আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (30 points)
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,

আস সালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্নটা একটু লম্বা হতে পারে, অনুগ্রহ করে একটু বিস্তারিত উত্তর জানাবেন উস্তায......আমি জিজ্ঞেস করার কোনো মাধ্যম পাচ্ছিনা বলে বাধ্য হয়ে এখানে লম্বা প্রশ্ন দেয়া ।

আমার প্রতিবেশি বিভিন্ন হুমকি দিতো যে আমাকে বিয়ে করতে দিবেনা বা এ-ই সেই ইত্যাদি । তো আম্মু ভয়ে এক মহিলা কবিরাজ থেকে বান কাটার সিদ্ধান্ত নেন । আম্মু আশেপাশের মানুষ থেকে শুনেছেন ❝কবিরাজটা কুরআন দিয়ে চিকিৎসা করে, চিকিৎসার সময় তাকে কুরআন পড়তে দেখেছে❞ - তাই আমি চিকিৎসা করতে সম্মত হই ।

কবিরাজ কিছু পানি পড়া, তেল, ১টা ফুল, আর ১টা তাবিজ কোমরে বাঁধার জন্য, আর ১টা তাবিজ উঠোনে গাছে রাখার জন্য দেয় । আমার কিছুটা সন্দেহ লাগে এসব কুফরি চিকিৎসা কিনা - তারপরও কুরআনি চিকিৎসা বলে অন্ধবিশ্বাস করে ফলো করি ।
এরমধ্যে আমি কবিরাজের ভন্ডামি সংক্রান্ত কিছু লেখা পাই রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপে, আমি তা না পড়ে ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যাই নিজের চিকিৎসার প্রতি বিশ্বাস রেখে আর পড়লে তাবিজ খুললে হিতে বিপরীত হবে মনে করে । ভয় পেয়েছিলাম মূলত উল্টো হয়ে যাবে কিনা বলে ।  (অথচ ব্লগটা পড়লে কবিরাজ যে প্রতারণা করেছে আমার সাথে তা বুঝতে পারতাম)

তারপর প্রতিবেশির আচরণ আরো বেশি ক্ষিপ্র হয়ে উঠলে ওই কবিরাজ আমাকে শত্রুর ভয়ে নাজুক অবস্থায় কিছু চিনি পড়া ও পানি দেয় যেকোনো পাত্র পক্ষকে খাওয়াতে, বলেছে এটা জাদু হবেনা, প্রতিবেশির কুমন্ত্রণা কাজ না করার জন্য, সম্বন্ধ সেট হওয়ার জন্য এসব দেয়া হয়েছে । এরপর (আমি পড়াশোনা করে বুঝতে পেরেছি এসব কবিরাজের ভন্ডামি, এবং এসব শিরক, তাবিজ খুলে দেখেছিলাম সব শয়তানের সিম্বল আঁকা । যদিও আমার মন বারবার বলছিলো এসব কুফরি চিকিৎসা হয়তো, চিকিৎসার মাঝপথ থেকে ফিরে আসতেও ভয় পাচ্ছিলাম হিতে বিপরীত হবে কিনা) ।

তো এর কয়েকমাস পর আমার বিয়ে হয়, আমার প্রশ্ন হলো,
১) ওই চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় আমার বিয়ে হয়, এক্ষেত্রে বিয়ে কি সহিহ হয়েছে?
২) যদি বিয়ে নবায়ন করতে হয় তাহলে একটু কি করতে হবে বিস্তারিত জানালে উপকার হয় উস্তায ।
৩) আর তাওবাহ'র বিষয়ে, রব কি আমার এই শিরকি গুনাহ ক্ষমা করবেন? (আমার বারবার আফসোস হচ্ছে কেন সেদিন কবিরাজের ভন্ডামি বিষয়ক লিখাটি পড়লাম না, পড়লে আজ এতকিছু হতোনা) ।

শত্রুর কুমন্ত্রণা কাজে না দিতে এবং সম্বন্ধ সেট হতে কবিরাজ যে চিনি পড়া যেকোনো পাত্রপক্ষ কে খাওয়াতে দিয়েছিলো, তাতে আমার মনে হয়েছিলো এসব জাদু হয়তো, কিন্তু কবিরাজ বলেছিলো এসব জাদু না, কিভাবে যেন কবিরাজের কথায় প্রভাবিত হয়ে গিয়েছিলাম জানিনা । কবিরাজটা মহিলা ছিলো । আমার এখন বারবার ওয়াসওয়াসা আসছে যে, আমি ইচ্ছে করেই বিয়ে না হওয়ার ভয়ে এসব চিকিৎসা করেছি, অথচ এই কুফরি চিকিৎসার কোনো বিষয়েই আমি সিউর ছিলাম না । ভীষণ চিন্তায় আছি....

1 Answer

0 votes
by (674,310 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে মেনেই আপনার বিবাহ হয়েছে,সুতরাং আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।

বিবাহ নবায়ন করতে হবেনা।

(০৩)
আপনি খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করবেন, আর ওয়াদাবদ্ধ হবেন যে ভবিষ্যতে আর এভাবে এহেন কাজ করে নিবেননা,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন। ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...