আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in পবিত্রতা (Purity) by (23 points)

আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্ 

 

পবিত্রতা সংক্রান্ত 

  প্রতিমাসের একটা নির্দিষ্ট সময় অনবরত অল্প অল্প সাদা স্রাব থাকে। পবিত্র হয়ে ওযু করে নামাজে দাড়ালেও সাদা স্রাব বের হতে থাকে। 

১। এই অবস্থায় কি নামাজ হবে?  

২। এই অবস্থায় সফরে থাকলে একবার ওযু করে সেই ওযু দিয়ে কি পরের ওয়াক্তেও নামাজ পড়া যাবে? 

৩। ওযু অবস্থায় /নামাজের মধ্যে হাঁচি-কাশি দিলেও স্রাব বের হয়। তখন কি ওযু ভেঙ্গে যাবে?

৪। সাদা স্রাব বের হওয়া অবস্থায় কোরআনের হরফ হাত দিয়ে ধরতে পারবো? নাকি শুধু কোরআন পড়তে পারবো?

মাসের কিছু দিন এই সাদা স্রাব ২৪ ঘন্টাই থাকে।

 

জাযাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়্যা ওয়াল আখিরাহ

1 Answer

0 votes
by (664,230 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)


حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
উপরোক্ত বিবরণ মতে আপনি মা'যুর কিনা,সেটা আগে নির্ণয় করতে হবে,যদি আপনি মা'যুর না হোন,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজের জন্য আপনি অপেক্ষা করবেন। যখন ব্লিডিং বন্ধ হবে,তখন শরীর পাক করে পবিত্র কাপড়ে নামাজ আদায় করবেন।
নাপাক কাপড়/শরীরে আপনার নামাজ হবেনা। হ্যাঁ এক দিরহাম সমপরিমাণ চেয়ে কম নাপাকি লাগলে সেটা থাকা অবস্থাতেও নামাজ হয়ে যাবে।

প্যাড, প্যান্টি বা পায়জামায় স্রাব লেগে থাকলে তাহা প্রতি নামাজের আগে পাক করতেই হবে বা পরিবর্তন করতেই হবে।

এই জন্য নামাজের জন্য আলাদা কাপড় রাখতে হবে। যেটাকে শুধুমাত্র নামাজের আগেই পড়বে,নামাজের পর তাহা রেখে দিবেন।

নামাজের মধ্যে স্রাব বের হলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অযু করে পবিত্র হয়ে এসে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে।

স্রাব বের হওয়া মাত্র নামাজ ছেড়ে দিয়ে পাক হয়ে অযু করে এসে বাকি নামায আদায় করতে হবে।এক্ষেত্রে শুরু থেকে নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক নয়। যেই রুকনে নামাজ ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন,অযু করে আসার পর সেই রুকন হতেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আবারো অযু ভেঙ্গে গেলে আবারো অযু করতে যেতে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আর যদি আপনি মা'যুর হোন,অর্থাৎ নামাজের শুরু ওয়াক্ত থেকে নিয়ে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত আপনার স্রাব বের হতেই থাকে,এই ওযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,এই ভাবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কেননা আপনি মা'যুর। 

পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে এই ওযর একবার পাওয়া গেলেও আপনি মা'যুর হিসেবেই বহাল থাকবেন।

আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন।

এমতাবস্থায় প্যাড, প্যান্টি বা পায়জামায় স্রাব লেগে থাকলেও তাহা প্রতি নামাজের আগে পাক করতে হবেনা বা পরিবর্তন করা আবশ্যক নয়।

(উল্লেখ্য,  কোনো ওয়াক্তে আপনার আর উক্ত সমস্যা না দেখা গেলে সেক্ষেত্রে আপনি আর মা'যুর হিসেবে থাকবেননা।
আপনি সুস্থ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। তখন আর মা'যুরের বিধান আপনার উপর কার্যকর হবেনা।)

(০২)
না,যাবেনা।

(০৩)

তখন ওযু ভেঙ্গে যাবে।

(০৪)

আপনি মা'যুর হলে সেক্ষেত্রে সাদা স্রাব বের হওয়া অবস্থায় কোরআনের হরফ হাত দিয়ে ধরতে পারবেন।

আর যদি আপনি মা'যুর না হন,সেক্ষেত্রে কোরআনের হরফ হাত দিয়ে ধরতে পারবেননা। শুধু কোরআন মুখস্থ পড়তে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (23 points)
নামাজের মধ্যে স্রাব বের হলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অযু করে পবিত্র হয়ে এসে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে।

স্রাব বের হওয়া মাত্র নামাজ ছেড়ে দিয়ে পাক হয়ে অযু করে এসে বাকি নামায আদায় করতে হবে।এক্ষেত্রে শুরু থেকে নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক নয়। যেই রুকনে নামাজ ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন,অযু করে আসার পর সেই রুকন হতেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আবারো অযু ভেঙ্গে গেলে আবারো অযু করতে যেতে হবে।


.......এখানে রুকনের ব্যপারটা বুঝি নি???
by (664,230 points)
অর্থাৎ যদি সেজদা অবস্থায় অজু ভেঙ্গে যায় সে ক্ষেত্রে অজু করে এসে ওই সেজদা হতেই বাকি নামাজ আদায় করবেন।

বৈঠক অবস্থায় যদি অজু ভেঙ্গে যায়,সেক্ষেত্রে অজু করে এসে বৈঠক অবস্থা হতে বাকি নামাজ আদায় করবেন।

অর্থাৎ যে কাজ করতে আপনার রোজা ভেঙ্গে গিয়েছে, অজু করে এসে সেই কাজ হতেই বাকি নামাজ আদায় করবেন, একদম শুরুর থেকে নামাজ শুরু করতে হবে না
by (23 points)
যারা মা'যুর শুধু তারাই নামাজের যে রুকনে স্রাব বের হবে নামাজ ভেঙ্গে ওযু করে এসে সে রুকন থেকেই নামাজ পড়তে?
সুস্থ মানুষদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়, তাই তো??

by (664,230 points)
যারা মা'যুর,তাদের তো অনববরত স্রাব বের হয়,সুতরাং তাদের নামাজের মধ্যে স্রাব বের হবে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা,অযু ভেঙে যাবেনা।
by (664,230 points)
যারা মা'যুর নন,তারাই নামাজের যে রুকনে স্রাব বের হবে নামাজ ভেঙ্গে ওযু করে এসে সে রুকন থেকেই নামাজ পড়বে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...