বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
প্রথমে একটা মূলনীতি জেনে নেই......
মোবাইল ব্যাংকিং-এর বহুল ব্যবহৃত সুবিধা এটি। নিজ একাউন্ট থেকে অথবা এজেন্টের কাছে প্রেরিত টাকা উত্তোলনই মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে সবচাইতে বেশি হয়ে থাকে। আর দুঃখজনক সত্য হল এ সেবাটির জন্যেই মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি অনেক বেশি মাশুল নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তাদের চার্জ হচ্ছে ১.৮৫% তথা প্রতি ১০০ টাকায় এক টাকা পঁচাশি পয়সা। আর হাজারে ১৮.৫০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর, মোবাইল অপারেটরকে এ টাকা থেকে নির্ধারিত কমিশন প্রদানের পর অবশিষ্টাংশ কোম্পানি তথা ব্যাংক পেয়ে থাকে।
ফিকহে ইসলামীর দৃষ্টিতে এটি ‘আলইজারাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে টাকা জমা/উত্তোলনকারী হচ্ছে শ্রম/সেবা গ্রহীতা বা ‘মুসতাজির’। আর এজেন্ট হচ্ছে শ্রম/সেবাদাতা যাকে বলা হয়
‘আজীর’ (আলোচিত ক্ষেত্রে মূল ‘আজীরে’র প্রতিনিধি)। এক সময়ে ডাক বিভাগের মানি অর্ডারকেও তখনকার উলামায়ে কেরাম এভাবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। ‘আলইজারা’ এর মৌলিক শর্তগুলো পাওয়া যাওয়ায় বিষয়টিকে জায়েয বলা যায় তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন। যথা :
১. ক্যাশ আউটের বর্তমান চার্জ সার্বিক বিবেচনায় পরিমাণে বেশি। যেহেতু কোম্পানিকে কোনো পর্যায়েই নিজ থেকে কোনো টাকা দিতে হয় না; বরং বিভিন্ন পর্যায়ে ডিস্ট্রিবিউটর, এজেন্ট ও গ্রাহকের অনেক অনেক টাকা তাদের কাছে জমা থাকে তাই এ সার্ভিসটির চার্জ আরো কম হওয়া উচিত। জনবহুল বাংলাদেশে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় সামান্য চার্জ নিলেও তা একত্র হয়ে মোটা অংকের টাকায় পরিণত হবে। সরকারী নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকেরও এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
২. বর্তমান নিয়মে টাকা যত বাড়বে চার্জও একই হারে বাড়বে। এটি সংশোধন করে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ একটি সীমা নির্ধারণ করা দরকার। কারণ টাকার অংক বাড়লেও সার্ভিস তো সমানই হচ্ছে। বর্তমান নিয়মে কোনো প্রবাসী যদি আপনজনের মোবাইল একাউন্টে এক লক্ষ টাকা প্রেরণ করে তবে সে টাকা ক্যাশ আউট (উত্তোলন) করতে গিয়ে তাকে গুণতে হবে ১৮৫০/- টাকা। যা অবশ্যই জুলুম।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ব্যাংককে সার্ভিস চার্জ দিয়ে ব্যাংক থেকে সুবিধা গ্রহণ করা জায়েয। যদি ব্যাংক সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করে সেটা হারাম কাজে ব্যয় করে, তাহলে ব্যাংকেরই গোনাহ হবে। সার্ভিস চার্জ প্রদানকারীর কোনো গোনাহ হবে না।
সুতরাং ব্যাংক থেকে প্রিপেইড কার্ড নিতে পারবেন, যদি সুদ দিতে না হয়।