আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,ওস্তাদজী। খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সংবেদনশীল বিষয়টি, তাই একটু বড়।

ক).গত ১০ দিন আগে আমার বাবা আমার মাকে মোবাইলে মতবিরোধের এক পর্যায়ে বলেছেন যে,আগেই মনে মনে তোমাকে এক তালাক দিয়েছিলাম,দেশে আসার পর আর দুইটা দিব।এটা বলার সময় আমার ছোট ভাই আমার বাবার সাথে ছিলেন সে শুনেছে আর ফোনে আমার মা শুনেছেন।আগে কখন কিভাবে এক তালাক দিয়েছিলেন তা আমরা বা আমার মা কেউই জানি না।তাই পরবর্তীতে আমার ভাই এটা আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করেন।আব্বা বলেন যে অনেক আগে আমার মামার সাথে কোন ঝামেলা হয়েছিলো এটা তখনকার কথা।আমার মা বাবার এতো বছরের সংসারের মধ্যে আমরা এমন কখনও দেখি বা শুনি নাই।

খ). প্রায় ৮ বছর আগে আমার মা, আমার বাবা-মায়ের একটা ডিভোর্স সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন যা উনি ভিতরে কি আছে না পড়েই ছিড়ে ফেলে দিয়েছিলেন কাউকে না বলে।আমার বাবা বিদেশে যাওয়ার জন্য ফটোকপির দোকান থেকে বের করা হয়েছে,পরে তা আর কাজে লাগে নাই।আমার বাবার মতে তিনি এসব করেন নাই আমার চাচার পরামর্শে ফুফুর ছেলে করেছেন। এই অবস্থায় আমার বাবার সম্মতিতে করলে কি হবে আর সম্মতি ছাড়া করলে কি হবে(মানে তালাক কি হয়েছে?)

আমার প্রশ্ন হল-

১.এখন আমার মা আর বাবার আসলে  কি এক তালাক হয়ে গেছে উল্লেখিত পরিস্থিতিদ্বয়ে?

২.এখন উল্লেখিত ২টি পরিস্থিতিতে আবার সংসার করার জন্য কি করা লাগবে? এই বিষয়টা বিস্তারিত বলার জন্য অনুরোধ করছি।

1 Answer

0 votes
ago by (656,550 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর এমনিতেই বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}
★শরীয়তের বিধান হল "তালাক দিয়ে দিবো","ছেড়ে দিয়ে দিবো", এ কথা গুলি বলার দ্বারা তালাক পতিত হবে না।
কারণ, ভবিষ্যতের দিকে তালাকের সম্বন্ধ করলে তালাক পতিত হয় না।
এগুলো ওয়াদা মূলক কথা মাত্র,এতে তালাক পতিত হয়না।
(রদ্দুল মুহতার ৪/২৭৪; হেদায়াহ ১/২৮০।)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
"আগেই তোমাকে এক তালাক দিয়েছিলাম,
দেশে আসার পর আর দুইটা দিব"

এক্ষেত্রে বোঝা যাচ্ছে যে আপনার বাবা দেশে আসার পর আপনার মাকে আরো দুটি তালাক দিতে চেয়েছিলেন।

এটা ওয়াদা সূচক একটি বাক্য। এর দরুন কোন তালাক পতিত হবে না।

কিন্তু পূর্বে তিনি যে এক তালাক দিয়েছিলেন, যার কথা প্রশ্নে তিনি উল্লেখ করেছেন এটাকে তো মাইনাস করার কোন সুযোগ নেই।
সেই এই তালাক তো তালাক প্রদানের সময়েই পতিত হয়েছে।
সেটি আপনার মা জানুক বা না জানুক।

শরীয়তের বিধান মতে তালাকের জন্য কোনো সাক্ষী বা কাজীর প্রয়োজনীয়তা নেই।
কেহ যদি স্ত্রীকে না জানিয়েও একা একি তালাক প্রদান করে,তবুও তালাক পতিত হবে। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৯/৭৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
عن الحسن وخلاس: في الرجل یطلق امرأتہ وہو غائب عنہا قال: تعتد من یوم یأتیہا الخبر۔ (المصنف لابن أبي شیبۃ ۱۰؍۱۳۳ رقم: ۱۹۲۶۵)
সারমর্মঃ
যে ব্যাক্তি স্ত্রীর অনুপস্থিতি তাকে তালাক প্রদান করে,সেই সম্পর্কে হাসান এবং খাল্লাছ রাঃ বলেন খবর আসার দিন সে ইদ্দত পালন করবে। 

مستفاد: أما رکن الطلاق فہو ہذہ اللفظۃ الصادرۃ عن الزوج۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۴؍۳۷۷ زکریا)
সারমর্মঃ
তালাকের রুকন হলো এই শব্দ স্বামী থেকে বের হওয়া  

তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয়।
মুখ থেকে উচ্চারণ হয়ে গেলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।
(এক্ষেত্রে ভুলে/ঠাট্রা মূলক মুখ দিয়ে উচ্চারন হলেও তালাক হবে।)
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ৪৭৭
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ৯/৪২
আযিযুল ফাতওয়া ১/২৫২)
,   
أما رکن الطلاق فہو ہذہ اللفظۃ الصادرۃ من الزوج۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۴؍۳۷۷ رقم: ۶۴۷۱ زکریا)
সারমর্মঃ
তালাকের রুকন হলো এই শব্দ গুলো স্বামী থেকে বের হওয়া।

(০২)
আপনার বাবা যেহেতু স্পষ্ট বলেছেন যে এটা (ডিভোর্স সার্টিফিকেট) তিনি করেননি, তার আদেশেই কেউ একজন করে দিয়েছে তার স্বপক্ষে তো কোন সাক্ষী বা প্রমাণাদিও নেই, সুতরাং আপনার মা আপনার বাবার কথা কে সত্য ধরেই সংসার চালিয়ে যেতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনার বাবা যদি সত্যিই সেই ডিভোর্স সার্টিফিকেট করে থাকেন,বা অন্য কাহারো মাধ্যমে করিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে তালাক পরবর্তী অবৈধ ভাবে সংসার চালিয়ে গিয়ে থাকলে অবৈধ ভাবে সংসার করার গুনাহ আপনার বাবার হবে, আপনার মায়ের নয়।

তদুপরি ডিভোর্স সার্টিফিকেটটি চোখের সামনে এভাবে স্পষ্ট আকারে দেখে তাহা না পড়ে,যাচাই-বাছাই না করর ছিড়ে ফেলা কোনো ভাবেই ঠিক হয়নি।

এর কপি কাজী সাহেবের থেকে উত্তোলন করুন।

কয় তালাক লেখা আছে সেটি দেখুন।
তিন তালাক লেখা থাকলে, এক্ষেত্রে আর ঘর সংসার না করার পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,ওস্তাদজী ২ নং প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া হয়নি-

২.এখন উল্লেখিত ২টি পরিস্থিতিতে আবার সংসার করার জন্য কি করা লাগবে? এই বিষয়টা বিস্তারিত বলার জন্য অনুরোধ করছি।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 139 views
...