আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,ওস্তাদজী। খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সংবেদনশীল বিষয়টি, তাই একটু বড়।

গত ১০ দিন আগে আমার বাবা আমার মাকে মোবাইলে মতবিরোধের এক পর্যায়ে বলেছেন যে,”আগেই তোমাকে এক তালাক দিয়েছিলাম, দেশে আসার পর আর দুইটা দিব।”আগে কখন কিভাবে এক তালাক দিয়েছিলেন তা আমরা বা আমার মা ও জানেন না। আমার মা বাবার ৩৬ বছরের মধ্যে এমন কখনও দেখি বা শুনি নাই।ফতোয়া জানার জন্য যাওয়া হয়েছিল, ওনারা বললেন এক তালাক হয়ে গেছে। 

আমার প্রশ্ন হল-

১.এখন আমার মা আর বাবার আসলে  কয়টা তালাক হয়েছে।

২.এখন উল্লেখিত পরিস্থিতিতে আবার সংসার করার জন্য কি করা লাগবে? এই বিষয়টা বিস্তারিত বলার জন্য অনুরোধ করছি। 

৩.আমার বাবার দ্বীনের বুঝ কম, এখন তিনি যে তালাক এর বিষয়টি বলেছেন  তা স্বীকার করছেন না।আমার মা নিজে শুনেছেন বিষয়টা।তালাকের ফতোয়া জন্য নাকি পুরুষের কথা মতো ফতোয়া আসে,উল্লেখিত পরিস্থিতিতে এই বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বললে মুনাসিব হতো।

৩. প্রায় ১০/১২ বছর আগে আমার মা, আমার বাবা আর মায়ের একটা ডিভোর্স সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন যা উনি ভিতরে কি আছে না পড়েই ছিড়ে ফেলে দিয়েছিলেন কাউকে না বলে।আমার বাবা বিদেশে যাওয়ার জন্য হয়ত দোকান থেকে বের করা হয়েছে,পরে তা আর কাজে লাগে নাই।আমার বাবার মতে তিনি এসব করেন নাই আর জানেন না, আমার চাচা বা ফুফুর ছেলে করেছেন হয়ত। এই অবস্থায় আমার বাবার সম্মতিতে করলে কি হবে আর সম্মতি ছাড়া করলে কি হবে(মানে তালাক কি হয়েছে?)  আর উভয় অবস্থায় সমাধান কি হবে? 

( আমার মা হজ করে এসেছেন এবং এখন দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করেন, তিনি আসলে বিষয়টির জন্য  খুব অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।বিষয়গুলো একটু  বিস্তারিত বুঝিয়ে বললে খুবই উপকৃত হবো)

জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
ago by (656,550 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَأْخُذُوا مِمَّا آَتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَنْ يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (229)

"এ তালাক দু'বার, অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিসম্মতভাবে রাখবে অথবা সদয়ভাবে বিদায় দেবে। আর স্ত্রীকে দেয়া কোন কিছু ফেরৎ নেয়া তোমাদের পক্ষে উচিত নয়। তবে যদি তাদের উভয়ের আশংকা হয় যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তবে (সে অবস্থায়) স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে (স্বামী থেকে) নিষ্কৃতি পেতে চাইলে তাতে (স্বামী-স্ত্রীর) কারো কোনো পাপ নেই। এসব আল্লাহর সীমারেখা। কাজেই তা লংঘন কর না। যারা আল্লাহর (নির্দিষ্ট) সীমারেখা লংঘন করে তারাই অত্যাচারী।" (সুরা বাকারা ২২৯)


فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠] 

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]

https://ifatwa.info/55211/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দ্বারা তালাক হবে কি না? এনিয়ে হানাফি দারুল ইফতা সমূহে মতপার্থক্য হয়েছে।কোনো কোনো দারুল ইফতা থেকে তালাক হওয়ার ফাতাওয়া দেয়া হয়েছে।আবার কোথাও তালাক না হওয়ার ফাতাওয়া দেয়া হয়েছে।

লোকদের সহজতার জন্য দিয়ানতকে মানদন্ড করে আমরাও তালাক না হওয়ার ফাতাওয়াতে একমত হয়েছি-
كَمَا  لَوْ أَقَرَّ بِالطَّلَاقِ هَازِلًا  أَوْ كَاذِبًا فَقَالَ فِي الْبَحْرِ، وَإِنَّ مُرَادَهُ لِعَدَمِ الْوُقُوعِ فِي الْمُشَبَّهِ بِهِ عَدَمُهُ دِيَانَةً، ثُمَّ نَقَلَ عَنْ الْبَزَّازِيَّةِ وَالْقُنْيَةِ لَوْ أَرَادَ بِهِ الْخَبَرَ عَنْ الْمَاضِي كَذِبًا لَا يَقَعُ دِيَانَةً، وَإِنْ أَشْهَدَ قَبْلَ ذَلِكَ لَا يَقَعُ قَضَاءً أَيْضًا. اهـ. 
অনুরুপ ভাবে যদি স্বামী মিথ্যা বা তামাশা মূলক তালাকের স্বীকারোক্তি দেয়,তাহলে বাহরুর রায়েক গ্রন্থে বলা হয়েছে যে এটি দিয়ানাতান তথা আল্লাহর নিকট তালাক বলে গন্য হবে না।
,
অতঃপর বাযযাযিয়া ও ক্বুনয়া কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যদি এই মিথ্যা স্বীকারোক্তি দ্বারা অতীতের তালাকের খবর স্বামী দেয়,তাহলে দিয়ানাতান (আল্লাহর নিকট) তালাক হবে না। 
(কাযা'আন তালাক হবে।)

কিন্তু যদি তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তির পূর্বে স্বামী এ ব্যাপারে সাক্ষী রাখে, তাহলে  কাযা'আনও (তথা কাযী সাহেবের নিকট তালাক নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার মূহুর্তেও) তালাক হবে না।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৩৬)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(১-৩)
"আগেই তোমাকে এক তালাক দিয়েছিলাম"

এ কথা যে আপনার বাবা যে আপনার মাকে বলেছিলেন, তুই তো আর তিনি স্বীকার করছেন না, পাশাপাশি এ বিষয়ের উপর আপনার মায়ের কোন সাক্ষী ও নেই এবং ইতিপূর্বে তিনি তালাক দিয়েছিলেন এর উপরেও কোন প্রমাণ নেই।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবা-মা সংসার চালিয়ে যেতে পারবেন, সমস্যা হবেনা ইনশাআল্লাহ।

(০৪)
আপনার বাবা যেহেতু স্পষ্ট বলেছেন যে এটা তিনি করেননি, তার আদেশেই কেউ একজন করে দিয়েছে তার স্বপক্ষে তো কোন সাক্ষী বা প্রমাণাদিও নেই, সুতরাং আপনার মা আপনার বাবার কথা কে সত্য ধরেই সংসার চালিয়ে যেতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনার বাবা যদি সত্যিই তালাক দিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তালাক পরবর্তী অবৈধ ভাবে সংসার চালিয়ে গিয়ে থাকলে অবৈধ ভাবে সংসার করার গুনাহ আপনার বাবার হবে, আপনার মায়ের নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (2 points)
reshown ago by
জাযাকাল্লাহু খইরন

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...