আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

‌১. আমার কানে সমস্যা থাকায় ডাক্তার আমাকে কানে পানি দিতে নিষেধ করেছেন।এখন ওযুর সময় যদি আমি কানের ভিতরের গহ্বরে পানি না দিয়ে বাকি অংশে পানি দেই তবে কি ওযু হবে?

২.ডাক্তার এক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়নি। তবে আমার ধারণা এই নিয়মটা সারাজীবন অনুসরণ করা লাগতে পারে। এক্ষেত্রে আমি যদি কানের গহ্বরে পানি না দিয়ে ওযু করি তবে কি ওযু হবে?

৩.নামাজে অনিচ্ছাকৃতভাবে হাসি আসলো। কিন্তু আমি শব্দ করে না হেসে মুখ টিপে রাখলাম। কিন্তু মুখ দিয়ে এর কারণে এক ধরনের শব্দ বের হলো।এতে নামাজ কি ভেঙ্গে যাবে?

৪. ফোনে স্পিকার অন করে কারো সাথে কথা বললাম।এখন অন্য কেউ যদি তার কথা শুনে ফেলে তবে ব্যাক্তিটির কি হক নষ্ট হবে?

৫.ইসলামে মধ্যবিত্ত বলে কোনো ধারণা আছে?

৬.নিজেকে মধ্যবিত্ত দাবি করা কি জায়েজ?

৭.গরীব, মধ্যবিত্ত ব্যাক্তি যদি ছিরা কাপড় পরে তবে কি তার গুণাহ হবে?

৮.আমি একটি প্যান্ট পরি।এটি পুরাতন হয়ে যাওয়ায় কিছু ছিদ্র হয়।যা সতরের অংশে হয়। এবং এগুলো তাসবিহ গণার দানার চেয়েও ছোট।যদি প্যান্টটি পরি তবে দুর থেকে সতর দেখা যায়না।এমনকি ছিদ্রও বুঝা যায় না।এই প্যান্ট পরা কি জায়েয ?

৯.প্যান্টের তলা যদি ছিরা হয়। কিন্তু হাটার সময় সতর উম্মুক্ত হয় না। এবং বসার সময় আসন করূ বসলে সতর দেখা যায়না।এই প্যান্ট পরা কি জায়েয?

১০.আমার পাশের বাসার ভাড়াটিয়া চুলা জ্বালিয়ে ভাত বসিয়েছিল। এখন আমি তার অনুমতি ছাড়া কোন খাবার গরম করার উদ্দেশ্যে তার জ্বালানো চুলার নিচে রাখি তবে কি গুণাহ হবে ও হক নষ্ট হবে?
(এই চুলা তাদের নয় বরং আমাদের দুই ভাড়াটিয়ার জন্য উম্মুক্ত বাড়িওয়ালার পক্ষ থেকে)

১১. খাবার খেতে গিয়ে অনিচ্ছায় কিছু খাবার পরে গেলে তা উঠিয়ে খাওয়া কি বাধ্যতামূলক?

১২. ভাত খাওয়া শেষে ৩-৪ টুকরা ভাতের দানা বাকি থাকলে ও প্লেটে তরকারি ঝোল থাকলে তা খাওয়া কি বাধ্যতামূলক?

1 Answer

0 votes
by (665,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(১-২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  অযুর ভিতর কানের লতির বাহ্যিক অংশের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌছানো ফরজ। 

মুখমন্ডলের পরিসীমা হলো  কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
একবার ধোয়া ফরয, তিন বার ধোয়া সুন্নাত।
(ইমদাদুল আহকাম  ১/৩৬৬) 
۔
পবিত্র কুরআনে সুরা মায়েদাতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
অর্থ : “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখ মন্ডল ও দুই হাত কনুই সহ ধৌত করবে, এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করবে, আর দুই পা গোড়ালীসহ ধৌত করবে।” [সূরা মায়িদাহঃ আয়াত-৬]

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَزِيدَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ".

হুমরান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাযি.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ধুয়ে এবং দু’হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর মাথা মাসেহ করলেন। অতঃপর দুই পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। পরে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম উযূ করবে, অতঃপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩; মুসলিম ২/৩, হাঃ ২২৬, আহমাদ ৪৯৩, ৫১৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৬১)
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ ـ وَهُوَ جَدُّ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى ـ أَتَسْتَطِيعُ أَنْ تُرِيَنِي، كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَوَضَّأُ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ نَعَمْ. فَدَعَا بِمَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَهُ مَرَّتَيْنِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ، ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ، فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ، بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ، حَتَّى ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمَّ رَدَّهُمَا إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) .... ইয়াহইয়া আল-মাযিনী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যাক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-কে (তিনি আমর ইবনু ইয়াহিয়ার দাদা) জিজ্ঞাসা করলঃ আপনি কি আমাদেরকে দেখাতে পারেন, কিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন? ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) বলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি পানি আনালেন। হাতের উপর সে পানি ঢেলে দু’বার তাঁর হাত ধুইলেন। তারপর কুলি করলেন এবং তিনবার নাকে পানি দিয়ে ঝেড়ে পরিস্কার করলেন। এরপর চেহারা তিনবার ধুইলেন। তারপর দু’ হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুইলেন। তারপর দু' হাত দিয়ে মাথা মাসেহ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত গর্দান পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে নিয়েছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। তারপর দু’পা ধুইলেন।
(বুখারী ১৮৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার অযু হয়ে যাবে।

৩.এতে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

৪. এটি গোপনীয় কথা হলে বা নারী কন্ঠ হলে সেক্ষেত্রে হক নষ্ট হবে।

৫. সরাসরি উক্ত পরিভাষা ইসলামে নেই।

৬.নিজেকে মধ্যবিত্ত দাবি করা জায়েজ,এটি নাজায়েজ নয়।

৭.গরীব, মধ্যবিত্ত ব্যাক্তি যদি ছিড়ে যাওয়া কাপড় পরে, তবে তার গুণাহ হবেনা।

তবে যেহেতু মহান আল্লাহ তায়ালা মসজিদে ভালো পোশাক পরিধান করে মুমিনদেরকে আসতে বলেছেন, তাই মসজিদে যাওয়ার সময় ভালো পোশাক পরিধান করে যাওয়া উত্তম।

৮. ঢিলেঢালা হয়ে থাকলে প্রশ্নের বিবরন মতে জায়েজ আছে।

৯. কোন কিছু দিয়ে ঢেকে রাখার কারণে যদি সতর উন্মুক্ত না হয় বা অন্য কোন পন্থা অবলম্বনের কারণে যদি সতর উন্মুক্ত না হয় তবে উক্ত পোশাক পরিধান করে বাহিরে গেলে সতর খুলে যাওয়ার গুনাহ হবে না।

তবে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে এ ধরনের কাপড় পরিধান করে বাহিরে যাবেননা।

১০. প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে গুণাহ হবেনা ও হক নষ্ট হবেনা।

১১.  খাবার পড়ে গেলে পরিষ্কার থাকলে বা পরস্কার করে খাওয়ার মতো থাকলে তাহা তুলে পরিস্কার করে খাওয়া সুন্নত।

যদি এমন জায়গায় পড়ে যায় যেখানে নোংরা লেগে গেছে বা খাওয়া ক্ষতির কারণ হবে, তবে খাওয়া আবশ্যক নয়, বরং অন্যভাবে (যেমন পশুপাখিকে খাওয়ানো) ব্যবহার করাই উত্তম।

১২. 
তাহা খাওয়া সুন্নাত।

যদি না খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে কোন পশু পাখিকে সে খাবার খাওয়াতে হবে।

কোন পশু পাখিকেও যদি সে খাবার না খাওয়ানো হয়, তাহলে অপচয়ের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
১১ নং এর ক্ষেত্রে কি তা সুন্নতে মুয়াক্বাদা ?
by (665,220 points)
জানামতে সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা।

যদি তাহা উঠিয়ে না খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে কোন পশু পাখিকে সে খাবার খাওয়াতে হবে।

কোন পশু পাখিকেও যদি সে খাবার না খাওয়ানো হয়, তাহলে অপচয়ের গুনাহ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...