আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
752 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (47 points)
edited by
আমার এটার সঠিক ফতোয়া দরকার। যদি এমন হয় যে কারো চেহারা কল্পনা ব্যাতীত, তার সাথে আলাপ-চারিতা, বিভিন্ন গল্প- গুজব, সব সময় কাউকে পাশে কল্পনা করা হয়,তাহলে এতে কি মনের জিনা হচ্ছে?

আমি অবিবাহিত।  বিয়ের কোনো ব্যবস্থা করছে না পরিবার থেকে। বয়স ২৩+. কিন্তু পরিবারের কাছে এখনো ছোট। আমার এখন সব কিছু তে ছোট খাটো ব্যাপারে রাগ উঠে প্রচন্ড। কারণ আমার পরিবার কখনো আমার সুখের কথা চিন্তা করে নাই। আরেক দিকে আমি ই কষ্ট পাই নিজের নাফস কে কন্ট্রোল করতে না পারার কারণে অনুশোচনায় ভুগি। আর আমার পরিবার প্র‍্যাক্টিসিং না। তাই তারা বড় বড় হারাম কাজ করতেও দ্বিধা বোধ করে না।
প্লিজ আমার ব্যাপারটা যেন কেউ না জানে।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


পূর্বর একটি ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,     
কোনো খারাপ কাজ না করলে বরং অনিচ্ছায় অন্তরে খারাপ,কুমন্ত্রনা আসলে গুনাহ হবেনা।
 তবে সাথে সাথে তা থেকে অন্তর ফিরিয়ে আনতে হবে।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﺭَﺑَّﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟْﻴَﻨْﺘَﻪِ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺴﻠﻢ : ( ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻠﻪ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,শয়তান তোমাদের কারো নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা কে বানিয়েছে?ওটা কে বানিয়েছে?শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে, খোদা-কে বানিয়েছে? যখন এমন অবস্থায় কেউ পতিত হবে,সে যেন আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।এবং সাথে সাথে সে যেন উক্ত বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকে।এক বর্ণনায় এসেছে সে যেন আ'মানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি পড়ে নেয়।(সহীহ বোখারী-৩১০২,সহীহ মুসলিম-১৩৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وفیہ أیضاً(۱۷۶/۱):عن أبی ھریرۃ رضی الله عنہ قال: قال ﷺ "إن الله تجاوز عن أمتی ماحدثت بہ أنفسھا مالم تعمل أو تتکلم" أخرجہ البخاری 

যার সারমর্ম হলো নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উপেক্ষা করেন, যতক্ষন পর্যন্ত উক্ত কাজ না করবে বা মুখে কোনো কথা না বলবে,ততক্ষন পর্যন্ত কোনো বিধান জারী হয়না।

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي عَمَّا لَمْ تَتَكَلَّمْ بِهِ، أَوْ تَعْمَلْ بِهِ، وَبِمَا حَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا 

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মাতের মনে যা উদয় হয় তা যতক্ষণ না সে মুখে বলে অথবা কার্যে পরিণত করে ততক্ষণ তা উপেক্ষা করেন।
(আবু দাউদ ২২০৯)

أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ عَنْ مِسْعَرٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ 

উবায়দুল্লাহ ইবন সাঈদ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মতের মনে যা উদয় হয় বা খটকা লাগে, আল্লাহ্ তাআলা তা ক্ষমা করে দেবেন, যতক্ষণ না সে তা করে অথবা বলে।
(নাসায়ী শরিফ ৩৪৩৮)


★কুমন্ত্রণার নেপথ্যে থাকে শয়তান। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে– ঈমানদারদেরকে কষ্ট দেয়া

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা,কুরআন তিলাওয়াত করা  , لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

আল্লাহ তায়ালা  বলেন,

وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তুমি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম-সিজদাহ ৩৬)

এ থেকে বাঁচার আমল জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি খারাপ কিছু মাথায় চিন্তা ভাবনার উদ্রেক না হয়,স্রেফ প্রশ্নে যাহা উল্লেখ আছে সেটাই হয়,ততটুকুর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে,শরীয়তের খেলাফ কিছু ভাবনা না আসে,তাহলে তাতে গুনাহ হবেনা।
তবে এটি কুচিন্তার দিকে নিয়ে যাবে,তাই এ থেকে বেঁচে থাকা প্রয়োজন। 
,
আপনার যেহেতু বিবাহ প্রয়োজন, তাই বড়দের মাধ্যমে আপনার অভিভাবকদের বিষয়টি অবগত করুন।
এটার জন্য আপনার জরুরি ভাবে বিবাহ করে নেওয়া উচিত।
বাভা মাকে বুঝানোর পাশাপাশি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে থাকুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...