আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,867 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ, আমাদের বাড়ির পাশে একটা মাজার আছে,, যার নামে মাজার তিনি একজন বড় আলেম ছিলেন, কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর আমাদের বংশানুক্রমে প্রতি বছর ওরশ পালন করা হয়,, আল্লাহর হেদায়াত লাভের পর আমি ওরশের কোনো খাবার খাই না,  কিন্তু সবাই বলে যেহেতু ওরশের জন্য গরু,ছাগল,মহিষ গুলো আল্লাহর নামে জবাই হয়,,সেই আলেমের নাম নেয়া হয় না তাই খেতে অসুবিধা নেই, আমি কনফিউজড শায়েখ, কারণ মাজারে তো সবাই মানত করে টাকা দেয়, সেই মানতের টাকা দিয়ে কেনা গরু,ছাগল আল্লাহর নামে জবাই হলেও খাওয়া কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো গায়রুল্লাহ (চাই সে পীর ওলি আওলিয়া হোক,বা অন্য কেউ হোক) এর নামে মানতকৃত পশু যদি ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে যবাই করা হয়, তবুও তা হারাম হয়। (আল বাহরুর রায়েক ৮/১৯২ রাদ্দুল মুহতার ৬/৩০৯ কিফায়াতুল মুফতী ১/২১৬)

মাজারে মান্নত করা হারাম।  কেননা, মান্নত পূরণ করা একটি ইবাদত। তাই মান্নত করতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে। মান্নত পূরণ করতে হবে তারই সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তে। সুতরাং কোনো মাযার বা পীরের নামে মান্নত করলে তা শিরক হবে। কেউ এমন মান্নত  করলেও তা পালন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরন্তু উক্ত মান্নতের কারণে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি। ( আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯)

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللَّهَ فَلْيُطِعْهُ ، وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَهُ فَلَا يَعْصِهِ
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার আনুগত্য করার মান্নত করে সে যেন (তা পূরণ করে) তাঁর আনুগত্য করে । আর যে অবাধ্যতার কোনো বিষয়ে মান্নত করে সে যেন তাঁর অবাধ্যতা না করে। (সহীহ বুখারী ৬৬৯৬)
,
,
আর যদি আল্লাহর নামে মান্নত করা হয়, আর সওয়াব কোন বুযুর্গ বা কোন ব্যক্তিকে পৌঁছানোর উদ্দেশ্য হয়, সেই সাথে আল্লাহর নামে জবাই করা হয়, তাহলে উক্ত মান্নত সহীহ আছে। মাজার বা ওরশে আগত গরীবদের খাওয়া তা জায়েজ আছে। ধনীদের জন্য তা খাওয়া জায়েজ নয়।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা তওবার ৬০ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾

নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আল্লাহর নামেই মান্নত করা হয়,আল্লাহর নামেই জবাই করা হয়,আর আপনি যদি গরীব হোন,তাহলে উক্ত খাবার খাওয়া জায়েয আছে।
ধনী গরিবের সংজ্ঞা জানুনঃ 
,
আর যদি আল্লাহর নামে মান্নত না করা হয়,তাহলে আল্লাহর নামে জবাই  করা হলেও সেই পশু খাওয়া জায়েয নেই।
,
যদি আল্লাহর নামেই মান্নত করা হয়,আল্লাহর নামেই জবাই করা হয়,আর আপনি যদি ধনী হোন,তাহলে আপনার জন্য উক্ত খাবার খাওয়া জায়েয নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...