লক্ষ্যে তাবিজ করা কোনটি শরীয়তে জায়েজ নেই। এগুলো সবই হারাম কাজ।

যেহেতু এই মেয়ের পরিবার তার সাথে ওই মেয়েকে বিবাহ দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সুতরাং তার জন্য উচিত অন্যত্রে বিবাহের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

এক্ষেত্রে তাবিজ নষ্ট করা বা জাদু নষ্ট করে দেওয়া এগুলোর দায়িত্ব কোনটিই আপনার উপর নয়। আপনার কাজ শরীয়তের দাওয়াত তাকে পৌঁছে দেওয়া। মানা না মানা একান্তই তার ব্যাপার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by
ছেলেটা আমার ভাই হয় উস্তাদ, আমি ভয় পাচ্ছি যদি তার কিছু হয়ে যায়, সে কালকে তাবিজ এনেছে, পরে আমি ভয়ে অনেক কান্নাকাটি করি, বলি আমার উপরে এসবের খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, অনেক বুঝাই শুনছিলো না। পরে অনেক কান্না করার পর যখন আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল তখন ভয়ে তাবিজটা নিয়ে বাহিরে রেখে এসেছে। কিন্তু আজকে আমি আবার ভাইয়ার প্যান্টের পকেটে তাবিজ এবং লাইটার পেয়েছি..... কি করবো উস্তদ? কিছুই করবো না?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...