আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (22 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ উস্তায।
একজন ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব দেন, তাকে দীনদ্বার মনে হয়েছে।কিন্তু তিনি কিছু বিষয় বিশ্বাস করেন-নবী আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি-প্রথম নবীর নূর সৃষ্টি হয়েছে,আদম(আ) এর তাওবা নবীর নামের উসিলায় কবুল হয়েছে(আরশের কাছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ দেখে পড়ে দুয়া করেছিলেন তাই),জান্নাতের সব দেওয়ালে নবীর নাম লিখা।
তিনি মিলাদুন্নবী পালন করেন-(রোযা রাখেন,মিলাদ করেন,দাড়িয়ে সালাম জানান নবীকে এই মনে ভেবে যে তিনি রওযার সামনে আছেন,মিলাদ শেষে খাওয়ান),শবে বরাত পালন করেন তিনি মনে করেন এসব শরিয়ত বিরুধী কোনো কাজ না তাই জায়েজ।মুস্তাহাব।
তিনি আযান এর আগে দুরুদ পড়েন,আযানে নবীর নাম আসলে বুড়ো আঙুলে চুমু দিয়ে চোখে লাগিয়ে বলেন আপনি আমার জানের চেয়েও প্রিয় ইয়া রাসুলুল্লাহ,সোমবার ও বৃহস্পতিবার তালিম করেন একসাথে যিকির করেন(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ,আল্লাহু),তালিম শেষে যে যার মতো জিকির করেন।
ওয়াহহাবি,দেওবন্দীদের বাতিল ফিরকা বলেন।
তিনি একজন পীরের কাছে বাইয়্যাত নেন।

এটি  কি আক্বীদা বিরোধী কি না?
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত বিরোধী কি না?
উনাকে বিয়ে করা কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (659,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا خَطَبَ إِلَيْكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ، إِلاَّ تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الأَرْضِ، وَفَسَادٌ عَرِيضٌ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কাছে এমন লোক বিবাহের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্র তোমরা পছন্দ কর, তখন বিবাহ দিয়ে দাও [মাল-সম্পদের দিকে লক্ষ্য করো না]। যদি তা না কর তবে দেশে ফিতনা ও ব্যাপক ফাসাদ দেখা দেবে। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১০৮৪, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৯৬৭]

https://ifatwa.info/14917/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ঈদ অর্থ আনন্দ।মিলাদ অর্থ জন্ম।ঈদে মীলাদুন্নবী অর্থ নবী সাঃ এর জন্ম উপলক্ষ্যে ঈদ উৎসব।
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জন্মদিনকে উপলক্ষ্য করে কোনো প্রকার উৎসব বা অনুষ্টানের আয়োজন করা  না রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জমানায় প্রচলিত ছিলো,না সাহাবা ও তাবেঈন বা তাদের পরবর্তী যুগে প্রচলিত।বরং ইসলামি স্বর্ণযুগের অনেক পর বাদশা মুজাফফর উদ্দীন খৃষ্টানদের বড়দিনের আদলে তাদের অনুসরণ করে মুসলমানদের জন্য ঈদে মীলাদুন্নবীর প্রচলন করার অপচেষ্টা করেন।কিন্তু ইরাকের তৎকালিন জনগণ বাদশার ভন্ডামিকে খুবই শক্তভাষায় প্রত্যাখ্যান করেন।

যা ইসলামের প্রাথমিক যুগে নেই,সেগুলোর প্রচলন বিদআত।

রাসুল সাঃ বলেন-

وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.

আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)

আরেক হাদীসে আছে-
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أمِّ المؤمنين أم عبدالله عائشةَ رضي الله عنها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ((من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رَدٌّ))؛ [رواه البخاري ومسلم]، 

‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭

★ঈদ ই মিলাদুন্নবি এটি নব আবিষ্কৃত,এটি ইসলামের স্বর্ণযুগে ছিলোনা।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীগণ তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন, বেশি সম্মান করতেন, তাঁর অধিকার সম্পর্কে পরবর্তীদের চেয়ে বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। সুতরাং তাঁদের নিকট যা কিছু দ্বীনের অংশ ছিল না; সেটা তাঁদের পরেও দ্বীন হিসেবে সাব্যস্ত হবে না।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) এ ভিত্তি দিয়ে ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের বিপক্ষে দলিল পেশ করেছেন যারা মসজিদে গোল হয়ে বসে সম্মিলিতভাবে পাথর টুকরা দিয়ে গুণে গুণে যিকির করা শুরু করেছিল: ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে রয়েছে আমার প্রাণ; তোমরা কি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্মের চেয়ে উত্তম কোন প্রজন্মের মধ্যে আছ? নাকি তোমরা পথভ্রষ্টতার দরজা উন্মোচন করছ!! তারা বলল: আবু আব্দুর রহমান, আমাদের উদ্দেশ্য নেকির কাজ করা। তিনি বললেন: কত লোক এমন আছে যে ভাল কাজ করতে চায় কিন্তু সঠিক দিশা পায় না।[সুনানে দারেমী ২১০]

আবু দাউদ (১১৩৪) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় এলেন সে সময় মদিনাবাসীরা বিশেষ দুটি দিনে খেলাধুলা করত। (তা দেখে) তিনি বললেন: “এ দুটি দিনের বিশেষত্ব কি?” তারা বলল: আমরা জাহেলী যুগেও এ দুটি দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি বললেন: “আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে এ দুই দিনের পরিবর্তে আরও ভাল দুটি দিন দিয়েছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমাদের বিষয়ের মধ্যে নতুন কিছু চালু করে যা এতে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত।”[সহিহ বুখারী (২৬৯৭) ও সহিহ মুসলিম (১৭১৮)]

কিয়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তিটি যেহেতু মুসলিম, তাই তার সাথে বিবাহ বসা জায়েজ আছে।

তবে সে যেহেতু বিদ'আতি,তাই তার সাথে বিবাহ বসলে সেক্ষেত্র বিদআতি কর্মকান্ডে আপনারও জুড়ে জড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে,তার কথা মোতাবেক বিদ'আতি কাজ না করলে সংসারে অনেক অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এ ধরনের পাত্রের বিবাহে রাজি না হওয়ারই পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...